অনুব্রত মণ্ডল। ফাইল চিত্র।
গরুপাচার মামলায় মঙ্গলবারও জামিন হল না তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের। ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে পিছিয়ে গেল বীরভূমের তৃণমূল নেতার জামিন মামলা। বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী এবং সতীশ চন্দ্র শর্মার বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল।
আদালত নির্দেশ দিয়েছে, অনুব্রতের বিরুদ্ধে আগে চার্জ গঠন করা হোক। তারপর জামিনের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। অনুব্রতের পক্ষে আইনজীবী মুকুল রোহতাগী জানান, এই মামলার মূল অভিযুক্ত, যাকে সিবিআই ‘কিংপিন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে, সেই এনামুল হক জামিন পেয়ে গিয়েছেন। আর এক অভিযুক্ত সতীশ কুমার জামিন পেয়েছেন। কিন্তু ১৭ মাস ধরে জেলে আছেন অনুব্রত। তাই তাঁকেও জামিন দেওয়া হোক।
তখন অনুব্রতের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজু বলেন, “শাসকদলে তাঁর ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে জেলায় রাজার মতো থাকেন অনুব্রত। তিনি এই মামলার অন্য প্রত্যক্ষদর্শীদের ভয় দেখিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে সিবিআইয়ের গ্রেফতার ঠেকানোর চেষ্টা হয়েছে। তিনি জেলার পুলিশ অফিসারদের বদলি এবং পোস্টিং ঠিক করেন। জামিনের জন্য আদালতের স্পেশাল জাজকে ভয় দেখিয়ে চিঠি পাঠানোর অভিযোগও উঠেছে অনুব্রতের বিরুদ্ধে।”
আদালত তখন সিবিআইয়ের কাছে জানতে চায়, এই মামলা কটা চার্জশিট তৈরি করা হয়েছে? সেই সময় অনুব্রতের আইনজীবী রোহতগী আদালতে জানান, তদন্তকারী সংস্থার কাছ থেকে চার্জশিটের কোনও কপি পাননি তাঁরা। এর পরই আদালত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে নির্দেশ দেয়, এক সপ্তাহের মধ্যে এই মামলার চার্জশিটের কপি অনুব্রতদের দিতে হবে। তদন্তের অগ্রগতি কী, কোন পর্যায়ে রয়েছে এই তদন্ত, সিবিআইকে তা-ও জানাতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
গত বছরের অগস্টে গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন অনুব্রত। তার পর তাঁর জায়গা হয় আসানসোল জেলে। পরে একই মামলায় অনুব্রতকে ইডি নিজেদের হেফাজতে নিলেও খুনের চেষ্টার মামলায় রাজ্য পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন তৃণমূল নেতা। পরে জামিন পেয়ে রামপুরহাট জেল থেকে আবার আসানসোল জেলে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। গরু পাচার মামলায় দিল্লিতে ইডি নিজেদের হেফাজতে তাঁকে রেখে দু’সপ্তাহ জিজ্ঞাসাবাদের পর থেকে তিহাড়েই রয়েছেন অনুব্রত। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২২ জানুয়ারি।