শারীরিক দূরত্ব ছাড়াই তৃণমূলের কর্মী বৈঠকে ভিড়। ভাঙড়ে। ছবি: সামসুল হুদা
ভাঙড়ের জমি কমিটির হাত ধরে গড়ে উঠেছিল পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলন। এ বার জমি কমিটির মধ্যে ভাঙন ধরাল তৃণমূল। রবিবার ভাঙড়ের পোলেরহাটে এক কর্মী বৈঠকে প্রায় ৩০০ জন জমি কমিটির সদস্য তৃণমূলে যোগদান করেছেন বলে দাবি তৃণমূলের। এ দিন ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যসভার সাংসদ শুভাশিস চক্রবর্তী, ভাঙড় ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি ওহিদুল ইসলাম, আরাবুল ইসলাম-সহ অন্যান্যরা।
এক সময় পোলেরহাট ২ পঞ্চায়েত এলাকার টোনা, খামারাইট, মাছিভাঙা সহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনে গর্জে উঠেছিলেন। তৃমূল নেতা আরাবুল ইসলাম, তাঁর ছেলে হাকিমুলের বিরুদ্ধে জমি কমিটির অভিযোগ ছিল ভুরি ভুরি। এ দিন সেই আরাবুল, হাকিমুলের হাত ধরেই জমি কমিটির ওই সব সদস্য তৃণমূলে যোগ দিলেন।
জমি কমিটির সদস্য হামিদুল লস্কর, রাজ্জাক বিশ্বাস, শাহ আলম বলেন, ‘‘ওরা জমি আন্দোলনের নামে সরকারি ক্ষতিপূরণের ১২ কোটি টাকা লুটতরাজ করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত গরিব মানুষ ক্ষতিপূরণ পাননি। সেই টাকা ওরা নিজেরা ভাগ করে নিয়েছে। এ সবের প্রতিবাদে এবং তৃণমূলের উন্নয়নে সামিল হতে তাই আমরা এই দলে যোগদান করলাম।’’
শুভাশিস বলেন, ‘‘আগামী বিধানসভা ভোটের আগে এই জেলাতে একটিও বিজেপি থাকবে না। যাঁরা ভুল বুঝে দল থেকে চলে গিয়েছিলেন, তাঁদের বুঝিয়ে আবার দলে ফিরিয়ে আনা হবে। অবিলম্বে দলের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে ফেলতে হবে।’’ আরাবুল বলেন, ‘‘এই এলাকায় জমি আন্দোলনের নামে জমি কমিটি লুটতরাজ করছে। মানুষ ভুল বুঝতে পারছেন। তাই তাঁরা আমাদের দলে ফিরে আসছেন।’’
অভিযোগ উড়িয়ে জমি কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মির্জা হাসান বলেন, ‘‘ওরা কুমিরের ছানার গল্প ফেঁদেছে। একজন ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়ে তাঁর পুত্রবধূকে না দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন। এই কারণে তাঁকে আমরা অনেক আগেই কমিটি থেকে সরিয়ে দিয়েছিলাম। আমাদের কোনও সক্রিয় সদস্য ওদের সঙ্গে যোগদান করেনি। তাই যদি হত, তা হলে ওরা এই এলাকায় মিটিং না করে অন্য পঞ্চায়েত এলাকায় গিয়ে করত না।’’
এ দিন কর্মী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় পোলেরহাট ১ পঞ্চায়েতের পোলেরহাট বাজারের একটি অনুষ্ঠান বাড়িতে। সেখানে শারীরিক দূরত্ব মানা হয়নি বলেই অভিযোগ। ছোট্ট ঘরের মধ্যে কয়েকশো মানুষ গাদাগাদি করে হাজির হয়েছিলেন। এ বিষয়ে পোলেরহাট ২ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হাকিমুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা এ দিনের বৈঠকে নির্দিষ্ট কিছু সংখ্যক মানুষকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। কিন্তু দলীয় কর্মীদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস, আবেগে বহু মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন। যে কারণে একটু সমস্যা তৈরি হয়েছে। তবে আমরা সভা ঘরে যাওয়ার আগে প্রত্যেকের হাত স্যানিটাইজ়ার দিয়ে পরিষ্কার করার ব্যবস্থা রেখেছিলাম।’’