কর্তব্য: হাসপাতালে অমৃতা। ছবি: সুজিত দুয়ারি।
এক যুবক বেশ কিছুক্ষণ ধরে পড়ে রয়েছেন। কখনও বমি করছেন, কখনও আবার এদিক-ওদিক ছুটোছুটি করছেন। মাঝে মধ্যে শুয়ে ছটফটও করছেন। শনিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে বনগাঁ-শিয়ালদহ শাখার গুমা স্টেশনের ১ প্ল্যাটফর্ম চত্বরে।
কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও ওই যুবকের আশেপাশে দেখা যায়নি যাত্রীদের। কেউ তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেননি। স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন অমৃতা মুখোপাধ্যায়। তিনি হাবড়ার পৃথিবা রাধারানি গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষিকা। ঘটনাটি চোখে পড়ে তাঁর। তিনিই অন্যদের ডেকে ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে কেউ যেতে রাজি হয়নি। সে সময়ে এক ব্যক্তি এসে উল্টে অসুস্থ যুবককে বকাবকি শুরু করেন। শিক্ষিকা ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে যাওয়ার কথা বলেন। কিন্তু তিনি পুলিশি ঝামেলা হবে বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। এরপরেই অমিত বিশ্বাস নামে এক ডাব ব্যবসায়ী এগিয়ে আসেন অমৃতাকে সাহায্য করতে।
দু’জনে মিলে ওই যুবককে সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে হাবড়া স্টেট জেনারেলে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেন তাঁরা। খবর পেয়ে হাসপাতালে যায় জিআরপি। জিআরপি সূত্রে জানা গিয়েছে, অসুস্থ যুবকের নাম বিশ্বদেব চক্রবর্তী। বাড়ি গাইঘাটায়। স্ত্রীর সঙ্গে সাংসারিক অশান্তির জেরে তিনি কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিলেন। এখন হাবড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে জিআরপি।
বিশ্বদেব বলেন, ‘‘যাঁরা আমাকে স্টেশন থেকে তুলে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন, তাঁদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’’
অমৃতার কথায়, ‘‘একজন মানুষ চোখের সামনে মারা যাচ্ছে দেখে মনে হয়েছিল ওঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে বাঁচাতে পারব। সেটাই করেছি। মানুষ হিসাবে এটা আমার কর্তব্য মনে করি।’’