পাঁচ দিন রোদের পর এ বার উইম্বলডনের আকাশের মুখ ভার। এটাই তো স্বাভাবিক। উইম্বলডনে বৃষ্টি হবে না, তা আবার হয় না কি?
প্রথম সপ্তাহে তেমন কোনও অঘটন না ঘটলেও সে দিন নোভাক জকোভিচকে কোর্টে ও ভাবে পড়ে যেতে দেখে আঁতকে উঠেছিলাম। আমি তো ভাবলাম এ বারের মতো ওর বুঝি উইম্বলডনটাই শেষ! বোধহয় কাঁধের হাড়টাড় সরে গেল! গ্যালারি থেকে দেখে তো তা-ই মনে হয়েছিল। সত্যিই তেমনটা হলে তো উইম্বলডনের সবচেয়ে বড় অঘটনটাই ঘটে যেত। ভাগ্য ভাল যে, তেমন কিছু হয়নি। ফিজিওই ব্যাপারটা সামলে নিল। ম্যাচের পর কতগুলো স্ক্যান আর পরীক্ষা হয়েছে। তাতেও দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কিছুটা জায়গা অবশ্য ছড়ে গিয়েছে। তবে তা এমন কিছু নয়। সোমবার ও ফের আগের মতো তাজা হয়েই কোর্টে নামবে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার জন্য।
ওই পড়ে যাওয়ার ঘটনাটা ছাড়া গিলেস সিমোনের বিরুদ্ধে নোভাকের আর কোনও সমস্যা হয়নি। বেশ সহজেই জিতল ম্যাচটা। যে ছেলেটা বিপক্ষ হিসেবে ভয়ঙ্কর উঠতে পারত, তার বিরুদ্ধে ম্যাচটা ভালয়-ভালয় মিটে যাওয়ায় স্বস্তি পাওয়া গেল কিছুটা। তার আগের রাউন্ডেই তো রাদেক স্টেপানেকের বিরুদ্ধে নোভাককে যথেষ্ট পরিশ্রম করতে হয়েছে। অবশ্য প্রথম দিকের এই হোঁচটগুলোই সারা টুর্নামেন্টে সতর্ক থাকতে সাহায্য করে।
রাফায়েল নাদালের ভাগ্যেও এমনই লড়াই ছিল লুকাস রসোলের বিরুদ্ধে। ২০১২-য় এই চেক ছেলেটাই তো নাদালকে হারিয়েছিল। একটা পয়েন্ট থেকে আর একটা পয়েন্টের খেলা শুরু করতে এত সময় নিচ্ছিল নাদাল যে, রসোলই বিরক্ত হয়ে উঠছিল। তবে নাদাল এ রকমই। দু’টো পয়েন্ট খেলার মাঝে সময় নেওয়াটা ওর অভ্যাস। ক্লে কোর্টে না হয় বেশি র্যালি হয়, সময়ও লাগে বেশি। কিন্তু ঘাসের কোর্টে কেন? আমার বেশ অদ্ভুত লাগে ব্যাপারটা।
মেয়েদের সিঙ্গলসে তৃতীয় রাউন্ড থেকেই লি না-র ছিটকে যাওয়া বড় অঘটন। ফরাসি ওপেন ওর খুব একটা ভাল যায়নি। এখানেও ম্যাচটায় নিজের সেরা জায়গায় ছিল বলে মনে হল না।
উইম্বলডনে বরাবরের আবেগঘন ফেভারিট ভেনাস উইলিয়ামসের হারটাও মন খারাপ করার মতো। কিন্তু পেত্রা কিভিতোভাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ও এখানে খেতাব জিতেছে আর ভেনাসের বিরুদ্ধে ও-ই ফেভারিট ছিল। সেরেনার রাস্তাটা বরং বেশ সহজ। এখানে তো এখন থেকেই সেরেনা-মারিয়া কোয়ার্টার ফাইনাল নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কে বলতে পারে, হয়তো ওই ম্যাচটাই ঠিক করে দেবে, এ বার ট্রফি কার হাতে উঠবে। আমি অবশ্য লক্ষ্য রাখছি তিন জার্মান তরুণীর দিকে। সাবিনে লিসিকি ওদের মধ্যে ভাল ফর্মে।
উইম্বলডনের পাশাপাশি বিশ্বকাপ ফুটবলে জার্মানদের উপরও নজর রাখতে হচ্ছে। তবে এক কামড়ে সব ফোকাস নিয়ে নিয়েছে সুয়ারেজ। এ সব ক্ষেত্রে আমি সাধারণত খেলোয়াড়দেরই পাশে থাকি। কিন্তু কেউ বারবার একই অপরাধ করলে তা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। শাস্তিটা হয়তো বেশিই হয়েছে। কিন্তু তার জন্য ও নিজে দায়ী।
(গেমপ্ল্যান)