বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা তছরুপ কান্ডে অভিযুক্ত সুব্রত। নিজস্ব চিত্র।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক দুর্নীতির ঘটনায় ধৃত সুব্রত দাসকেই মূল ‘চক্রী’ বলে মনে করছে পুলিশ। তাঁর নামে আরও সাইবার প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ আদালতকে জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী, অভিযুক্ত ভক্ত মণ্ডল ও সুব্রত একজোট হয়ে জাল নথিপত্র তৈরি করেছিলেন। জাল সই ও নথি তৈরির বড় চক্রের সঙ্গে সুব্রতর যোগ রয়েছে বলেও অনুমান তদন্তকারীদের।
মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগণার স্বরূপনগরের চাতরা মাঠ থেকে সুব্রতকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বাড়ি নদিয়ার কল্যাণীতে। বর্তমানে তিনি থাকেন যাদবপুর থানার চিত্তরঞ্জন কলোনিতে। বুধবার ধৃতকে বর্ধমান আদালতে তোলা হলে বিচারক ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠান। তাঁর হয়ে কোনও আইনজীবী জামিনের জন্য সিজেএম এজলাসে সওয়াল করেননি। তবে, এই মামলায় আর এক অভিযুক্ত শেখ এমানুল হককে বিচারক এ দিন শর্তাধীন জামিন দেন।
পুলিশের দাবি, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী আমানত ভেঙে অন্য অ্যকাউন্টে টাকা পাঠানোর দু’টি অভিযোগ হয়েছে। একটিতে বড়বাজারের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও ফিনান্স অফিসারের সই জাল ও নথি জাল করে টাকা পাঠানোর ‘চাপ’ দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ করে। সেখানে কল্যাণীর একটি সংস্থাকে টাকা পাঠাতে বলা হয়েছিল। পরবর্তী সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরে পরে, শহরের জেলখানা মোড়ে অন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা ২০২২ সালের ১২ অগস্ট, ২৬ অগস্ট ও ২০২৩ সালের ২৯ মার্চ যাদবপুরের একটি শাখায় তিনবারে ধৃতের অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ৯৩ লক্ষ ৮৯ হাজার ৮৭৬ টাকা পাঠিয়েছে। রেজিস্ট্রার গত ২২ ফেব্রুয়ারি বর্ধমান থানায় অভিযোগ করেন। ঘটনাচক্রে, দু’টি ব্যাঙ্কের ‘পেমেন্ট অ্যাডভাইসে’ একটি মোবাইল নম্বরই দেওয়া ছিল, যেটি ধৃতের বলেই পুলিশ জানতে পেরেছে।
আদালতে পুলিশ দাবি করেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী আমানতের টাকা মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই ভাঙিয়ে ধৃতের অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে। তাঁর কাছ থেকে ৩৩ হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এ ছাড়াও মোবাইল, আধার কার্ড, প্যান কার্ড বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ওই টাকা আরও কয়েকটি অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। যদিও আদালতে ঢোকার পথে সুব্রতর দাবি, “আমাকে কেন ধরে আনল বুঝতে পারছি না।”