বৃষ্টি মাথায় পথে পুলিশ, আশ্বস্ত মানুষ

সেই বহিরাগতদের সন্ধানেই এখন বিশেষ নজর পুলিশ-প্রশাসনের। শহরের মূল রাস্তাগুলিতে চলছে জোর তল্লাশি। টাকি রোড, ওল্ড সাতক্ষিরা রোড, ইটিন্ডা, ভ্যাবলা চৌমাথা, সংগ্রামপুরের রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বসিরহাট শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৭ ১৩:০৫
Share:

শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি, বৃষ্টি মাথায় পুলিশ-আধা সামরিক বাহিনীর মাইকে প্রচার, জায়গায় জায়গায় শান্তি মিছিল, বৈঠক— সব মিলিয়ে উত্তপ্ত বসিরহাটকে শান্ত করতে এখন কাজে লাগছে এই উদ্যোগই।

Advertisement

গোয়েন্দাদের একটি সূত্র জানাচ্ছে, গত সোমবার থেকে বসিরহাটে শুরু হওয়া গোলমালে মূল ইন্ধন জুগিয়েছিল সীমান্ত পেরিয়ে আসা দুষ্কৃতীরা। সেই সঙ্গে সীমান্তে নানা অবৈধ কারবারে জড়িত লোকজনেরও তাতে মদত ছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের নানা সূত্রে সেই তথ্যই ক্রমশ প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে। বাসিন্দারাও জানাচ্ছেন, গোলমালের সামনের সারিতে ছিল অপরিচিত মুখের সারি। যারা লাগাম ছাড়া সন্ত্রাস চালিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে।

সেই বহিরাগতদের সন্ধানেই এখন বিশেষ নজর পুলিশ-প্রশাসনের। শহরের মূল রাস্তাগুলিতে চলছে জোর তল্লাশি। টাকি রোড, ওল্ড সাতক্ষিরা রোড, ইটিন্ডা, ভ্যাবলা চৌমাথা, সংগ্রামপুরের রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। গোয়েন্দাদের কাছে খবর, সোমবার থেকে শুরু হওয়া গোলমালের সময়ে বসিরহাট, বাদুড়িয়া এবং স্বরূপনগরে একটি মোটর বাইক ও একটি গাড়িকে লাগাতার ঘুরতে দেখা গিয়েছে। ওই গাড়ি দু’টিতে যারা ছিল, তারা গোলমাল সংগঠিত করার চেষ্টা চালাচ্ছিল, গুজব ছড়াচ্ছিল বলেই অনুমান গোয়েন্দাদের।

Advertisement

মঙ্গলবার ছিল দিনভর বৃষ্টি। বৃষ্টি মাথায় নিয়েই বসিরহাট শহরের রাস্তায় রাস্তায় শান্তি বজায় রাখার বার্তা দিয়ে ঘুরতে দেখা গিয়েছে পুলিশ কর্তাদের। পাড়ার মোড়ে মোড়ে আধা সামরিক টহল চোখে পড়েছে।

নানা জায়গায় শান্তি মিছিল, রাখি বন্ধন চলছে। তৃণমূল নেতৃত্বকে পতাকা ছাড়াই সে সব কর্মসূচিতে নামতে দেখা গিয়েছে। ইটিন্ডা সীমান্তে নজরুল শিশু অ্যাকাডেমির প্রধান শিক্ষক তরিকুল মণ্ডলের উদ্যোগে শান্তি মিছিল বেরোয়। ছোট ছেলেমেয়েরা পথচলতি লোকজনের হাতে রাখি পরিয়ে দেয়। পাইকপাড়ার রাখি বন্ধন উৎসবে যোগ দেন অসিত মজুমদার, ইলিয়াস সর্দার, পরিমল মজুমদার, আবদুল কাদের-সহ বিভিন্ন দলের নেতারা। বসিরহাটের স্বরূপনগরে শান্তি-সভায় ছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক এটিএম আবদুল্লা রনি, বিবিপুর পঞ্চায়েতের প্রধান এসমতআরা বিবি। বক্তারা বলেন, ‘‘বহিরাগতদের আর গোলমাল পাকানোর সুযোগ দেবেন না।’’ বাদুড়িয়াতেও শান্তি বৈঠক হয়েছে। খোলাপোতায় বাচ্চারা রাখি পরায়। ছিলেন খোলাপোতা পঞ্চায়েতের প্রধান অপরেশ মুখোপাধ্যায়, সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, গোলাম মহিউদ্দিন, লক্ষ্মী বিশ্বাসরা। টাকি, দণ্ডিরহাট, আমতলা-সহ আরও কিছু জায়গায় শান্তি বৈঠক হয়েছে। সাদা পতাকা হাতে মিছিলও বের করেন স্থানীয় মানুষজন।

এ দিন ফের বসিরহাটে যাওয়ার চেষ্টা করেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। বারাসতের চঁাপাডালি মোড়ে তাঁকে আটকায় পুলিশ। অধীরবাবু বলেন, ‘‘বসিরহাটের পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিক হয়ে যায়, তা হলে আমাদের যেতে দেওয়া হচ্ছে না কেন?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement