এই ঘরেই মারা যান পাপিয়া পাল।(ডানদিকে) পাপিয়া পাল। নিজস্ব চিত্র।
এক বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু হল কাঁকিনাড়ার পানপুরে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম পাপিয়া পাল (২৮)। বুধবার সকালে পাপিয়াদেবীর শোওয়ার ঘর থেকে তাঁর অগ্নিদগ্ধ দেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর পাপিয়াদেবীর শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। পাপিয়াদেবীকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা। আগুন ধরানোর চেষ্টা হয়। জগদ্দল থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মৃতার বাপের বাড়ির লোকজন শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। মৃতার স্বামী মিন্টু পালকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও বাকিরা পলাতক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর আটেক আগে পাপিয়াদেবীর সঙ্গে মিন্টু পালের বিয়ে হয়েছিল। মিন্টুবাবুদের মূর্তি তৈরি করার পারিবারিক ব্যবসা রয়েছে। এ ছাড়াও, তাঁর নিজের দশকর্মার দোকান এবং লাড্ডু ও গজা তৈরির কারখানা রয়েছে। বুধবার সকালে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন পাপিয়াদেবী। বাজার করে বাড়ি ফেরেন। সকাল ৯টা নাগাদ ওই বধূর ঘরের ভেতর থেকে পোড়া গন্ধ এবং ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। তখন স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন ঘরে ঢুকে পাপিয়াদেবীকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন। অভিযোগ, তখন ওই ঘরে ইট এবং শিলনোড়া পড়ে ছিল। তাঁকে ব্যারাকপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, একই বাড়িতে থাকলেও শ্বশুর-শাশুড়ি ও জায়ের সঙ্গে ওই বধূর সম্পর্ক ভাল ছিল না। পাপিয়াদেবী এবং তাঁর স্বামী আলাদা খেতেন। পাপিয়াদেবীর কাকা শঙ্কর ঘোষ ওই এলাকার বাসিন্দা। ভাইঝির মৃত্যুর খবর পেয়ে সপরিবারে মিন্টুবাবুর বাড়িতে যান তিনি। তবে তখন ওই বাড়িতে কেউ ছিল না। মিন্টুবাবুকে লাড্ডু কারখানা থেকে খুঁজে বের করা হয়। অভিযোগ, স্ত্রী’র মৃত্যুর কারণ নিয়ে কিছুই বলতে পারেননি মিন্টুবাবু। শঙ্করবাবুর অভিযোগ, ‘‘ভাইঝিকে খুন করা হয়েছে। তা না হলে বাড়ির সকলে পালাবে কেন?’’
ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। দেহটি ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে।