ভাগ্যের পরিহাস বোধহয় একেই বলে!
এক দিকে অভ্যন্তরীন কাজিয়ায় ব্যস্ত বক্সিং ফেডারেশনের নির্লিপ্ত মনোভাব। অন্য দিকে বক্সিং রিংয়ে আইরিশ বন্ধু বক্সারের আবদনে সাড়া না দেওয়া—এই দুইয়ের মাঝে পড়ে শিবা থাপা রিও অলিম্পিকের স্বপ্ন টালমাটাল। অসমের বক্সারের তাই আক্ষেপ, “আমাদের দেখার জন্য বা আমাদের হয়ে কথা বলার জন্য কেউ নেই। থাকলে আমার এই দুর্দশা হত না।’’ ব্যাপারটা ঠিক কী? লন্ডন অলিম্পিকের ব্রোঞ্জ পদকজয়ী বিজেন্দ্র সিংহ এ বার আর অলিম্পিকে নামবেন না। তিনি ঢুকে পড়েছেন পেশাদার বক্সিংয়ের দুনিয়ায়। তাঁর অনুপস্থিতিতে রিও অলিম্পিকে ভারতীয় পুরুষ বক্সারদের মধ্যে সেরা সুযোগ রয়েছে শিবা থাপা ও মনদীপ জাঙ্গরার উপর। কিন্তু রিও অলিম্পিকের মাত্র সাত মাস আগে বক্সিং ফেডারেশনের ডামাডোলে ভারতীয় বক্সাররা নিজেদের প্রমাণ করার জন্য পর্যাপ্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। অথচ বিজেন্দ্র সিংহ পেশাদার বক্সিংয়ে চলে যাবার পর শিবা থাপাই রিও অলিম্পিকে পদক জেতার লক্ষ্যে ছিল ভারতের সেরা বাজি।
দুবার বক্সিং ফেডারেশনকে সাসপেন্ড করে দেয় আন্তর্জাতিক বক্সিং সংস্থা। অল্পের জন্য শিবা রিও অলিম্পিকের যোগ্যতা অর্জন করতে ব্যর্থ হন। ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতে আইরিশ বক্সার মিচেল কোনলান ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের কোটাটাই নিয়ে নেন রিওর ছাড়পত্র হিসাবে। অথচ তাঁর কাছে আইবা ওয়ার্ল্ড সিরিজ বক্সিংয়ের (ডব্লুএসবি) কোটাটাও ছিল। মিচেল যদি দ্বিতীয়টা নিতেন তাহলে শিবা তাঁর জায়গায় রিওর ছাড়পত্র পেয়েই যেতেন।
২২ বছরের শিবা থাপা কাতারে ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিলেন। দারুণ লড়ে তিনি অল্পের জন্য বেলারুশের দিমিত্রি আসানাওয়ের কাছে হেরে যাওয়ায় রিও-র ছাড়পত্র যোগাড় করতে ব্যর্থ হন। আয়ার্ল্যান্ডের মিচেল কোলন আবার শিবা থাপার খুব ভাল বন্ধু। কিন্তু তা সত্ত্বেও সোনা জিতে তিনি শিবার জন্য কোটা ছেড়ে দেননি। নিয়ম অনুযায়ী, এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে প্রত্যেকটি বক্সারের উপর তিনি কোন কোটাটা নেবেন। শিবার হয়ে আইরিশ ফেডারেশনকে বোঝাবার বা চাপ দেবার দায়িত্ব যাদের ছিল সেই ভারতীয় ফেডারেশনও কোনও সহায়তা করেনি।
হতাশ শিবা বলছেন, ‘‘এখন বাধ্য হয়ে আমাকে নির্ভর করতে হবে মার্চে চিনের কিয়ানানে অনুষ্ঠিত হতে চলা এশিয়ান অলিম্পিক বক্সিং কোয়ালিফাইং চ্যাম্পিয়নশিপের উপর। মানসিকভাবে প্রচন্ড আঘাত পেয়েছি এই কয়েক মাসে। আই অ্যাম টেরিবলি শকড্।”