বিজেপির কর্মসূচি, আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র।
শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে এবং রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে বিভিন্ন মাধ্যমে পরিচিত বাংলার শিক্ষিকা মোনালিসা দাসের অপসারণ চেয়ে মঙ্গলবার আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ দেখাল বিজেপি এবং ভারতীয় জনতা যুব মোর্চা। অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরা এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিছুক্ষণের জন্য ২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। তবে ঘটনাস্থলে মজুত বিশাল পুলিশ বাহিনী পরিস্থিতির সামাল দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং মোনাসিলার রাত পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এ দিন সকাল সাড়ে ১১টায় বিজেপির কয়েকশো সদস্য, সমর্থক রেলপাড়ের একটি স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়েন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছনোর আগে কিছুক্ষণের জন্য ২ নম্বর জাতীয় সড়কে দাঁড়িয়ে পড়ে। এর জেরে জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে যায়। দু’দিকে যানবাহন দাঁড়িয়ে পড়ে। তবে পুলিশের অনুরোধে জাতীয় সড়ক খালি করে দেওয়া হয়। এর পরে, দুপুর সাড়ে ১২টায় মিছিল বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে উপস্থিত হয়।
প্রতিবাদে: শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজেপির বিক্ষোভ। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।
কর্মসূচির কথা আগাম জানা থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’টি গেটেই তালা দেওয়া ছিল। দু’টি গেটেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মী এবং প্রচুর পুলিশ মোতায়েন রাখা ছিল। উপস্থিত ছিলেন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সেন্ট্রাল) কুলদীপ সেনাওয়ানে। গেট বন্ধ দেখে সদস্য, সমর্থকেরা প্রথমে গেট টপকে ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মীদের বাধায় তা সফল হয়নি। অভিযোগ, এর পরেই বিক্ষোভকারীদের একাংশ গেট ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের বাইরে প্রায় ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভ দেখিয়ে কর্মসূচি শেষ হয়। এ দিনের কর্মসূচিতে উপস্থিত বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, “পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নানা অপকর্মে জড়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মোনালিসা দাস। দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কারও শিক্ষাঙ্গনে থাকার অধিকার নেই। আমরা তাই মোনালিসা দাসের অপসারণ চাইছি।” বাপ্পার আরও অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁদের সঙ্গে সৌজন্যমূলক ব্যবহার করেননি। বিজেপির রাজ্য নেতা কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মদতে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়েও নিয়োগ-দুর্নীতি হয়েছে। তদন্ত করতে হবে।”
তবে এ দিন বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী এবং যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই মোনালিসাকে ফোন করা হলেও, তাঁরা কেউই ফোন ধরেননি। রাত পর্যন্ত দু’জনেই উত্তর দেননি মেসেজেরও।