কালনার নিয়ন্ত্রিত বাজারে পড়ে রয়েছে বিক্রি না হওয়া শসা। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যের পাইকারি বাজারগুলিতে সরবরাহ করার লোক নেই ফলে, আড়তেই আনাজ পচছে বলে অভিযোগ করেছেন চাষিরা। বুধবার কালনা ও পূর্বস্থলী এলাকার বহু চাষি ফসল বিক্রির ব্যবস্থা করতে পারেননি। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে কালনার নিয়ন্ত্রিত বাজার বন্ধ রাখারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাজার কমিটি। চাষিদের দাবি, আনাজ না পাঠানো গেলে কলকাতা ও আশপাশের বাজারেও আনাজ-সঙ্কট দেখা দিতে পারে।
হিমঘর না থাকায় সারা বছর ধরেই উৎপাদিত আনাজ মাঠ থেকে তুলে সরাসরি কাছাকাছি পাইকারি বাজারে নিয়ে যান চাষিরা। সেখান থেকে আড়তদারদের মাধ্যমে ফড়েরা কিনে যায় আনাজ। কলকাতা, হাওড়া, শ্রীরামপুর, দুর্গাপুর, আসানসোল, মেদিনীপুর, দুই চব্বিশ পরগনা ছাড়া পূর্বস্থলী থেকে ট্রাকে করে আনাজ যায় বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশাতেও। চাষিরা জানান, পূর্বস্থলী ২ ব্লকের কালেখাঁতলা বাজার থেকে প্রতিদিন ছোট বড় প্রায় ৫০ ট্রাক বোঝাই আনাজ যায় বিভিন্ন জায়গায়। অথচ এই বাজারেই এ দিন ছিল চাষিদের হাহাকার।
চাষিদের দাবি, আনাজ নিতে কোনও ট্রাক আসেনি। আড়ত থেকে স্থানীয় বাসিন্দারাই ৪০ কেজি, ৫০ কেজি করে আনাজ কেনেন। বিকেল পর্যন্ত দেখা যায়, এক চতুর্থাংশ আনাজ বিক্রি হয়েছে। চাষিরা জানান, মঙ্গলবার যে ঢ্যাঁড়শ ১৮ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে, এ দিন তার দর ছিল পাঁচ থেকে ছ’টাকা। বিকেল পর্যন্ত কুমড়ো, শশা প্রায় কিছুই বিকোয়নি, দাবি চাষিদের। শেষে এক টাকা কেজিতে বিকোয় শসা। স্থানীয় চাষি গোপাল ঘোষ বলেন, ‘‘বিক্রি না হওয়া আনাজ রাখার কোনও জায়গা নেই। সব পচে যাবে।’’
কালেখাঁতলা বাজার কমিটির সম্পাদক ক্ষুদিরাম মাহাতোর দাবি, ‘‘বাইরের ক্রেতাদের উপরেই পাইকারি বাজার নির্ভরশীল। বাইরে থেকে ট্রাক না আসলে বাজার চালানো মুশকিল।’’
কালনার জিউধারা এলাকার পাইকারি বাজারেও দুপুর দেড়টা পর্যন্ত প্রায় একশো টন শসা পড়েছিল। আড়তদারেরা জানান, কলকাতা, শ্রীরামপুর থেকে ফড়েরা আসছেন না। তাই এই হাল। বাজার কমিটির সম্পাদক দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘‘এ ভাবে চললে শীঘ্রই ঝাঁপ পড়বে বাজারে।’’ মহকুমা প্রশাসনকেও পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন তাঁরা।