ধৃত সুদীপ্তকুমার রায়। —নিজস্ব চিত্র।
খোরপোশের মামলা চলছে। স্ত্রী আলাদা থাকেন। সেই স্ত্রীকেই খুনের চেষ্টা ও হুমকির অভিযোগে গ্রেফতার হলেন বর্ধমান আদালতের এক আইনজীবী।
ওই আইনজীবী সুদীপ্তকুমার রায়কে রবিবার দুপুরে বড়নীলপুরে বাড়ি থেকেই ধরা হয়। সোমবার তাঁকে সিজেএম এজলাসে তোলার সময় হেফাজতে নিতে চেয়ে কোনও আবেদনও করেনি পুলিশ। সেই মতো সরকারি আইনজীবী চন্দ্রনাথ গোস্বামী ও অভিযুক্তের আইনজীবী গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুনানি শুনে বিচারক সঞ্জয়রঞ্জন পাল ধৃতকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। এরপরেই হঠাৎ দেখা যায়, সিজেএম এজলাসে হন্তদন্ত হয়ে ঢুকছেন এসডিপিও বর্ধমান সদর সৌমিক সেনগুপ্ত, বর্ধমান থানার আইসি শান্তনু মিত্র ও তদন্তকারী অফিসার সমীরকুমার ঘোষ। তাঁরা গিয়ে ধৃতকে ১৪ দিন হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানান। সবাইকে চমকে দিয়ে বিচারক ওই আবেদনের ভিত্তিতে ফের শুনানি শুরু করেন। ধৃত আইনজীবীকে এ বার ন’দিনের পুলিশ হেফাজত দেন। একই দিনে একই ঘটনার দু’রকম নির্দেশ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
ধৃতের আইনজীবী ওই আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, ‘‘একই ঘটনায় এক দিনে দু’বার শুনানি করা যায় না। কিছুক্ষণ আগের দেওয়া নির্দেশ কী করে বদলাবেন বিচারক?’’ যদিও সরকারি আইনজীবী পুলিশের দাবিকে সমর্থন করেই সওয়াল করেন। আইনজীবীদের একাংশেরও দাবি, এটা অনভিপ্রেত। বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সদন তা বলেন, ‘‘ধৃত আইনজীবী আমাদের সংগঠনের সদস্য নন। তাঁর কাজকর্মের উপর বিরক্ত হয়ে বছর দুয়েক আগে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে এ দিন বিচারক একই ঘটনায় দু’বার নির্দেশ দেওয়ায় আমরা বিস্মিত। ভরা এজলাসে নির্দেশ দেওয়ার পরেও তা প্রত্যাহার করা ঠিক হয়নি।’’
পুলিশের দাবি, ছ’বছর আগে সুদীপ্তবাবুর সঙ্গে ভাতারের থানার ভাটাকুলের সোনালী চৌধুরীর বিয়ে হয়। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই নানা রকম নির্যাতন চলছিল। তা সহ্য করতে না পেরে প্রসূতী অবস্থায় বাপের বাড়ি চলে আসেন সোনালীদেবী। ভাতার থানায় অভিযোগও করেন। তার ভিত্তিতে পুলিশ ওই আইনজীবীকে গ্রেফতার করে। খোরপোশের মামলাও চলছে। এই অবস্থায় মামলা তোলার জন্য তাঁর ও পরিবারের অন্যদের নানা ভাবে সুদীপ্ত হুমকি দিচ্ছিলেন বলে সোনালীদেবীর অভিযোগ। রবিবার বর্ধমান থানায় সোনালীদেবী অভিযোগ করেন, তাঁকে অপহরণ করে খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে। তার ভিত্তিতেই ফের গ্রেফতার করা হয় ওই আইনজীবীকে।