কমলা-ঝড় সামলাতে তৈরি বিশ্বকাপের ‘সিন্ডরেলা’

অপরাজিত থেকে ‘গ্রুব অব ডেথ’ টপকানো। দশ জনে খেলে গ্রিসকে ছিটকে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেওয়া। মনে করিয়ে দেওয়া ২০০২-এর দক্ষিণ কোরিয়াকে। এ বার বিশ্বকাপের ‘সিন্ডরেলা-স্টোরি’ কিন্তু কোস্টারিকাই। মাঠে তাদের এগারো ফুটবলারই খেলে থাকে, কিন্তু মাঠের বাইরে লক্ষ লক্ষ সমর্থকের উপস্থিতি যে টনিকের কাজ করে, সেটাও কিন্তু কম নয়। প্রতি মিনিটে গ্যালারি থেকে গর্জন উঠছে, ‘ভিভা কোস্টারিকা।’ ফুটবলারদের প্রতি কাতর আবেদন শোনা যায় মুহূর্তে মুহূর্তে, ‘ইতিহাস গড়েই বাড়িতে ফেরো টিকোস-টিকোস।’

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৪ ০৩:৩০
Share:

গ্রিস-বধের পরে কোস্টারিকা সমর্থকদের উল্লাস।

অপরাজিত থেকে ‘গ্রুব অব ডেথ’ টপকানো। দশ জনে খেলে গ্রিসকে ছিটকে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেওয়া। মনে করিয়ে দেওয়া ২০০২-এর দক্ষিণ কোরিয়াকে। এ বার বিশ্বকাপের ‘সিন্ডরেলা-স্টোরি’ কিন্তু কোস্টারিকাই।

Advertisement

মাঠে তাদের এগারো ফুটবলারই খেলে থাকে, কিন্তু মাঠের বাইরে লক্ষ লক্ষ সমর্থকের উপস্থিতি যে টনিকের কাজ করে, সেটাও কিন্তু কম নয়। প্রতি মিনিটে গ্যালারি থেকে গর্জন উঠছে, ‘ভিভা কোস্টারিকা।’ ফুটবলারদের প্রতি কাতর আবেদন শোনা যায় মুহূর্তে মুহূর্তে, ‘ইতিহাস গড়েই বাড়িতে ফেরো টিকোস-টিকোস।’

গ্রিসের বিরুদ্ধে শেষ ষোলোর লড়াইয়ে ব্রায়ান রুইজ গোল করে কোস্টারিকাকে এগিয়ে দিলেও ইনজুরি টাইমে সমতা ফেরান পাপাসতুপুলোস। পেনাল্টিতে ৫-৩ জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌছাল হোর্গে লুই পিন্টোর দল।

Advertisement

শেষ বাঁশি বাজতেই আবেগের বিস্ফোরণে ভেসে যান কোস্টারিকান সমর্থকরা। শুধু গ্যালারিতেই থেমে থাকেননি তাঁরা। রাস্তায় রাস্তায় সমর্থকদের ভিড় জমে যায়। কেউ কেউ মুখে পতাকার রং লাগিয়ে, আবার কেউ কেউ দেশের জার্সি পরে। রেকিফের রাস্তা দেখে মনে হচ্ছিল কোস্টারিকার কোনও শহর। এমনকী গাড়ির উপরে উঠে, ল্যাম্প পোস্টে চড়েও জয়ের উৎসব পালন হয়। রিওর কোপাকাবানা সমুদ্র সৈকতে সারা রাত ধরে চলে বিয়ার আর গানের উৎসব। ম্যাচ শেষে পিন্টো বলেই দিলেন, এই জয় শুধু এগারো জনের নয়, এই জয় কোস্টারিকার লক্ষ লক্ষ মানুষের। বলেন, “দেশের সমস্ত মানুষকে আমরা এই ঐতিহাসিক জয় উৎসর্গ করলাম। আমার দলে সবাই ফুটবল ভালবাসে। আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।”

ঐতিহাসিক বিশ্বকাপ সফরের নেপথ্যের নায়ক হিসেবে বেরিয়ে আসছে বেশ কয়েকটা নাম। যার মধ্যে একজন দলের গোলরক্ষক কেলর নাভাস। নাভাস প্রাচীরেই গত কাল আটকে যায় গ্রিস। মারণ গ্রুপ থেকেও দলকে বাঁচিয়ে আনতে সাহায্য করেন নাভাস। ছিটকে গিয়েও যাঁর প্রশংসা করতে ভোলেননি গ্রিসের কোচ ফের্নান্দো সান্তোস। বলেন, “অবশ্যই কোস্টারিকা ওদের গোলকিপারের জন্যই জিতল। ও না থাকলে আজ ম্যাচের ছবি অন্য রকম হত।”

নেপথ্যের অন্যতম নায়ক হিসেবে উঠে এসেছেন দলের কোচ পিন্টোও। যাঁর প্রতিটা স্ট্র্যাটেজি চমকে দিয়েছে বিপক্ষকে। ইতালির বিরুদ্ধে রক্ষণাত্মক তো উরুগুয়ের বিরুদ্ধে প্রতিআক্রমণ। কোচের মগজাস্ত্রই ম্যাচের ছবি পাল্টে দিয়েছে।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ফুলহ্যামের জার্সিতে তাঁকে ‘ফ্লপ’ আখ্যা দেওয়া হলেও, কোস্টারিকার হয়ে অধিনায়কের মতোই খেলেছেন ব্রায়ান রুইজ। ওয়ার্ক লোড নেওয়া ছাড়াও ঠিক সময় দুটো গোলও করেছেন। রয়েছেন জোয়েল ক্যাম্ববেলও। যিনি সমানে সাহায্য করে যাচ্ছেন আক্রমণ গড়ে তুলতে।

গ্রিস পরীক্ষায় পাস করলেও শেষ আটের লড়াইয়ে কমলা-সিংহের মুখে পড়তে চলেছে কোস্টারিকা। কিন্তু ‘আন্ডারডগ বনাম ফেভারিটদের’ চরম লড়াইয়ে কোনও মানসিক চাপ ছাড়াই খেলবে কোস্টারিকা। রুইজ বলেন, “আমরা খুব খাটছি। আমাদের একটা নির্দিষ্ট ছক আছে যা প্রতিটা দলের সঙ্গে ব্যবহার করছি। নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধেও আক্রমণে যেতে ভয় পাব না। কিছুই হারানোর নেই আমাদের।” প্রাক্তন ফুটবলার আর সহকারী কোচ পাওলো ওয়ানচপ বলছেন, “আমার মনে হয় কোস্টারিকা ভালই খেলবে। কারণ কোনও চাপ নেই আমাদের উপরে। নেদারল্যান্ডস আমাদের খুব হাল্কা ভাবে নিলে ওদেরই বিপদ।” আর জেল বেরাহিমি? দেশের সেই বিখ্যাত ‘লাকি চার্ম’ তো টুইট করেই দিলেন, “আমার সুন্দর কোস্টারিকাকে অসংখ্য শুভেচ্ছা।”

কোস্টারিকা

• জনসংখ্যা ৪৮ লক্ষ ৫০ হাজার

• অবস্থিত সেন্ট্রাল আমেরিকা

• প্রাক্ বিশ্বকাপে খেলে কনকাকাফ গ্রুপে

সিভি-তে

• কনকাকাফ গোল্ড কাপ জিতেছে ৩ বার।

• সিসিএফসি চ্যাম্পিয়ন ৭ বার।

• উনকাফ নেশনস কাপে ৭ বার।

আস্তিনে টেক্কা

• কেলর নাভাস (গোলকিপার)

ক্লাব- লেভান্তে (স্পেন)

• ব্রায়ান রুইজ (অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার)

ক্লাব- ফুলহ্যাম (ইংল্যান্ড)

• জোয়েল ক্যাম্পবেল (স্ট্রাইকার)

• ক্লাব- আর্সেনাল (ইংল্যান্ড)

অগস্টেই মাঠে নামছে দুই প্রধান
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা

কলকাতা প্রিমিয়ার লিগ দিয়েই শুরু হচ্ছে মরসুম। অগস্টেই নেমে পড়ছে ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান। ৩ অগস্ট থেকে নিজেদের মাঠে ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে খেলবে আর্মান্দো কোলাসোর দল। মোহনবাগান নামবে ৫ অগস্ট। আর মহমেডানের প্রথম ম্যাচ ৪ অগস্ট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement