রাশি-রাশি: ঘোষপাড়া মেইন রোডে টোটোর সারি। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
রাস্তা জুড়ে সারি দিয়ে চলছে তিন চাকার সাদা, লাল, নীল, হলুদ বিভিন্ন রঙের টোটো। কখনও উল্টে যাচ্ছে, আবার কখনও ধাক্কা মারছে। এর জন্য নৈহাটিতে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। কিন্তু টোটোর সংখ্যা যেন দিন দিন বাড়ছে।
ঘোষপাড়া রোড, রায়বাহাদুর রোড, বিজয়নগর, হাসপাতাল রোড, ৪ নম্বর পুল থেকে রামঘাট যাওয়ার রাস্তায় টোটোর দৌরাত্ম্যে নাজেহাল পথচারীরাও।
স্থানীয় বাসিন্দা সবিতা ঘোষ বলেন, ‘‘প্রথম প্রথম যখন টোটো এসেছিল তখন মনে হয়েছিল খুব সুবিধা। আরও কিছু টোটো বাড়লে বোধহয় ভাল। কারণ রিকশার থেকে দ্রুত পৌঁছে দেয়। ছোট পরিবারেও তিন চারজন একসঙ্গে চলে যাওয়া যায়। কিন্তু এখন এত টোটো বেড়ে গিয়েছে যে রাস্তায় বের হতেই ভয় লাগে।’’ টোটো আর অটো এবং রিকশার মধ্যে সারাক্ষণ বিবাদও বেধে থাকে বলে স্থানীয়রা জানান। যাত্রী তোলা নিয়ে ক’দিন আগেই হাজিনগরের কাছে ঝামেলা হয়েছে। বাসিন্দারা জানান, দাপুটে টোটো চালকদের কিছু বলা যায় না। কিছু বললেই তাঁদের চোখরাঙানির মুখে পড়তে হয়।
টোটো চালকদের দাবি, নৈহাটিতে টোটোর যাত্রী অনেক। ভাড়ার লোভেই এই শহর পছন্দ। কিন্তু রাস্তা সরু। স্ট্যান্ডও নেই। তাতে অবশ্য পরোয়া নেই টোটো চালকদের। সুব্রত সেন, রাজা পাসোয়ানের মতো টোটো চালকদের দাবি, ‘‘আমরা যেখানে ভাড়া পাব সেখানেই যাব। এর জন্য কোনও স্ট্যান্ডের প্রয়োজন নেই।’’
বাসিন্দাদের দাবি, নৈহাটি স্টেশনের কাছে দিনেরবেলা হোক বা সন্ধ্যাবেলা টোটোর ভিড়ে যানজট অনিবার্য। নর্দমার উপর কংক্রিটের স্ল্যাব ফেলে অটো এবং রিকশার স্ট্যান্ড করে দিয়েছে নৈহাটি পুরসভা। কিন্তু টোটোকে বাগে আনতে পারেনি। কাগজে কলমে নৈহাটিতে টোটো চলে ২৬৫টি। কিন্তু বাস্তবটা জানলে চোখ কপালে উঠবে বলে জানান নৈহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক চট্টোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘টোটো বড় অবাধ্য। কোনও নিয়ম শৃঙ্খলা নেই। নম্বরের বালাই নেই বলে যখন যেখানে খুশি চলছে। গোটা নৈহাটিতে এখন সাড়ে পাঁচশোর বেশি টোটো চলে। বেশিরভাগই অন্য জায়গার। স্ট্যান্ড করব যে সে উপায়ও নেই।’’ কারণ পুরসভার কোনও নিয়ন্ত্রণই নেই টোটো চালকদের উপর। টোটো নিয়ে পরিবহণ দফতরে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।