বিধাননগর থেকে বনগাঁ, বাগুইআটি-দমদম থেকে ব্যারাকপুর, বসিরহাটের সব মানুষকেই নানা প্রয়োজনে আসতে হয় এখানে। এত গুরুত্বপূ্র্ণ এলাকা এবং রাস্তার প্রতিটি অংশ এত দিন ছিল হকারদের দখলে। ক্রমশ দখল হয়ে যাওয়া রাস্তার দু’পাশে চলত বাজার। সব কিছু পেরিয়ে কোনওমতে যাতায়াত করতে হতো উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের অফিস, জেলা আদালত, পুলিশকর্তার অফিস, বারাসত থানা, এমনকী স্কুল-কলেজে।
এলাকার হকারদের সরিয়ে এ বার সম্প্রসারণ হচ্ছে জেলা সদর বারাসতের সেই রাস্তা, কেএনসি রোড। রাস্তার পাশে বাজার এবং হকারদের সরানো হবে দু’টি নতুন ভবনে। জেলা প্রশাসন ও বারাসত পুরসভা সূত্রে খবর, গোটা কাজে খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা।
জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন, ‘‘গোটা জেলার মানুষকে প্রতিনিয়ত আসতে হয় এই এলাকায়। কিন্তু এক দিকে সরু রাস্তা, অন্য দিকে হকারদের জন্য যানজট লেগেই থাকে। এ বার হকারদের পুনর্বাসন দিয়ে রাস্তা চওড়া করা হবে। এ ব্যাপারে বারাসত পুরসভার সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে।’’ বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘বারাসতে দু’টি কর্মতীর্থ (সরকারি উদ্যোগে বাজার) তৈরি হয়েছে। হকারদের সেখানেই পুনর্বাসন দেওয়া হবে। হকার পুনর্বাসন এবং রাস্তা সম্প্রসারণ— দু’টি কাজই করবে পুরসভা। এ জন্য রাজ্য সরকারের কাছে ৫ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে।’’
যশোর রোডের ডাকবাংলো মোড়ের কাছে দক্ষিণপাড়া মোড় থেকে শুরু হয়েছে কেএনসি রোড। বিভিন্ন প্রশাসনিক অফিস ছুঁয়ে তা শেষ হয়েছে জেলাশাসকের অফিসের সামনে। সেই রাস্তাটিই এ বার চওড়া করার কাজ শুরু হচ্ছে। এখন সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বারাসত স্টেশনের কাছে হরিতলা মোড়ে। সেখান থেকে কেএনসি রোডটি জেলা আদালত হয়ে চলে গিয়েছে জেলা প্রশাসনের অফিস পর্যন্ত। এই পথেই আসামিদের আদালতে নিয়ে যায় পুলিশ। প্রশাসনিক ভবন ও থানার কাজকর্ম ছাড়াও বিভিন্ন স্কুল ও বারাসত গভর্নমেন্ট কলেজের ছাত্রছাত্রীরাও এ পথ ধরে যাতায়াত করেন। পাশাপাশি এই রাস্তায় রয়েছে একাধিক ব্যাঙ্ক, বেসরকারি অফিস এবং সিনেমা হলও। এমন ব্যস্ত একটি রাস্তার উপরেই চলে বারাসতের সবচেয়ে বড় বাজার। সেখানে হয় পাইকারি কেনাবেচা। রাস্তার অর্ধেকই দখল করেছে বিভিন্ন দোকান। শুধু তাই নয়, এই রাস্তাটির উপরেই জেলার বিভিন্ন হাট থেকে ফড়েরা এসে মালপত্র, সব্জি বিক্রি করেন। সব কিছু এড়িয়ে বিভিন্ন প্রশাসনিক ভবনে যাতায়াত করাই কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ে।
পুর-চেয়ারম্যান সুনীলবাবু আরও বলেন, ‘‘এই সব হকার এবং বাজার সরিয়ে দেওয়া হবে। কর্মতীর্থ করার জন্য আমরা ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের থেকে ৫ কোটি টাকা পেয়েছি। ওই ভবনে সব হকারদের সরানো হবে।’’