দুই সম্প্রদায়ের বড় উৎসব। সেই উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও আঁটোসাঁটো করেছে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা পুলিশ-প্রশাসন। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক জঙ্গি হানার ঘটনার প্রেক্ষিতে এ বার বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, সীমান্তবর্তী থানাগুলির পক্ষ থেকে নজরদারি ও টহল জোরদার করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিএসএফের সঙ্গে সব সময়ে যোগাযোগ রেখে চলা হচ্ছে।’’ বিএসএফের পক্ষ থেকে সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। জওয়ানদের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। সন্দেহজনক মনে হলেই তল্লাশি করা হচ্ছে।
বনগাঁ মহকুমার পেট্রাপোল সীমান্তে অন্য দিনের তুলনায় নিরাপত্তা বেড়েছে। নো ম্যানস ল্যান্ড বা তার আশপাশে কাউকে ঘেঁষতে দেওয়া হচ্ছে না। বাণিজ্যের জন্য যাঁরা দু’দেশের মধ্যে যাতায়াত করেন, তাঁদের খুব প্রয়োজন না পড়লে এই সব দিনে যাতায়াত কমাতে বলা হয়েছে। বিএসএফ কর্তারা সীমান্তে এসে আলোচনা করছেন। যশোর রোডে বাস-অটো থামিয়ে চলছে তল্লাশি। জেলা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, ইদ ও রথের জন্য থানাগুলিতে পুলিশ কর্মীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ওসি- আইসিদের বলা হয়েছে, এলাকায় আর বেশি করে নিজেরাও যেন টহল দেন।
নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করা হয়েছে বসিরহাট মহকুমাতেও।
সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় ১৪৪ ধারা জারির পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তির আলো, নাইট ভিশান ক্যামেরা এবং সিসিটিভি লাগানো হয়েছে। কেউ যাতে অবৈধ ভাবে এ পাড়ে আসতে না পারে, সে জন্য কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই বসিরহাট জুড়ে তিন ব্যাটেলিয়ান র্যাফ, শতাধিক পুলিশ এবং হাজারের উপরে সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হয়েছে। সীমান্ত এলাকার নদীতে নৌকা চলাচলের উপরেও কড়া নজর রাখা হচ্ছে।
স্বরূপনগরের তেঁতুলিয়া, বসিরহাটের ইছামতী এবং হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জের মধ্যে কাঠাখালি সেতুর উপরে সাদা পোশাকে পুলিশি পাহারা শুরু হয়েছে। এ ছাড়াও আছে পুলিশের টহলদারি মোটর বাইক বাহিনী।
শান্তি ও আনন্দের পরিবেশে যাতে কোনও ব্যাঘাত না ঘটে, সে জন্য পুলিশ-প্রশাসনের বাড়তি তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। মহকুমার সমস্ত ধর্মীয় স্থানের পাশে পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন শুরু করেছে। স্থানীয় টিভি চ্যানেলে পুলিশের পক্ষে বিজ্ঞাপন দিয়ে অপরিচিত মানুষ সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন থাকার জন্য বার বার অনুরোধ করা হচ্ছে।
বসিরহাটের মহকুমাশাসক নীতেশ ঢালি বলেন, ‘‘সীমান্ত এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। মহকুমার প্রতিটি থানার আধিকারিকদের সতর্ক করে বলা হয়েছে, কোনও সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে যেন জানানো হয়। দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য প্রতিটি থানায় একজন করে ম্যাজিস্ট্রেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’
বাংলাদেশের জঙ্গি হামলার পরিপেক্ষিতে ইদ এবং রথযাত্রা উপলক্ষে ক্যানিং মহকুমায় বিভিন্ন সর্তকতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, রথ এবং ইদের দিনে ক্যানিং মহকুমার বিভিন্ন থানার ৫৫ জন পুলিশ অফিসার, ২৫০ জন কনস্টেবল এবং ২২ জন মহিলা কনস্টেবলকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাদের সহযোগিতা করবে ভিলেজ পুলিশ এবং সিভিক ভলান্টিয়ার্স। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে থাকবে নাকা তল্লাশি। সাদা পোশাকের পুলিশও টহল দেবে রাস্তায়। ক্যানিংয়ের এসডিপিও সৌম্য রায় বলেন, ‘‘আমরা চাই মানুষ উৎসবের আনন্দে মেতে উঠুক। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’