প্রতীকী ছবি।
পুরসভার নতুন বোর্ড তৈরি হয়েছে বছর তিনেক আগে। পরের নির্বাচনে দেরি এখনও প্রায় দু’বছর। কিন্তু তার আগেই উন্নয়নের নানা কাজের তালিকা নিয়ে নাগরিকদের দ্বারে দ্বারে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আসানসোল পুরসভার কর্তারা। সেই সঙ্গে নাগরিক পরিষেবায় কী কী খামতি, কী চাহিদা রয়েছে এমন সব বিষয়ও একেবারে মাঠে নেমে জানার চেষ্টা করা হবে। পোশাকি ভাবে এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘পুরসভা এল আপনার ঘরে।’
কিন্তু ভোট যখন এতটা দেরি, তখন আচমকা কেন এই প্রকল্পের প্রয়োজন পড়়ল? এই বিষয়টি নিয়ে নানা মত উঠে আসছে। আসানসোল পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির কথায়, ‘‘এই প্রকল্পের মাধ্যমে শহরবাসীর চাহিদা, দাবিদাওয়া বোঝাটাই একমাত্র উদ্দেশ্য। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এলাকায় কতটা উন্নয়ন হয়েছে, সেটাও আমরা জেনে নেব।’’
কিন্তু প্রকল্পের কথা জানতে কেনই বা দ্বারে দ্বারে যাওয়া, উঠেছে সেই প্রশ্নও। আসানসোল পুরসভার কর্তাদের একাংশের দাবি, অনেক সময়েই দেখা যাচ্ছে নাগরিকদের প্রকৃত চাহিদার কথা সংশ্লিষ্ট দফতর পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে না। তাই এই পরিকল্পনা। জানা গিয়েছে, পুরসভার ১০৬টি ওয়ার্ডকে ৩০টি ভাগে ভাগ করে প্রতিটি বিভাগে মেয়র পারিষদ, বরো চেয়ারম্যান, বিধায়ক ও পুরসভার আধিকারিকদের রেখে একটি দল তৈরি করা হবে। তাঁরাই নিয়ম করে পৌঁছবেন নাগরিকদের বাড়ি বাড়ি। শারোদৎসবের পরেই এই কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন মেয়র।
তবে এই প্রকল্পের নেপথ্যে অন্য উদ্দেশ্যও রয়েছে বলে পুরসভার কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত লোকজনের ধারণা। তাঁদের অনুমান, ওয়ার্ডে কাজ হলে সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরের মাধ্যমেই তা হয়ে থাকে। তাতে আখেরে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয় কাউন্সিলরের। এই ‘মনোভাব’ই প্রকল্পের মাধ্যমে বদলাবে বলে দাবি পুরসভার। কারণ, এ ক্ষেত্রে পুরসভার কর্তা সরাসরি নাগরিকদের বাড়ি গেলে পুরসভার ভাবমূর্তিও আরও উজ্জ্বল হবে।
তবে উদ্দেশ্য যাই হোক, উন্নয়নের কথা বাড়ি বাড়ি পৌঁছনোর সুফল আসলে দল এবং পুরসভার পক্ষেই যাবে বলে মনে করছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন।