ফাইল চিত্র।
বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তী হিংসার মামলার সাক্ষী হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামের এক তৃণমূল নেতাকে নোটিস পাঠিয়ে তলব করল সিবিআই। আউশগ্রাম ২ ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি তথা ভাল্কী অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি আহমদ শামস তাবরিজ ওরফে অরূপ মির্ধাকে রবিবার নোটিস দিয়ে আজ, সোমবার বেলা ১০টায় দুর্গাপুরে এনআইটি গেস্ট হাউসে সিবিআই-এর ডিএসপি কেপি শর্মার সামনে হাজির হতে বলা হয়েছে।
অরূপের দাবি, “আমি কোনও হিংসার ঘটনায় জড়িত নই। আমাকে কেন ডাকল বুঝতে পারছি না। আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করেছি, সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা দেব।’’ তাঁর দাবি, শনিবার বিকালে ফোন করে তাঁকে হাজিরা দেওয়ার কথা বলা হয়। তখন তিনি প্রয়োজনে নোটিস পাঠানোর কথা জানান।
স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পরে আউশগ্রামের কয়েকটি এলাকায় তাদের দলের সমর্থক বেশ কিছু পরিবারকে ঘরছাড়া করা হয়। অনেককে জমির পাকা ধান কাটতে দেওয়া হয়নি। বেশ কিছু বাড়ি দোকান ঘর ভেঙে দেওয়া হয়। কিছু আদিবাসীদের বাড়িতে অগ্নি সংযোগের অভিযোগও ওঠে।
বিজেপির আউশগ্রাম বিধানসভার ৫৩ নম্বর মণ্ডল কমিটির সভাপতি দেবব্রত মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘গত বছর বিধানসভা নির্বাচনের পরে ভাল্কী পঞ্চায়েতের পঞ্চমহুলিতে আমাদের দলীয় কার্যালয় ভেঙে দেন তৃণমূল কর্মীরা। তাঁদের অত্যাচারে প্রেমগঞ্জে আমাদের সমর্থক বেশ কয়েকটি পরিবার দীর্ঘদিন ঘরছাড়া হয়ে জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় তাঁবুর মধ্যে দিন কাটান। এখন ভাঙচুর করা বাড়ি ত্রিপল চাপা দিয়ে তাঁরা থাকছেন। অনেককে ১০০ দিনের কাজও দেওয়া হয় না। সরাসরি অরূপের নামে না হলেও সে সময় এলাকায় তৃণমূলের সন্ত্রাস নিয়ে অনলাইনে আমরা কয়েক জায়গায় অভিযোগ জানিয়েছিলাম।”
বিধানসভা নির্বাচনের পরে রাজ্যে হিংসার মামলায় সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। সিবিআই সূত্রে খবর, সেই নির্দেশেই তদন্ত চলছে। বিজেপির বর্ধমান সদর সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি সুশান্ত বিশ্বাসের অভিযোগ, “বিধানসভা ভোট পরবর্তী সময়ে অরূপ মির্ধার নেতৃত্বে আউশগ্রাম ২ ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাস ও হিংসার ঘটনা ঘটেছে। ওঁকে শুধু ডেকে পাঠালে হবে না, তাঁর শাস্তির ব্যবস্থাও করতে হবে।’’
তবে আউশগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার সন্ত্রাসের অভিযোগ উড়িয়ে দাবি করেন, “সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই সিবিআইকে দিয়ে নোটিস পাঠিয়ে আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছে বিজেপি। আমরা এতে ভয় পাই না।”