কৈখালিতে উদ্ধার প্রাচীন বুদ্ধমূর্তি, ধৃত ১৮
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা
ধ্যানমগ্ন বুদ্ধ। দৈর্ঘ্যে প্রস্থে কম হলেও ওজন প্রায় সাড়ে ছয় কেজি। কষ্টিপাথরের বহুমূল্য এই মূর্তিটি কম করেও কয়েকশো বছরের পুরনো বলে অনুমান বিশেষজ্ঞদের। শুক্রবার কৈখালির একটি অফিস থেকে ওই প্রাচীন মূর্তির পাশাপাশি উদ্ধার হয়েছে প্রাচীন মুদ্রা ও বিভিন্ন প্রত্ন-সামগ্রীর ছবিও। বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ জানায়, কৈখালিতে বেআইনি ভাবে এই প্রত্নসামগ্রী বিক্রির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে ১৮ জন। পুলিশের অনুমান, এই চক্রটি দেশের বহুমূল্য প্রত্ন-সামগ্রী চোরাপথে দেশ-বিদেশে বিক্রি করত। পুলিশ জানায়, শুক্রবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বিধাননগর কমিশনারেটের একটি দল কৈখালির মণ্ডলগাতির ওই অফিসে হানা দেয়। সেখানেই উদ্ধার হয় বুদ্ধ মূর্তিটি। হাতেনাতে ধরা পড়ে এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত অভিযুক্তেরা। পুলিশ জানায়, এ ছাড়াও যে সব মূর্তি ও প্রত্ন-সামগ্রী উদ্ধার হয়, মিলেছে সেগুলি কেনার চুক্তিপত্রও। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ২০টি মোবাইল ও একটি ল্যাপটও। বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান কঙ্করীপ্রসাদ বারুই বলেন, “যে দলটি গ্রেফতার হয়েছে, তাদের কেউ অন্ধ্রপ্রদেশের, কেউ ওড়িশার, কেউ বা অসমের বাসিন্দা। রামকৃষ্ণ নামে দক্ষিণভারতীয় এক যুবকের নেতৃত্বেই এই কাজ চলছিল বলে জানা গিয়েছে।” ধৃতেরা পুলিশকে জানায়, বুদ্ধমূর্তিটি রাজস্থানের কোনও রাজবাড়ির। তারা সেটির দাম ধার্য করেছিল ৯০ লক্ষ টাকা। পুলিশ জেনেছে, মূর্তিটি রাজস্থান থেকে হায়দরাবাদ হয়ে কলকাতায় আসে। তবে সেটি ঠিক কী ধাতুর তৈরি ও কত পুরনো, তা সঠিক ভাবে জানতে পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দাপ্রধান। বিধাননগর কমিশনারেট সূত্রে খবর, কলকাতা জাদুঘর থেকে এমন কোনও মূর্তি খোয়া গিয়েছে কি না, তা-ও পরীক্ষা করে দেখা হবে।
নিজেই নিজের বিয়ে আটকাল কিশোরী
নিজস্ব সংবাদদাতা • বাগদা
বহু বার বিয়ে করব না বলেও কোনও লাভ হয়নি বাড়িতে। কান্নাকাটি করে বাবাকে রাজি করাতে পারলেও মা একেবারেই অনড় ছিলেন। চেয়েছিলেন, দ্রুত মেয়ের বিয়ে দিতে। বিয়েতে বেঁকে বসায় মেয়েটিকে দিনের পর দিন মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। তবু নাছোরবান্দা মেয়ে। শেষমেশ উপায়ান্তর না দেখে পুলিশের দ্বারস্থ হয় মেয়েটি। ‘পুলিশ কাকুরা’ই তার বাড়িতে গিয়ে বিয়ে আটকেছেন। বাগদার বেয়ারা গ্রামের মেয়েটি এ বারই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। আরও পড়াশোনা করতে চায়। কাজকর্ম করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়। কিন্তু সে সবে সায় নেই পরিবারের। রেজাল্ট বেরনোর আগেই পাত্র দেখার পর্ব শেষ করে ফেলেছিলেন তার বাবা-মা। শুধু বিয়ের দিনটুকু ঠিক করাই বাকি ছিল। পাত্র ওই এলাকারই আইসমালি গ্রামে মেয়ের মায়ের পরিচিত এক নাবালক। বছর ষোলো বয়স। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি থেকে পালিয়ে পিসির বাড়ি চলে যায় মেয়েটি। সেখানে সব ঘটনা খুলে বলে। তাঁরা মেয়েটির সিদ্ধান্ত সমর্থন করেন। সম্পর্কিত এক দাদুর সঙ্গে থানায় হাজির হয় মেয়েটি। বলে, তাকে জোর করে বিয়ে দিতে চাইছে বাবা-মা। পুলিশ কাকুরা কিছু করুন। মেয়েটির আর্জি শুনে পুলিশ কর্তারাও নড়ে বসেন। যোগাযোগ করা হয় চাইল্ড লাইনের সঙ্গে। তাদের সদস্যদের নিয়ে মেয়েটির বাড়িতে হাজির হয় পুলিশ। মেয়ের মাকে থানায় নিয়ে আসা হয়। এই বয়সে বিয়ে দিলে কী ক্ষতি হতে পারে, সে কথা বোঝান চাইল্ড লাইনের সদস্যেরা। নাবালিকার বিয়ে যে আইননানুগ ভাবে অপরাধ, সে কথাও বলা হয়। শেষমেশ বিয়ে বন্ধে রাজি হন মেয়ের মা। পুলিশকে মুচলেকা দিয়ে জানান, সঠিক বয়সের আগে মেয়ের বিয়ে দেবেন না। মা-মেয়েকে কাউন্সিলিংয়ের জন্য আপাতত চাইল্ড লাইনে পাঠানো হয়েছে।
হাবরা কাপে জয়ী আজাদ সঙ্ঘ
নিজস্ব সংবাদদাতা • হাবরা
হাবরা থানার পুলিশের উদ্যোগে আয়োজিত হাবরা কাপ ফুটবল প্রতিযোগিতায় জয়ী হল স্থানীয় হাড়িয়া এলাকার আজাদ সঙ্ঘ। দিন কয়েক আগে স্থানীয় কইপুকুর মিলন সঙ্ঘের মাঠে আয়োজিত ফাইনালে তারা পরাজিত করে বেড়গুম-২ পঞ্চায়েতকে। খেলার একমাত্র গোলটি হয় প্রথমার্ধ্বের ২৫ মিনিটের মাথায়। আজাদ সঙ্ঘের পক্ষে গোলটি করেন সৌদীপ ঘোষ। ফাইনালের সেরা খেলোয়াড় হন বেড়গুমের প্রবীর সর্দার। দু’টি দলই বেশ কিছু গোলের সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু ফরওয়ার্ড দুর্বল হওয়ায় গোল বাড়েনি। হাবরা থানা এলাকার ১৬টি দলকে নিয়ে নকআউট ভিত্তিতে প্রতিযোগিতাটি শুরু হয়েছিল ২৬ ফেব্রুয়ারি। ফাইনাল খেলা দেখতে উপস্থিত হয়েছিলেন অতীত দিনের নামকরা ফুটবলার গৌতম সরকার। খেলা শুরুর আগে তার সঙ্গে দু’দলের খেলোয়ারদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, “গ্রাম বাংলা থেকে প্রতিভা তুলে আনার ক্ষেত্রে এই ধরনে প্রতিযোগিতা বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। বাংলার ফুটবল না এগোলে দেশের ফুটবলেরও অগ্রগতি হবে না।” প্রতিযোগিতায় উপস্থিত ছিলেন হাবরা পুরসভার চেয়ারম্যান নীলিমেশ দাস, থানার আইসি মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায়, হাবরা-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রত্না ঘোষ প্রমুখ।
পাশে আছে বন্ধুরা
অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য • মধ্যমগ্রামে
মধ্যমগ্রামের পূর্বাচলের বাসিন্দা পিয়ালী সাহার লিভার প্রতিস্থাপনের দরকার। কিন্তু স্কটিশচার্চ কলেজের স্নাতকোত্তরের পাঠরত পিয়ালীর পরিবার তার খরচ জোগাতে পারছিল না। খবর পেয়ে পাশে দাঁড়ালো বন্ধুরা। সোশ্যাল মিডিয়া, এসএমএস-এর মাধ্যমে একজোট হন ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও কলেজের পড়ুয়ারা। রাতারাতি গড়ে উঠল ‘প্রয়াস’ নামে এক সংগঠন। চিকিৎসার খরচ তুলতে কলেজে এবং রাস্তায় গান গেয়ে অনুষ্ঠানের টিকিট বিক্রি করেন তাঁরা। সম্প্রতি বারাসতের রবীন্দ্রভবনে অনুষ্ঠান করে পিয়ালীর পরিবারের হাতে তিন লক্ষ টাকা তুলে দেওয়া হয়েছে। ‘প্রয়াসে’র পক্ষে ‘ফোক স্টুডিও বং’ নামে ব্যান্ডের হয়ে গাইলেন কৌস্তভ, অলিভ, কৌশিক, তন্ময় এবং নীলাংশুকরা। এর পর গাইলেন চন্দ্রবিন্দুর উপল, শহরের অনিন্দ্য, লক্ষ্মীছাড়ার গৌরব (গাবু), ভটা বাউল-সহ অনেকে। ইন্দ্রজিৎ দে এবং মিসিং লিঙ্কের সুরে মেতেছিলেন শ্রোতারা। অনুষ্ঠান শেষে আরজিকর এর ছাত্র কৌস্তভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পরীক্ষার জন্য অনুষ্ঠান করে টাকা সংগ্রহে সমস্যা হবে ভেবেছিলাম। কিন্তু এত মানুষ এগিয়ে এসেছেন যে আমরা কৃতজ্ঞ।”