প্রতীকী চিত্র।
প্রধান জেলে, উপপ্রধানও বেপাত্তা। ফলে আড়াই মাস ধরে অচল হয়ে পড়ে রয়েছে খণ্ডঘোষের উখরিদ গ্রাম পঞ্চায়েত।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত দফতর থেকে ন্যূনতম শংসাপত্র মিলছে না। ১০০ দিনের প্রকল্পে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজও থমকে রয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে সাধারণ মানুষের হয়রানি দেখে, দলের নির্দেশে প্রধানকে সরানোর জন্য তৃণমূলের সদস্যরা অনাস্থা প্রস্তাবের চিঠিও দিয়েছেন। সামনের সপ্তাহে শুক্রবার অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বৈঠক ডেকেছে খণ্ডঘোষ ব্লক প্রশাসন।
জেলা পরিষদের সদস্য তথা খণ্ডঘোষ ব্লক তৃণমূল সভাপতি অপার্থিব ইসলাম বলেন, “উন্নয়নের গতিতে বাধা পড়ছে। সাধারণ মানুষ অসুবিধার মধ্যে পড়ছেন। সে কথা বিবেচনা করেই পঞ্চায়েতের সদস্যরা অনাস্থা প্রস্তাব এনে চিঠি দিয়েছেন।”
তৃণমূল ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ জুন বর্ধমানের প্রশাসনিক সভা সেরে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় এলোপাথারি ছুরি মেরে খুন করা হয় উখরিদ গ্রামের পরেশ পালকে। সামনে আসে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। উখরিদ গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান মতিউর রহমান-সহ ন’জনের নামে অভিযোগ হয়। পরেশবাবুর স্ত্রী বুদিদেবী পুলিশকে জানান, তাঁর স্বামী গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য শেখ আসমাতারা বেগমের স্বামী চাঁদ শেখের অনুগামী বলে খুন করা হয়েছে। সে সময় পরেশবাবুর বাড়ি যান তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মুকুল রায়, জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথরা।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই ঘটনার পরেই গ্রেফতার হন পঞ্চায়েত প্রধান মতিউর রহমান। উপপ্রধান অমর ক্ষেত্রপালও এলাকাছাড়া তখন থেকেই। ফলে প্রধান ও উপপ্রধানের অনুপস্থিতিতে পঞ্চায়েতের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। ওই এলাকার ছাত্র আসগর শেখ, ছাত্রী তনুজা খাতুনদের দাবি, “সংখ্যালঘু বৃত্তি পাওয়ার জন্য আয়ের শংসাপত্র দরকার। ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্যেও প্রধানের শংসাপত্র আবশ্যিক। কিন্তু প্রধান বা উপপ্রধানের অনুপস্থিতির জন্য কোনওটাই মিলছে না। সমস্যায় পড়ছি আমরা।’’ পঞ্চায়েতের এক কর্মীর কথায়, “জন্ম বা মৃত্যুর শংসাপত্র দেওয়ার একমাত্র অধিকারী পঞ্চায়েত প্রধান। তাঁর অনুপস্থিতিতে জন্ম-মৃত্যু শংসাপত্র পাওয়ার আবেদন জমে যাচ্ছে। মানুষের হয়রানি হচ্ছে।” এ ছাড়াও ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প রূপায়ণ কিংবা নতুন কাজের বরাতও দিতে পারছে না পঞ্চায়েত। খণ্ডঘোষের সিপিএমের মুখপাত্র বিনোদ ঘোষেরও দাবি, “গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে মানুষের হয়রানি হচ্ছে।”