এই বাসটিই পিষে দেয় অপর বাসচালককে। সোমবার। নিজস্ব চিত্র।
বচসা চলাকালীন এক বাসচালককে চাপা দিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল আর এক বাসচালকের বিরুদ্ধে।
সোমবার বিকেলে বারাসতের ময়না চেকপোস্টের কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে এই ঘটনা ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত বাসচালকের নাম কমল সরকার (৪৪)। তাঁর বাড়ি বহরমপুরে। কলকাতা-বহরমপুর রুটে বাস চালাতেন তিনি। এই ঘটনায় অভিযুক্ত চালককে খুঁজছে পুলিশ। দু’টি বাসই হেফাজতে নিয়েছে বারাসত থানা। যদিও রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। নিহত চালকের পরিবারের লোকজনকে খবর দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বারাসত পুলিশ জেলার কর্তারা।
পুলিশ জানায়, একটি বাস বহরমপুর ও অন্যটি করিমপুরের দিকে যাচ্ছিল। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, দু’টি বাসের চালকের মধ্যে প্রথমে বচসা বাধে, যা গড়ায় হাতাহাতিতে। তার পরেই ওই ঘটনা। কমল অন্য বাসের হাতল ধরে ঝুলে পড়েছিলেন। তখন তাঁর উপর দিয়েই বাস চালিয়ে দেন অভিযুক্ত চালক। এই বচসা এবং হাতাহাতির পিছনে দু’টি বাসের রেষারেষিও থাকতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা পুলিশের।
স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, বহরমপুরগামী বাসটি বারাসতের ময়না চেকপোস্টের কাছে এসে খারাপ হয়ে যায়। সেই বাসেরই চালক ছিলেন কমল। চাকার হাওয়া বেরিয়ে যাওয়ায় তিনি রাস্তার ধারে দাঁড় করিয়ে দেন বাসটিকে। চালকের পাশাপাশি নেমে আসেন যাত্রীরাও। ওই বাসের পিছনেই ছিল করিমপুরগামী বাসটি।
যদিও স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, বহরমপুরগামী বাসটির চাকা মেরামতির কাজ চলছিল। সেই সময়ে অন্য দূরপাল্লার বাসটি এসে দাঁড়ায় সেটির সামনে। বহরমপুরের বাসে থাকা করিমপুরগামী যাত্রীদের অনেকেই ওই বাসটিতে উঠে পড়েন। যা নিয়ে দুই বাসচালকের মধ্যে বচসা বেধে যায়। কেন করিমপুরগামী বাসের চালক তাঁর গাড়িতে অন্য বাসের যাত্রীদের তুলেছেন, তা নিয়ে বহরমপুরগামী বাসের চালক তাঁর সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। সেই বচসা গড়ায় মারামারিতে। কিন্তু এর পরিণতিতে এক চালক যে অন্য চালককে পিষে দিয়ে চলে যেতে পারেন, সেটা ভেবেই অবাক হচ্ছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
অভিযোগ, গোলমাল চলাকালীন আচমকাই করিমপুর রুটের বাসটির চালক ইঞ্জিন চালু করে এগিয়ে যেতে শুরু করেন। সেই সময়ে বহরমপুরগামী বাসের চালক কমল করিমপুরের বাসটির হাতল ধরেছিলেন। আচমকা ওই বাসটি চলতে শুরু করায় তিনি সেটির চাকার নীচে চাপা পড়ে যান। কিন্তু করিমপুরের বাসের চালক কমলকে চাপা দিয়ে তাঁর উপর দিয়েই বাস নিয়ে চলে যান বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার পরেই রাস্তায় ভিড় জমে যায়। খবর পেয়ে বারাসত থানার পুলিশ ময়না চেকপোস্টের কাছে পৌঁছে ভিড় সরিয়ে কমলের দেহ উদ্ধার করে। পুলিশ জানায়, ঘটনার পরেই করিমপুরগামী বাসের চালক এবং খালাসি রাস্তায় বাস রেখে চম্পট দেন।