জখম-উদ্ধারকারী: এই পাঁচ যুবকই পালন করেছেন নৈতিক দায়িত্ব। নিজস্ব চিত্র
সন্ধ্যায় ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি হচ্ছে। পথচলতি মানুষ যে যাঁর গন্তব্যে যেতে ব্যস্ত। বৃহস্পতিবার রাতে ক্যানিংয়ের চাঁদখালি স্টেশনের কাছে রেললাইনের ধারে জখম অবস্থায় পড়ে রয়েছেন বছর পঞ্চাশের এক অজ্ঞাতপরিচয় মহিলা। মাথা ফেটে বৃষ্টির জলে রক্ত ভেসে যাচ্ছে। সে দিকে কারও কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। কেউ কেউ তাঁকে মৃত ভেবে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছেন। এর মধ্যেই কেউ এক জন একটা প্লাস্টিক জোগাড় করে মহিলাকে চাপা দিলেন। কিন্তু কেউ তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হলেন না।
এরই মধ্যে লোকমুখে এই মহিলার কথা জানতে পারেন কুলতলির পাঁচ যুবক। বিদ্যুৎ নস্কর, বিকাশ কয়াল, সুশান্ত হালদার, নিতাই মণ্ডল, অভিষেক রায় নামে ওই পাঁচজন সেখানে ছুটে যান। তাঁরা দেখেন, মহিলার তখনও বেঁচে আছেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে তুলে নিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার পথ হেঁটে এসে একটি রিকশা ভাড়া করেন। সেখান তাঁকে ওই যুবকেরা ক্যানিং হাসপাতালে নিয়ে যান।
হাসপাতালে পৌঁছে নিতাইরা তাঁদের দায়িত্ব শেষ করেননি। চিকিৎসারও ব্যবস্থা করেন। এর মধ্যে খবর পেয়ে চলে আসে ক্যানিং থানার পুলিশ। অচেতন ওই মহিলার জ্ঞান না ফেরা পর্যন্ত রাত পর্যন্ত তাঁরা হাসপাতালেই ছিলেন।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে, ওই মহিলা কোনও ভাবে ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাঁর মাথা ফেটে যায়। ডান হাতটিও ভেঙে গিয়েছে। ওই যুবকদের কথায়, ‘‘আমরা শুধু আমাদের কাজটুকু করেছি।’’