—প্রতীকী ছবি।
বাড়িভাড়া ভাতা (হাউজ় রেন্ট অ্যালাওয়্যান্স বা এইচআরএ) নিয়ে বৈষম্যের অভিযোগ করছেন রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, কোনও কর্মীর স্বামী বা স্ত্রী বেসরকারি চাকরি করলেও তাঁর কর্মস্থল থেকে প্রাপ্য বাড়িভাতা স্বামী বা স্ত্রীর প্রাপ্য ভাতা থেকে বাদ যাচ্ছে। রাজ্য সরকারি কর্মীরা সর্বোচ্চ কত এইচআরএ পেতে পারেন তার একটি সীমা আছে। সংশ্লিষ্ট কর্মীর বেসরকারি চাকুরিরত স্বামী বা স্ত্রীর বাড়িভাড়়া ভাড়া যদি সেই ঊর্ধ্বসীমার থেকে বেশি হয় তা হলে সরকারি কর্মী একটি পয়সাও এইচআরএ পাবেন না।
সরকারি কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, স্বামী বা স্ত্রী বেসরকারি ক্ষেত্রে চাকরি করলে এই নিয়ম প্রযোজ্য হতে পারে না। বহু কর্মী এই নিয়মের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করে প্রাপ্য এইচআরএ আদায় করেছেন। তার পরেও সার্বিক ভাবে রাজ্য সরকারের নীতিগত পরিবর্তন হয়নি। অর্থাৎ যিনি মামলা করেছেন তিনিই প্রাপ্য এইচআরএ পাচ্ছেন। যিনি এখনও মামলা করেননি, তিনি পাচ্ছেন না। কর্মীদের প্রশ্ন, শুধু মামলা করেননি বলেই কি এ ভাবে বঞ্চিত হওয়া উচিত?
কেউ কেউ বলছেন, বহু কর্মীর স্বামী বা স্ত্রী বেসরকারি চাকুরে। সেই সবাই যদি আলাদা আলাদা মামলা করতে শুরু করেন তা হলে তো মামলার পাহাড় জমে যাবে! বিভিন্ন স্তরের সরকারি কর্মী, স্কুল শিক্ষক, কলেজ শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-অধ্যাপক মিলিয়ে এমন ‘বঞ্চিত’ কর্মীর সংখ্যা নেহাত কম নয়।
হাই কোর্টের আইনজীবীদের অনেকেই বলছেন, সরকার যদি নীতি বদল না করে তা হলে মামলা করা ছাড়া অন্য কোনও পথ নেই। মূল নীতি নিয়ে মামলায় প্রশ্ন উঠলেও কোর্ট প্রত্যেকটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই রায় দিয়েছে। সার্বিক ভাবে নীতি নিয়ে কোনও নির্দেশ নেই। আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত বলছেন, ‘‘বহু সরকারি কর্মীই হাই কোর্টে এসে প্রাপ্য এইচআরএ আদায় করেছেন। সার্বিক ভাবে নীতি বদলের নির্দেশ নেই ঠিকই। তবে সরকার চাইলে এ ক্ষেত্রে সার্বিক ভাবে নীতি পরিবর্তন করে জটিলতার অবসান করতেই পারে।’’
এত মামলায় নির্দেশ হওয়ার পরেও নীতি কেন বদলাচ্ছে না, সেই প্রশ্ন অবশ্য অনেকেই তুলছেন। সরকারি কর্মীদের অনেকে বলছেন, রাজ্যের ভাঁড়ারের যা হাল তাতে কি এ ভাবে জটিলতা তৈরি করে এইচআরএ খাতে টাকা বাঁচানোর চেষ্টা হচ্ছে?