অমিত ঘোষ
ভাড়াবাড়ির ঘর থেকে যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল দক্ষিণ হাবড়ায়। দফায় দফায় মারপিট ও বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম অমিত ঘোষ (২৮)। স্ত্রীর ওড়না গলায় পেঁচিয়ে পাখার সঙ্গে তাঁর দেহ ঝুলে ছিল। অমিত কলকাতায় একটি সংস্থায় রাতপাহারার কাজ করতেন। স্ত্রীর সঙ্গে যুবকের বাবা-মায়ের অশান্তির জেরে অমিত বাড়ি ছেড়ে দক্ষিণ হাবড়ায় বাড়ি ভাড়া নেন। প্রায় আড়াই বছর ধরে স্ত্রীকে নিয়ে সেখানেই থাকতেন।
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার অমিতের স্ত্রী অন্য এক যুবকের সঙ্গে পালিয়ে যান। স্ত্রী অমিতকে ফোন করে জানিয়েছিলেন, অন্য এক জনকে বিয়ে করেছেন। তারপর থেকে অমিত মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন।
সোমবার অমিত নিজের মেয়েকে নিজেদের আদি বাড়ি, হাবড়ার রাঘবপুরে বাবা-মায়ের কাছে রেখে আসেন। মঙ্গলবার দুপুরে অমিতের বাবা ছেলের খোঁজ নিতে গিয়ে দেখেন, অমিতের মোবাইল ফোন বন্ধ। ভাড়া বাড়ির মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। বাড়ির মালিক অমিতের ঘরে গিয়ে দেখেন, পাখার সঙ্গে দেহ ঝুলছে।
খবর পেয়ে অমিতের বাড়ির লোকজন এসে দেহটি নামিয়ে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, আগেই মৃত্যু হয়েছে।
এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই রাঘবপুর এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়। ওই এলাকাতেই মৃতের শ্বশুরবাড়ি ও বাপের বাড়ি। দুই পরিবারের মধ্যে মারপিট বেধে যায়।
বিকেলে খবর পেয়ে হাবড়া থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় ৮ জনকে আটক করা হয়েছে। অমিতের বাবা পরিতোষ ঘোষ জানান, বছর পাঁচেক আগে প্রতিবেশী এক তরুণীকে ভালবেসে অমিত বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে আলাদা থাকার জন্য তাঁদের সঙ্গে ঝামেলা শুরু করেন তরুণী। সে কারণেই ভাড়া বাড়িতে স্ত্রী ও সাড়ে তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে থাকা শুরু করেছিলেন অমিত। শনিবার স্ত্রী পাশের এলাকারই অন্য এক যুবকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছেন। তাই পথের কাঁটা অমিতকে সরাতেই চক্রান্ত করে শুক্লা ও তাঁর পরিবারের লোকেরা ছেলেকে ফাঁস দিয়ে মেরে ফেলেছে। দোষীদের কঠোর শাস্তি হোক, দাবি সদ্য পুত্রহারা পরিতোষের।
এ দিকে, সন্ধের পরে ফের ওই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। অমিতের স্ত্রীর বাড়িতে ভাঙচুর চালান এলাকার বাসিন্দারা। ঘটনাস্থলে রয়েছে পুলিশবাহিনী।