বুধবার আইএফএ দফতরে এডুয়ার্ডো।—শঙ্কর নাগ দাস
মোহনবাগানে সই করার আগে থাকতেই নাকি তাঁর প্রিয় রং সবুজ-মেরুন। আইএফএ অফিসে তাই ব্রাজিল থেকে আনা সবুজ-মেরুন স্ট্রাইপ বেসবল ক্যাপ মাথায় চড়িয়েই এসেছিলেন মোহনবাগানে সই করতে।
বুধবার দুপুরে সেই সই সেরে সবুজ-মেরুনের চতুর্থ বিদেশি ব্রাজিলিয়ান সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার এডুয়ার্ডো ফেরেইরার প্রথম প্রতিক্রিয়া, ‘‘ব্রাজিলের ফ্লুমিনেন্স অ্যাকাডেমিতে ফুটবলটা শিখেছি। তাই ফ্লুমিনেন্সের কট্টর ফ্যান আমি। ওদের জার্সির রং-ও সবুজ-মেরুন। মোহনবাগানেরও। মনে হচ্ছে, মানিয়ে নিতে অসুবিধে হবে না।’’
ছ’ফুটের উপর লম্বা ব্রাজিলীয় এ বারের আইএসএলে চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে গিয়েও পর মুহূর্তে মাঠে ঢুকে এটিকে-কে গোল দিয়েছিলেন বালেওয়াড়িতে। প্রাক্তন কলকাতা কোচ হাবাসের পুণে সিটির জার্সিতে। সে কথা মনে করিয়ে দিতেই মুখে হাইভোল্টেজ হাসি এ দিন এডুর। বলে দিলেন, ‘‘মোহনবাগান ভারতের অন্যতম সেরা ক্লাব। গত দু’বছরে আই লিগ, ফে়ড কাপ জিতেছে। সেই ক্লাবের হয়ে ট্রফি জেতার পাশাপাশি টিমে কিছু অবদানও রাখতে চাই।’’
ফ্লুমিনেন্স ছাড়াও ব্রাজিলের ফ্ল্যামেঙ্গো, কোরিন্থিয়ান্স যুব দলে খেলেছেন থিয়াগো সিলভার ভক্ত এডু। কোরিন্থিয়ান্সে খেলার সময় মুখোমুখি হয়েছেন স্যান্টোসের নেইমারের বিরুদ্ধে। দক্ষিণ আফ্রিকা, তাইল্যান্ড এবং ইরানের ক্লাবে খেলা তেত্রিশ বছরের ব্রাজিলীয় ডিফেন্ডারের কথায়, ‘‘হাবাস আমাকে তিন বছর আগেই ভারতে আনতে চেয়েছিলেন। আইএসএলে। এ বার চলেই এসেছিলাম। আইএসএলের পরে আই লিগেও। গত কয়েক দিন ব্রাজিলে ট্রেনিং করে এসেছি। আশা করি ম্যাচফিট হতে সময় লাগবে না।’’
মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেন অবশ্য এডুয়ার্ডো নিয়ে এখনই উচ্ছ্বাস দেখাতে নারাজ। তাঁর মন্তব্য, ‘‘প্রথম দিন প্র্যাকটিসে দেখি। বৃহস্পতিবারের পর ওকে নিয়ে আমার পরিকল্পনা ঠিক করব। তবে আইএসএলে ওর পারফরম্যান্স ভাল ছিল। ভারতীয়দের পাশে আর বিপক্ষে খেলেছে। সেটা সুবিধে হবে আমার। এ দেশে একেবারে নতুন হলে সমস্যা হতো।’’ মুখে না বললেও বাগান কোচ অবশ্য ঠিক করে রেখেছেন ফিটনেস ঠিক থাকলে চার্চিল ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই খেলাবেন এডুকে।
যাঁর সঙ্গেই এ দিন বাগানে সই করল জেজে, আনাস, প্রীতম কোটাল, প্রণয় হালদার, বিক্রমজিৎ সিংহ-সহ জনা পনেরো ফুটবলার। এঁদের মধ্যে প্রথম বার সবুজ-মেরুন জার্সি পাওয়া কেরলের আনাস বলছেন, ‘‘আইএসএলে গ্ল্যামার থাকতে পারে। কিন্তু মানের বিচারে অনেক কঠিন আই লিগ। এই টুর্নামেন্টে গত বছর খেলিনি। তাই মোহনবাগানের হয়ে এ বারের লিগটা আমার কাছে বেশি চ্যালেঞ্জিং।’’
সই সেরে আনাসের সঙ্গেই বাড়ি ফেরার পথে জেজেও বলে যান, ‘‘গত বছর একটা সময় সাত পয়েন্টে এগিয়ে থেকেও আই লিগ পাইনি। এ বার চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেই আক্ষেপ পুষিয়ে নিতে চাই।’’ গত বারের আইএসএলের চেনা মেজাজে এ বার পাওয়া যায়নি জেজেকে। হয়তো চোটের কারণেই। এ দিন সে কথা তুললে দেশের অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ড বললেন, ‘‘আমি এখন পুরোপুরি ম্যাচফিট। গত বছরের চেয়েও শক্তিশালী এ বারের মোহনবাগান টিম। আই লিগে গোল করে আইএসএলে বেশি গোল না পাওয়ার খেদ মেটানোর চেষ্টা তো থাকবেই আমার। আর ট্রফি জিততে না পারলে তো সব কিছুই বৃথা।’’