শুভাশিস হালদার। নিজস্ব চিত্র
বাবা তৃণমূলের নেতা। মা জেলা পরিষদের সদস্য। তাঁদের ছেলে যোগ দিলেন বিজেপির শ্রমিক সংগঠনে। সম্প্রতি ভারতীয় জনতা মজদুর ট্রেড ইউনিয়নের কাটোয়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতিও নির্বাচিত হয়েছেন কালনার শুভাশিস হালদার।
পুরভোটের আগে এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু অবশ্য বলেন, ‘‘শঙ্করবাবু অসুস্থ বলে শুনেছি। তবে ওঁর ছেলের কোনও খবর জানা নেই।’’ জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ বৈঠকে থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
বিজেপির সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক রাহুল সাউ ২১ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন জেলার পাঁচ জনকে সভাপতি হিসাবে নিয়োগপত্র দিয়েছেন। সেই তালিকায় তিন নম্বরে রয়েছেন পেশায় আইনজীবী শুভাশিসবাবু। সোমবার রাহুলবাবু বলেন, ‘‘আমাদের সংগঠনের সমীক্ষায় ওই আইনজীবীর নাম উঠে এসেছে। নতুন মুখ আসায় জেলায় সাংগঠনিক শক্তি বাড়বে বলেই মনে করছি।’’
কালনা শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শুভাশিসবাবুর বাবা শঙ্কর হালদার এলাকায় তৃণমূল নেতা বলেই পরিচিত। ছেলে কর্মসূত্রে কালনা শহরে থাকলেও সস্ত্রীক হাটকালনা পঞ্চায়েতের তালবোনা এলাকায় থাকেন তিনি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেশ কয়েকবার দল বদলেছেন শঙ্করবাবু। ২০০৯ সালের লোকসভা ভোটে কাটোয়া আসন থেকে বিজেপি প্রার্থী হয়েছিলেন শঙ্করবাবু। ভোট পেয়েছিলেন ৭১ হাজারের বেশি। কয়েক বছর পরে অবশ্য তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। শঙ্করবাবুর স্ত্রী আরতি হালদারও পঞ্চায়েতে ভোটে জেলা পরিষদের একটি আসনে বড় ব্যবধানে জয়ী হন।
ঘটনায় গুঞ্জন শুরু হয়েছে শহরে। তৃণমূল নেতাদের একাংশের দাবি, ছেলের পরে পুরো পরিবারই হয়তো বিজেপির যোগ দেবেন। চিকিৎসার প্রয়োজনে ভিন্ রাজ্যে রয়েছেন ওই দম্পতি। সেখান থেকেই ফোনে শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘ছেলের বিজেপির শ্রমিক সংগঠনে যোগ দেওয়ার কথা আমার জানা নেই। তবে ছেলে স্বাবলম্বী। ওর ব্যক্তিগত চিন্তাভাবনার স্বাধীনতা রয়েছে। আমার আর কী বলার আছে!’’
রাজনৈতিক পরিবারের বড় হলেও আগে সক্রিয় ভাবে কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না শুভাশিসবাবু। এখন অবশ্য জোরকদমে সংগঠনের হয়ে কাজ শুরু করেছেন। তাঁর দাবি, ‘‘তৃণমূল দলটি দুর্নীতিতে ভরে গিয়েছে। কংগ্রেস, সিপিএমের শাসকদলের বিরুদ্ধে লড়ার ক্ষমতা নেই। এই পরিস্থিতিতে বিজেপিই সাধারণ মানুষের জন্য লড়াই করতে পারে। ব্যক্তিগত ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েই বিজেপির হয়ে মাঠে নেমেছি।’’ দল চাইলে পুরভোটেও জোরকদমে খাটবেন, দাবি তাঁর।