বোলারদের এই ফর্মই চাইছে গোটা দেশ। ছবি: এপি।
ভারতের কাছে ৪৫ রানে হার নিয়ে চলছে কাঁটা-ছেড়া। ময়না তদন্ত রিপোর্টে শিশিরের জন্য বল ঠিক ভাবে গ্রিপ করতে না পারা থেকে সাকিবের ক্যাচ ড্রপ, বাজে ফিল্ডিং— চিহ্নিত করা হয়েছে অনেক কিছুকেই। টুর্নামেন্ট সবে শুরু হয়েছে, তা মনে করিয়ে দিয়ে সতির্থদের চাঙ্গা করতে চাইছেন মাশরাফি। দারুন ভাবে টুর্নামেন্টে ফিরতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ সব ক্রিকেটাররা। শুক্রবার বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আইসিসি’র সহযোগী সদস্য সংযুক্ত আরব আমিরশাহি (ইউএই)। বড় আসরে, বড় দলগুলোর সঙ্গে খেলার সুযোগ পায় তারা কালে-ভদ্র্রে। মধ্য প্রাচ্যের এই দলটির বিপক্ষে ম্যাচটিকে তাই একটু বেশি গুরত্বই দিতে হচ্ছে মাশরাফিকে। অধিনায়কের মতে, “সত্যি কথা বলতে কি প্রথম ম্যাচ নিয়ে আমরা সবাই রোমাঞ্চিত ছিলাম। জেতার সম্ভাবনাও ছিল যথেষ্ট। সামনে আরও তিনটি ম্যাচ আছে। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি আমাদের হাত থেকে চলে গেছে। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে পরবর্তী ম্যাচটি জিততেই হবে আমাদের। ম্যাচটিকে তাই আমরা খুব গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছি।”
টি-২০ ক্রিকেটের সঙ্গে এখনও সে অর্থে মানিয়ে নিতে পারেনি বাংলাদেশ দল। অজানা প্রতিপক্ষের কাছে হোঁচট খাওয়ার ইতিহাস আছে দলের। আইসিসির নীচের সারির দল হংকং, নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ডের কাছে হারের অতীতই তাই সাবধানী করেছে বাংলাদেশ দলকে। এশিয়া কাপে টিকে থাকতে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিপক্ষে ইতিবাচক ক্রিকেটের চ্যালেঞ্জ তাই নিতে হচ্ছে। প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে যে পরিকল্পনা নিয়ে খেলেছে দল, একই পরিকল্পনা নিয়ে ইউএইর বিপক্ষে নামার কথা জানিয়েছেন মাশরফিরা। টি-২০ ক্রিকেটে যে কোনও কিছুই ঘটতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, “ভারতের বিপক্ষে যেসব পরিকল্পনা ছিল আমাদের, আমিরশাহির বিপক্ষে সেরকম পরিকল্পনাই থাকবে। টুর্নামেন্টে ফিরতে আমাদের জন্য এই ম্যাচ তাৎপর্যপূণ। একই পরিকল্পনায় খেলব।”
আইসিসির টি-২০ র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের ওপরে থাকা আফগানিস্তানকে হারিয়ে বাছাই পর্বের বাধা টপকে এশিয়া কাপের চূড়ান্ত পর্বে উঠেছে আরব আমিরশাহি। বাছাইপর্বের তিন ম্যাচের তিনটিতেই সহজ জয় তুলে নিয়েছে তারা। বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুর্দান্ত বোলিং করেছে ওই দলটি। ১২৯ রানে আটকে ফেলেছিল শ্রীলঙ্কাকে। তাই পেশাদরী দলের মতো খেলে আমিরশাহিকে সব বিভাগেই পর্যুদস্ত করতে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি। “আমাদের পেশাদারিত্বের সঙ্গে পারফরম্যান্স করতে হবে। আশা করছি এই ম্যাচের পুরোটা সময়ই আমাদের ভাল কাটবে।” চেনা প্রতিপক্ষ নয় আমিরশাহি। আইসিসি’র টি-২০ র্যাঙ্কিং ১৫তম স্থানে থাকা দলটির সম্পর্কে তেমন একটা ধারণা না থাকাই স্বাভাবিক। তবে বাছাই পর্বে দলটির ম্যাচগুলোর ভিডিও ক্লিপিংস দেখে মরুর দেশ থেকে আসা দলটির শক্তি, দূর্বলতা সম্পর্কে একটা ধারণা পেয়েছেন বাংলাদেশ।
আমিরশাহির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের রেকর্ড ভাল মন্দে মেশানো। ১৯৯৪’র আইসিসি ট্রফিতে মধ্য প্রাচ্যের এই দেশের কাছে হার বাংলাদেশের বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন ভঙ্গ করেছে। আবার আশরাফুলের (১০৯) হাত ধরে এশিয়া কাপে বাংলাদেশ প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিপক্ষে। বাংলাদেশের ক্রিকেটে ওই ব্যাড বয়ের অধিনায়কত্বেই এশিয়া কাপ ক্রিকেটে প্রথম তিনশ’র স্কোর দেখেছে। এশিয়া কাপে ৯৬ রানের বিশাল ব্যবধানে জয়টিও পেয়েছে বাংলাদেশ ওই ম্যাচে। ৮ বছর আগের এই অতীত থেকেও টনিক নিতে পারে বাংলাদেশ দল।