মায়ের সঙ্গে দীপ। ছবি: সুজিত দুয়ারি।
সকাল ৯টা থেকে বাড়িতে মা ও দিদির সঙ্গে টিভির পর্দায় চোখ রাখছিল হাবড়া প্রফুল্লনগর বিদ্যামন্দির স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী দীপ গায়েন।
কিছুক্ষণের মধ্যে শুরু হল পর্ষদের সাংবাদিক সম্মেলন। পর্ষদ সভাপতির মুখে হঠাৎই ‘দীপ গায়েন’ নামটি শুনে ঘরভর্তি সকলে চুপ। মুহূর্তের নীরবতা কাটিয়ে মা চন্দনা গায়েনকে জড়িয়ে ধরে আনন্দে কেঁদে ফেলে দীপ। মা-দিদির চোখেও তখন আনন্দাশ্রু। দীপ পেয়েছে ৬৮৬ নম্বর। অঙ্ক, জীবনবিজ্ঞান, ভৌতবিজ্ঞানে পুরো ১০০।
এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় মেধা তালিকায় চতুর্থ স্থান পেয়েছে হাবড়ার প্রফুল্লনগর এলাকার বাসিন্দা দীপ। খবর জানাজানি হতেই পাড়া-প্রতিবেশী, স্কুল শিক্ষকেরা খুশিতে মেতে উঠলেন। পরিচিত ও আত্মীয়-স্বজনেরা বাড়িতে এসে অভিনন্দন জানিয়ে যাচ্ছেন। মোবাইল ফোন ক্রমাগত বেজে চলেছে। বাড়িতে এবং স্কুলে শুরু হয়েছে মিষ্টি বিতরণ।
বাবা রামকৃষ্ণ বাগনান স্টেট জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক। এ দিন বাড়ি ছিলেন না তিনি। ফল বেরোনোর পরে ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা হয় তাঁর। দীপের কথায়, ‘‘ছোটবেলা থেকেই আমার স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়া। সুযোগ পেলে নিউরোলজি ও জেনেটিক্স নিয়ে গবেষণা করার ইচ্ছেও রয়েছে।’’
প্রফুল্লনগর বিদ্যামন্দির স্কুলে দীপ পঞ্চম শ্রেণি থেকেই ক্লাসে প্রথম হয়েছে এসেছে। টেস্টে সে পেয়েছিল ৬৭০ নম্বর। মাধ্যমিকে ৬৮০-র মতো নম্বর পাবে বলে আশা ছিল। তবে মেধা তালিকায় প্রথম পাঁচের মধ্যে থাকতে পারবে, এমনটা ভাবতে পারেনি।
দীপকে নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক সত্যজিৎ বিশ্বাস-সহ অন্য শিক্ষকেরা অবশ্য আশাবাদী ছিলেন। সত্যজিৎবাবুর কথায়, ‘‘মেধা তালিকায় তিনের মধ্যে দীপ থাকবে, এমনই আশা ছিল।’’ প্রধান শিক্ষক আরও জানান, স্কুলের তরফে শিক্ষকেরা দীপকে সব সময়ে সাহায্য করেছেন। পড়াশোনা-সংক্রান্ত বিষয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার তিন দিন আগেও দীপ স্কুলে এসেছিল। দীপ নিজেও তার ভাল ফলের জন্য স্কুলের শিক্ষকদের কাছে কৃতজ্ঞ। দীপের কথায়, ‘‘ওঁরা আমাকে সব সময়ে সাহায্য করেছেন। সে কারণে গৃহশিক্ষকের বিশেষ প্রয়োজন হয়নি।’’