হাতিয়ার ফুটেজ, জালে ‘চেন কিলার’

সিরিয়াল কিলারকে ধরে কালনায় এখন হিরো এই সিভিক পুলিশ

কালনা ১ ব্লকের কাঁকুরিয়া পঞ্চায়েতের কাদিপুর গ্রামে কর্তব্যরত ওই সিভিক পুলিশ অনির্বাণ ঘোষ বলেন, ‘‘স্যরদের দেওয়া তথ্য, ছবি দেখেছিলাম। লাল বাইক, গুঁজে পরা চেক শার্ট-প্যান্ট, একই হেলমেট দেখে সন্দেহ হয়েছিল। তখনই ঠিক করে ফেলি ওকে ধরতেই হবে।’’

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

কালনা শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৯ ০১:১৯
Share:

ধৃতের সঙ্গে সিভিক পুলিশ অনির্বাণ। নিজস্ব চিত্র

পাঁচটা খুন, তিনটে খুনের চেষ্টা। তার পরেও হদিস মিলছিল না আততায়ীর। জেলা পুলিশের রক্তচাপ বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের আতঙ্ক, রাজনৈতিক দলগুলির আসরে নামা বাড়ছিল। রবিবার বিকেলে অবশ্য সিসিটিভির ফুটেজে দেখা ছবি মিলিয়ে ওই আততায়ীকে ধরে ফেললেন এক সিভিক পুলিশ।

Advertisement

কালনা ১ ব্লকের কাঁকুরিয়া পঞ্চায়েতের কাদিপুর গ্রামে কর্তব্যরত ওই সিভিক পুলিশ অনির্বাণ ঘোষ বলেন, ‘‘স্যরদের দেওয়া তথ্য, ছবি দেখেছিলাম। লাল বাইক, গুঁজে পরা চেক শার্ট-প্যান্ট, একই হেলমেট দেখে সন্দেহ হয়েছিল। তখনই ঠিক করে ফেলি ওকে ধরতেই হবে।’’

শনিবারই কালনার পুরশ্রী মঞ্চে পুলিশের তরফে বৈঠক করা হয়। প্রতিটি পঞ্চায়েতের ১০ জন করে সিভিক ও ভিলেজ পুলিশদের ডাকা হয় সেখানে। প্রোজেক্টারের মাধ্যমে সিসিটিভি থেকে পাওয়া বেশ কিছু তথ্য পুলিশকর্মীদের সামনে রাখা হয়। দুষ্কৃতীর বাইকের রং, পোশাক, জুতো, হেলমেটের রং, সঙ্গে থাকা ব্যাগের ছবি দেখানো হয়। বারবার সতর্ক করা হয় সবাইকে। এ দিন দুপুরে সাধপুকুর থেকে মেদগাছি যাওয়ার রাস্তায় নাকা তল্লাশি চালাচ্ছিলেন অনির্বাণ। আড়াইটে নাগাদ একটি লাল মোটরবাইক দেখতে পান তিনি। পুলিশ কর্তাদের ফোনে জানানোর সঙ্গে সঙ্গেই বলা হয়, বাইক আরোহীকে বুলবুলিতলা পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যেতে। ফোন শেষ হতেই আরও এক জন এসে নিজেকে ওই বাইক আরোহীর আত্মীয় দাবি করে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলেন। ঊর্ধ্বতন কর্তাদের অনুমতি নিয়ে নাম, নম্বর জেনে নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় বাইকটি। তার পরেও ওই লাল বাইকটি পাশে রেখে আরোহী ও তাঁর আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলছিলেন অনির্বাণ। তাঁর দাবি, ৩টে নাগাদ ওই রাস্তায় আরও একটি বাইক আসতে দেখেন তিনি। তাঁর দাবি, সিভিক পুলিশ দেখেই গতি বাড়িয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ওই ব্যক্তি। দ্রুত গতিতে যেতে গিয়ে গ্রামের এবড়ো খেবড়ো রাস্তায় বেসামাল হয়ে দুষ্কৃতী সোজা ধাক্কা মারে দাঁড় করানো বাইকটিতে। মুহূর্তে নেমে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও তিনি দৌড়ে এসে বাইকের হাতল ধরে চাবি কেড়ে নেন বলে দাবি অনির্বাণের। সাহায্যে এগিয়ে আসেন আশপাশের বাসিন্দারাও। হাতেনাতে ধরে ভাল করে দেখতেই দেখা যায়, সিসিটিভি-র ছবির সঙ্গে হুবহু মিলে গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই বুলবুলি তলা ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় ওই যুবককে।

Advertisement

অনির্বাণ বলেন, ‘‘স্যরেদের দেওয়া তথ্য, ছবি ভীষণ ভাবে কাজে এসেছে। ওগুলো না পেলে কোনও ভাবেই বুঝতে পারতাম না এই লোক আততায়ী। কে জানে, হয়তো আরও একটা দুষ্কর্ম করতে যাচ্ছিল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement