Coronavirus Lockdown

বাসের দেখা নেই, বাড়ল হা হুতাশ

সোমবার সংখ্যা নিয়ে দ্বিমত, জেলার বিভিন্ন জায়গায় বাস না পেয়ে যাত্রীদের ভোগান্তির জেরে বিকেলে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেন জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২০ ০৫:৩৮
Share:

বাস পেয়ে, ভাতারে । নিজস্ব চিত্র

কথা ছিল ৩০ শতাংশ বাস চলার। সে অনুপাতে পূর্ব বর্ধমানে চলার কথা ছিল ৩০০ বাসের। কারণ, জেলায় বেসরকারি বাস চলে প্রায় এক হাজার। অথচ, চলল ৪০টি বেসরকারি বাস। যদিও জেলা পরিবহণ দফতরের দাবি, জেলা জুড়ে বাস চলেছে দু’শোটি।

Advertisement

সোমবার সংখ্যা নিয়ে দ্বিমত, জেলার বিভিন্ন জায়গায় বাস না পেয়ে যাত্রীদের ভোগান্তির জেরে বিকেলে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেন জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী। বৈঠক করে আজ, মঙ্গলবার থেকে বেশি চালানোর আর্জিও জানান তিনি। জেলা বাসমালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক তুষার ঘোষ বলেন, ‘‘বাসচালক ও কর্মীদের সঙ্কটে বাস চালানো যায়নি। জেলায় বেসরকারি বাস চলেছে ৪০টি। তবে বৈঠক ফলপ্রসূ। আশা করছি মঙ্গলবার থেকে ৪০ শতাংশের মতো বাস রাস্তায় নামবে।’’ লোকসান হলেও জেলাশাসকের অনুরোধে বেশি বাস চালানো হবে, দাবি তাঁর। আরটিও রানা বিশ্বাস বলেন, ‘‘জেলায় দুশোটি বাস চলেছে।’’

বীরভূমের সিউড়ির বাসিন্দা সৌরভ চৌধুরী সকাল ৬টায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে ১১টায় পৌঁছন বর্ধমানের পূর্ত ভবনে। পূর্ত ভবনের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কর্মী তিনি। সৌরভবাবু বলেন, ‘‘বাস কম, অনেক ঝক্কি পেরিয়ে পৌঁছেছি। জানি না ফিরব কী ভাবে!’’

Advertisement

বর্ধমানের আলিশা বাসস্ট্যান্ডে সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত তিনটি বাস ছাড়তে দেখা যায়। বাঁকুড়া এবং দক্ষিণ দামোদর এলাকার বাস ছাড়ে এখান থেকে। তবে সব বাসেই যাত্রী ছিল হাতেগোনা। জি টি রোডের উপর দিয়ে যাওয়া জামালপুরের বাসেও তিন জন যাত্রী চোখে পড়ে। দু’-তিন ঘণ্টা অন্তর একটি করে বাস ছাড়তে দেখা যায়। টাউন সার্ভিস বাসও তেমন দেখা যায়নি। বর্ধমান-কলকাতা রুটের বাসে অবশ্য কিছু যাত্রীর দেখা মেলে। অনেক অফিস যাত্রী বেছে নেন মোটরবাইক।

কালনা নতুন বাসস্ট্যান্ড থেকে ১৫টা রুটে প্রায় ১৬০টা বাস চলে। এ দিন চারটে রুটে ২৫টি বাস চলেছে। বাসকর্মীদের ইউনিয়নের দাবি, ট্রেন না চলায় বাসযাত্রী কম। সে কারণেই বেশি বাস নামাতে চাইছেন না মালিকেরা। যাত্রী পেলেই বাস বাড়বে। পূর্বস্থলীর বাসিন্দা শ্যামল কর্মকার ব্যবসার কাজে প্রতিদিন কালনায় আসেন। শ্যামলবাবুর দাবি, ‘‘স্টেশনারি জিনিস বিক্রি করি। ৫০-৬০ টাকায় যাতায়াত করতে পারি। এখন মোটরবাইকের তেল খরচ হচ্ছে দেড়শো টাকার কাছাকাছি।’’ তিনি বলেন, ‘‘লকডাউনের জেরে ব্যবসায় মন্দা। তার উপরে বাস না চলায় খরচ বেড়ে নাভিশ্বাস উঠছে।’’

কালনা ১ ব্লকের এক সরকারি কর্মীরও দাবি, ‘‘লকডাউন চলাকালীন জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত থাকায় ব্লকে আসতে হয়েছে। তখন সমুদ্রগড় থেকে মোটরবাইকে আসতাম। তবে দু’দিন আসতে হওয়ায় গায়ে লাগেনি। এখন বাস নেই, কিন্তু অফিস যেতে হবে রোজ। খরচ নিয়ে চিন্তা বাড়ছে।’’

কাটোয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে নানা রুটে প্রায় ২৪টি বাস ছেড়েছে। তবে, যাত্রীর সংখ্যা খুবই কম ছিল বলে দাবি বাস মালিকদের। কাটোয়া বাস মালিক সমিতির সভাপতি নারায়ণচন্দ্র সেন বলেন, ‘‘অনেকেই বাস চালিয়েছেন। তবে যাত্রী একেবারেই নেই। জ্বালানির খরচ ওঠেনি।’’ শ্রাবণী মজুমদার নামে এক মহিলা এ দিন বোলপুরে যাবে বলে বাস ধরতে আসেন। তাঁর দাবি, ‘‘সকাল ৮টায় স্ট্যান্ডে আসি। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পরেও বাস ছাড়েনি। পরে বাসকর্মীরা জানান, চার জন যাত্রী নিয়ে বোলপুর যাওয়া সম্ভব নয়। বাধ্য হয়ে বাড়ি ফিরে আসি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement