প্রতীকী ছবি।
কিশোরবেলায় ও-পার বাংলা থেকে সীমান্ত পেরিয়ে এই বঙ্গে আসা। তার পরে লরির খালাসি থেকে নানা পেশা পেরিয়ে মুম্বই ঘুরে বিহারের ডাকাতদলে নাম লিখিয়ে আপাতত শ্রীঘরে। রসুল শেখ ওরফে চন্দনের এই বিচিত্র পরিক্রমা বঙ্গের দুঁদে গোয়েন্দাদেরও অবাক করে দিয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, ও-পার থেকে বেআইনি ভাবে ঢুকে নানা ধরনের অবৈধ কাজকর্ম, এমনকি জঙ্গিপনারও দৃষ্টান্ত যথেষ্ট। কিন্তু এ ভাবে এ দেশের ডাকাতদলে কোনও বাংলাদেশির সংস্রবের কথা বিশেষ শোনা যায় না। চন্দনের মতো কত বাংলাদেশি বেআইনি ভাবে ভারতে বসবাসের সুযোগে এই ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে, সেই প্রশ্ন উঠছে।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে ছ’জনের একটি ডাকাতদল রানিগঞ্জে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা দিয়েছিল। পুলিশ গিয়ে তিন জনকে ধরে ফেলে। চন্দন তাদের অন্যতম। সিআইডি-র জেরায় উঠে আসে, চন্দনের বাড়ি ঢাকায়। কয়েক বছর আগে বনগাঁ সীমান্ত পেরিয়ে এসে পেট্রাপোলে লরির খালাসির কাজ শুরু করে সে। তখন চন্দন নাবালক। পুলিশের হাতে ধরা পড়ে জায়গা পায় বেলঘরিয়ার একটি হোমে। অভিযোগ, হোম থেকে সেপালিয়ে গিয়ে জড়িয়ে পড়ে অপরাধজগতের সঙ্গে। ভারতে থাকার বৈধ পরিচয়পত্র হিসেবে বানিয়ে নেয় ড্রাইভিং লাইসেন্স। একটি দুষ্কর্মে ধরা পড়ে তার ঠাঁই হয় দমদম জেলে। ডাকাতদলের পান্ডা শাজাহান সিংহ ওরফে আকাশের সঙ্গে জেলেই আলাপ হয় চন্দনের। মাঝখানে মুম্বই চলে গেলেও রানিগঞ্জে ওই ডাকাতির জন্য সে ফিরে আসে।
সিআইডি সূত্রের খবর, চন্দন ছাড়াও সে-দিন ছ’জনের ডাকাতদলে ছিল সোনু যাদব ওরফে মনোজ কুমার আর আকাশ। বিহারের জেলে বসে কুখ্যাত দুষ্কৃতী সুবোধ সিংহ ওই দল চালাচ্ছে। এক তদন্তকারী জানান, এরা মূলত সোনার দোকানেই ডাকাতি করে। পুলিশ চন্দনের কাছে দেশি বন্দুক, কার্তুজ ও ড্রাইভিং লাইসেন্স, মনোজের কাছে দেশি বন্দুক, কার্তুজ ও দু’টি মোবাইল ফোন এবং আকাশের কাছে বিদেশি পিস্তল, আট রাউন্ড ৯এমএম কার্তুজ-সহ একটি ম্যাগাজিন, আধার কার্ড, মোবাইল ফোন ও ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়েছে।