উইম্বলডন ফাইনালে ওঠার পথে ইউজেনি বুশার্ড। ছবি: রয়টার্স
শনিবার চ্যাম্পিয়নশিপ ট্রফি তাঁর হাতে শেষমেশ উঠুক বা না-উঠুক, ইউজেনি বুশার্ডের নতুন নাম দিয়ে ফেলেছে উইম্বলডন-জনতা! ‘প্রিন্সেস জেনি’! তবে ঠিক দিতে হয়নি। জুনিয়র উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মাত্র দু’বছরের মাথায় উইম্বলডন ‘লেডিজ ফাইনাল’ ওঠা ইউজেনি আর তাঁর ছ’মিনিট আগে জন্মানো যমজ দিদি বিয়াট্রিসের নামই যে প্রিন্স অ্যান্ড্রু-র দুই মেয়ের নামে নাম মিলিয়ে। ইউজেনি আর বিয়াট্রিস। ‘প্রিন্সেস জেনি’র তাই বলা যায়, এ দিন টেনিস-সাম্রাজ্যে অভিষেক ঘটল!
সিমোনা হালেপ গত মাসেই ফরাসি ওপেনে ফাইনালিস্ট। মরসুমের সবচেয়ে ধারাবাহিক গ্র্যান্ড স্ল্যাম পারফর্মার। ১৫টা ম্যাচ জিতেছেন। সেই তৃতীয় বাছাই সেন্টার কোর্টে কার্যত উড়ে গেলেন সেমিফাইনালে, তাঁর চেয়ে র্যাঙ্কিংয়ে দশ ধাপ পিছনে থাকা বুশার্ডের কাছে। ৭-৬ (৭-৫), ৬-২। জন ম্যাকেনরো বলছেন, “এক সত্যিকারের চ্যাম্পিয়নের আবির্ভাব হল বলে!” ইয়ানা নোভোত্নার কথায়, “কুড়ি বছরেই এত সংগঠিত খেলা ওর! সে রকমই আগ্রাসী। আর ইস্পাতের মতো কঠিন স্নায়ু!” ট্রেসি অস্টিনের শংসাপত্র, “একটা পয়েন্ট পিছিয়ে পড়লেই পরের শটটাই অসাধারণ উইনার মেরে সমান করে ফেলার এ রকম দক্ষতা খুব কম দেখা গিয়েছে।” কিম ক্লিস্টার্সের প্রতিক্রিয়া, “হালেপ কোর্টে অসাধারণ মুভ করে। তাকেও দৌড় করিয়ে কাহিল করে দিয়েছে।” জীবনের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে উঠেই যেন চ্যাম্পিয়নের প্রশংসা ঝরে পড়ছে কানাডিয়ান গ্ল্যামার গার্লের উপর। মেয়েদের সার্কিট যাঁকে ইতিমধ্যে ‘নতুন প্রজন্মের শারাপোভা’ ভাবতে শুরু করেছে।
প্রাক্তন উইম্বলডন ফাইনালিস্ট নাথালি তওজিয়া তাঁর ট্র্যাভেল কোচ হওয়ার পরেই বুশার্ডের টেনিসের জুনিয়র লেভেলের রক্ষণাত্মক খোলস ছেড়ে অ্যাটাকিং মোড-এ ঢুকে পড়া। যার নিটফল, এ মরসুমে তিনি তিনটে গ্র্যান্ড স্ল্যামের দু’টোর শেষ চারে আর একটায় এই মুহূর্তে ফাইনালে! যিনি ফ্যানের থেকে ‘সিন্ডরেলা’ উপহার পেয়েও টুইট করেন, ‘মনে হচ্ছিল আমার ফ্যান ঠিক আমার মতোই দেখতে একটা ‘ডল’ উপহার দিয়েছে।’ এতটাই নিজের টেনিসের মতোই সচেতন নিজের সৌন্দর্য নিয়ে!
ফাইনালে তাই তিন বছর আগেই উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হলেও পেত্রা কিভিতোভাকে সামলাতে হবে বুশার্ডের কোর্টের ভেতরের মতোই কোর্টের বাইরের সৌন্দর্যকেও! ‘অল চেক’ সেমিফাইনালে অবশ্য ছ’ফুট, সত্তর কেজির কিভিতোভা সহজেই হারিয়েছেন সাফারোভাকে। ৭-৬ (৮-৬), ৬-১।
তরুণ প্রজন্মের জয়গানের মধ্যে অবশ্য এক চিরসবুজ প্রবীণ অম্লান। তিনি— ৪১ বছরের লিয়েন্ডার পেজ তাঁর ৩৫ বছরের চেক পার্টনার রাদেক স্টেপানেককে নিয়ে উইম্বলডন সেমিফাইনাল পৌঁছে গেলেন। ছ’ফুট তিন ইঞ্চির টেনিস দৈত্যদের জুটি নেস্টর-জিমোনজিচকে ৩-৬, ৭-৬ (৭-৫), ৬-৩, ৬-৪ হারিয়ে।