রাসায়নিক রং নয়, নির্দেশ পুরসভার

দোল খেলার রঙে রাসায়নিক রাখা যাবে না। নির্দেশ জারি করেছে ভাটপাড়া পুরসভা। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের অন্যতম জনবহুল পুরসভা ভাটপাড়া বছর কয়েক আগেও এই শিল্পাঞ্চলের সবচেয়ে বেশি দূষণপ্রবণ এলাকা হিসাবে পরিচিত ছিল। নিকাশির বালাই ছিল না বললেই চলে।

Advertisement

বিতান ভট্টাচার্য

ভাটপাড়া শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৭ ০২:১৩
Share:

দোল খেলার রঙে রাসায়নিক রাখা যাবে না। নির্দেশ জারি করেছে ভাটপাড়া পুরসভা।

Advertisement

ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের অন্যতম জনবহুল পুরসভা ভাটপাড়া বছর কয়েক আগেও এই শিল্পাঞ্চলের সবচেয়ে বেশি দূষণপ্রবণ এলাকা হিসাবে পরিচিত ছিল। নিকাশির বালাই ছিল না বললেই চলে। তবে বছর কয়েক ধরে একটু একটু করে ছবিটা বদলেছে। ‘নির্মল পুরসভা’র তকমা পেয়েছে ভাটপাড়া।

ভাটপাড়ার বিধায়ক তথা পুরপ্রধান অর্জুন সিংহ পুরসভায় জরুরি বৈঠক ডেকে জানিয়েছেন, বাজারে কোনও রাসায়নিক রং, আবির বিক্রি করা চলবে না। নির্দেশ অমান্য করলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মোটা টাকা জরিমানা করা হবে। শুধু বিক্রি নয়। রাসায়নিক রং, আবির দিয়ে রং খেললেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভাটপাড়া পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের কাছেই নির্দেশ পৌঁছে গিয়েছে। অর্জুনবাবু বলেন, ‘‘ভেষজ রং এখন অনেক সহজলভ্য। তাহলে জেনেশুনে কেন ক্ষতিকারক জিনিস ব্যবহার করা হবে? দোল তো আনন্দের উৎসব। এই রাসায়নিক রং প্রতি বছর কত মানুষের ক্ষতি করে ভেবে দেখুন। তাই আর কাউকে রাসায়নিক রং নয়।’’

Advertisement

দোল মানেই ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে রঙ ও আবিরের ছড়াছড়ি। আর তা হল নানা রাসায়নিকের মিশেল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিজ্ঞতা, সেই রং চুলে লাগলে, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুতে হয়। কাঠ ও লোহায় যে প্রাইমার দেওয়া হয়, রঙে সেই রকমের আঠা বসিয়ে দোল খেলারও চল আছে এই শিল্পাঞ্চলে।

ক্যালেন্ডারে দোল এক দিনের হলেও শিল্পাঞ্চলে সাত দিন ধরে চলে ‘হোলি উৎসব’। আগে গর্ত খুঁড়ে গোবরের সঙ্গে রঙ মিশিয়ে জল ঢালা হতো। এখন গোবরের বদলে ব্যবহার করা হয় রাসায়নিক রং।

প্রতি বছর দোলের পরে সাধারণ হাসপাতাল এবং চোখের হাসপাতালগুলিতে রোগীদের ভিড় বেড়ে যায়। ব্যারাকপুরের তিনটি নামী বেসরকারি চোখের হাসপাতালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর তাদের তিনটি হাসপাতাল মিলিয়ে মোট ৭ হাজার ৮৫৩ জনের চিকিৎসা করা হয়েছে।

কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার সুবিকাশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘চর্মরোগ থেকে শুরু করে যে কোনও অসুখের বীজ হল এই ধরণের রাসায়নিক রং। ওই রং চোখে ঢুকলে অন্ধ হয়ে যাওয়ারও সম্ভবনা থাকে। উৎসবের আনন্দে ভেসে এই মারাত্মক ক্ষতির কথাই ভুলে যান অনেকে। সে দিক থেকে ভাটপাড়া পুরসভার এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement