একসঙ্গে মাঠে নেমে ঝড় ত্রিমূর্তির। মঙ্গলবার।-নিজস্ব চিত্র
এশিয়া কাপ শুরুর দিন সাতেক আগে ভারতের ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য সুখবর থাকল। ময়দানে নেমে পড়লেন মহম্মদ শামি।
মাঝে চোট সারিয়ে অস্ট্রেলিয়া সফরের ভারতীয় টিমে ফিরলে কী হবে, ফের চোট পেয়ে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যান শামি। কেউ কেউ আশঙ্কা করেছিলেন যে, এর পর তাঁকে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে। কিন্তু মঙ্গলবার শামির ময়দানে প্রত্যাবর্তন কিছুটা হলেও ক্রিকেটপ্রেমীদের স্বস্তিতে রাখবে।
এ দিন মোহনবাগানের হয়ে সিএবি নক আউট টুর্নামেন্টে নেমে খুব বেশি বল করেননি শামি। গোটা চারেক ওভার করেছেন। একটা উইকেট পেয়েছেন ব্যাটসম্যানের স্টাম্প ছিটকে দিয়ে। ব্যাট হাতে একটা ক্যামিও ইনিংস খেললেন ১৬ বলে ৪৫ রানের। যেখানে থাকল ছ’টা ছয়। আর মাঠ ছেড়ে বেরনোর সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের বলে গেলেন, ‘‘আমার ফিটনেস নিয়ে তেমন কোনও সমস্যা আর বুঝছি না। আশা করছি এশিয়া কাপ আর টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজের একশো শতাংশ দিতে পারব।’’
ময়দান যদি এ দিন শামির প্রত্যাবর্তন দেখে থাকে, তা হলে একই সঙ্গে আরও দু’টো জিনিস দেখল। ঋদ্ধিমান সাহার ফর্মে ফেরা। এবং বাংলা জার্সি থেকে অবসর নেওয়ার পরেও লক্ষ্মীরতন শুক্লর বিস্ফোরণ।
ঋদ্ধিমানের ৫৭ বলে ১১৬ এবং লক্ষ্মীর ৪৪ বলে ৮১ জর্জ টেলিগ্রাফের বিরুদ্ধে ১৯২ রানে জিতিয়ে দিল মোহনবাগানকে। প্রথমে ব্যাট করে ৪৫ ওভারে ৪৫৮-৮ তুলেছিল মোহনবাগান। যা নাকি ক্লাবের ক্রিকেট ইতিহাসে রেকর্ড। নক আউটে নাকি এত রান আর এর আগে করেনি মোহনবাগান। ঋদ্ধি-লক্ষ্মীর ঝড়ই শুধু নয়, মোহনবাগানের হয়ে রান পান এ দিন বিবেক সিংহও। ৮৫ বলে ৮৬ করেনি তিনি। ইনিংসের শেষে আবার ছিল শামির পরপর ছক্কা। পরপর চারটে।
ভারতীয় পেসার বলছিলেন, মন দিয়ে রিহ্যাব করার সুফলই তিনি এখন পাচ্ছেন। ‘‘জাতীয় দলের বাইরে থাকার সময়টা খুব কষ্টের ছিল। পারফরম্যান্সের জন্য বাদ পড়াটা এক রকম। কিন্তু যদি আপনি ভাল পারফর্ম করেও চোটের জন্য বাইরে থাকেন, সেটা সামলানো সহজ হয় না। গত আট মাসে আমি অসম্ভব খেটেছি নিজের ফিটনেস নিয়ে। রিহ্যাব করেছি অক্লান্ত ভাবে। কারণ ফিরতে হলে ওটা আমাকে ঠিকঠাক ভাবে করতে হত,’’ বলে দিচ্ছেন শামি। অস্ট্রেলিয়া সফরে ওয়ান ডে সিরিজে ভারতকে ও ভাবে হারতে দেখে অসম্ভব খারাপ লেগেছিল। ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি তো পরে এটাও বলে যান যে, শামির অভাব টেরে পেয়েছে টিম। ‘‘অস্ট্রেলিয়ায় যে কী ভাবে চোটটা লাগল বুঝতেও পারলাম না। আর ধোনি ও রকমই। সব সময় প্লেয়ারের পাশে থাকে।’’ ভারতীয় পেসার নিজেই বলে দিচ্ছেন বর্তমানে তিনি অনেক বেশি মন দিচ্ছেন লাইন লেংথ আর নিশানাকে অভ্রান্ত করতে।
ও দিকে, ময়দানের আর এক বড় শক্তি কালীঘাটও এ দিন চারশো তুলল। কলকাতা ইউনিয়ন স্পোর্টিং ক্লাবের বিরুদ্ধে তারা তুলল ৪১৪-৬। সায়নশেখর মণ্ডল করলেন ৭৭। ম্যাচও তারা জিতল ১৯৫ রানে। সৌরাশিস লাহিড়ী এবং বাংলা অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি দু’জনেই তিনটে করে উইকেট নিলেন। কিন্তু ইস্টবেঙ্গল এ দিন ৪ রানে হেরে গেল নেতাজি সুভাষ ইন্সটিটিউটের কাছে। প্রথমে ব্যাট করে নেতাজি সুভাষ ইন্সটিটিউট তুলেছিল ১৭১-৬। জবাবে মাত্র ১৬৭ রানে শেষ ইস্টবেঙ্গল।