—প্রতীকী ছবি।
ভুয়ো নথি তৈরি করে সদ্যোজাতকে বিক্রিতে অভিযুক্ত বর্ধমান শহরের ভাঙাকুঠি এলাকার একটি নার্সিংহোমের ডিরেক্টর চিকিৎসক, নার্সিংহোমের ওটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ও দম্পতিকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিল কাটোয়া আদালত। শিশুটিকে দম্পতির কাছে দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার কাটোয়ার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সুকুমার সূত্রধর এই নির্দেশ দিয়েছেন। দম্পতিকে শিশুটির বায়োলজিক্যাল বাবা–মা বলে জানিয়ে দিয়েছে আদালত। মামলায় অভিযুক্তদের হয়ে আইনজীবী বিষ্ণুপ্রসাদ শীল, সৈয়দ আশিক রসুল ও জয়ন্ত দে সওয়াল করেন। বিষ্ণুপ্রসাদ শীল বলেন, ‘‘শিশু চুরির অভিযোগ আদালতে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ। ঘটনার বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছিল কাটোয়া থানা। দম্পতি যে শিশুটির বায়োলজিক্যাল বাবা–মা তা রায়ে পরিষ্কার করে দিয়েছেন বিচারক।’’
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া থানার পানুহাট পাড়ার প্রদীপ বিশ্বাস ও অনুশ্রী বিশ্বাস বিয়ের ১০ বছর পরও নিঃসন্তান ছিলেন। ২০১৯ সালের ২৮ জুলাই অনুশ্রী বর্ধমান শহরের ভাঙাকুঠি এলাকার ওই নার্সিংহোমটিতে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসক কাশেম আলির তত্ত্বাবধানে তিনি একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন বলে ডিসচার্জ সার্টিফিকেটে উল্লেখ করা হয়। এর পর সদ্যোজাত কন্যাকে নিয়ে ওই দম্পতি গ্রামে ফিরে যান। ঘটনার বেশ কয়েক মাস পর তাঁদের বাড়িতে শিশুকন্যাকে দেখতে পেয়ে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। বিষয়টি তাঁরা পুলিশকে জানান। তার ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৪(৪), ৩৬৩, ৩৪ ও ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিস্টমেন্ট অ্যাক্টের ২৮৭ ও জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্টের ৮১ ধারায় মামলা রুজু করে দম্পতি ও নার্সিংহোমে ওটি অ্যাসিস্ট্যান্ট শৈলেন রায়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের নিয়ে ভাঙাকুঠি এলাকার নার্সিংহোমটিতে হানা দিয়ে বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়। ঘটনায় নাম জড়ায় চিকিৎসক কাশেম আলিরও। তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। কিছু দিন পর জামিনে ছাড়া পান অভিযুক্তেরা। আইনজীবীরা জানান, সদ্যোজাতকে যে চুরি করা হয়েছিল, তার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। শিশুটিকে বিক্রিরও কোনও তথ্য আদালতে পেশ করতে পারেনি পুলিশ। তা ছাড়া বাচ্চাটি যে ওই দম্পতির নয়, তাও প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ।