ওয়াংখেড়ের প্র্যাকটিসে মইন আলি ও ইয়ন মর্গ্যান। ছবি: পিটিআই।
২০১৪-র গ্রীষ্ম এখনও ভুলতে পারেন না মইন আলি! কারণ সে বারই তো ইংল্যান্ড সফররত ভারতীয় দলের বিরুদ্ধে নামার আগে বদল তাঁর পরিচয়ে। ব্যাটসম্যান যে একটু আধটু বলও করতে পারে থেকে সে বারই মইনের পরিচিতি বদলে হয়ে যায়— বোলার যার ব্যাটের হাতটিও মন্দ নয়।
দু’বছর বাদে এ বার ভারতে ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টির আসর। আর সেখানে মইন আলি ইংল্যান্ড স্পিন অ্যাটাকের প্রধান মুখ। প্রথম বার ভারত সফর নিয়ে প্রশ্ন করতেই বললেন, ‘‘এর আগে ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৯ এবং ইংল্যান্ড লায়ন্স টিমের হয়ে ভারতে খেলে যাওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে আমার। এ ছাড়াও সিনিয়র টিমের হয়ে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, সংযুক্ত আমিরশাহি ও শ্রীলঙ্কার উইকেটেও খেলেছি। তবে সিনিয়র টিমের হয়ে এটাই আমার প্রথম ভারত সফর। আর ভারতের দর্শক ঠাসা স্টেডিয়ামে পারফর্ম করতে মুখিয়ে রয়েছি আমি।’’
নিজেই কেরিয়ার সম্পর্কে ফিরে দেখতে গিয়ে এই স্পিনার বলছেন, ‘‘স্পিন বোলিংটা শুরু থেকেই করতাম। কিন্তু তখন ধারাবাহিকতাটা ছিল না। তখন ভাবতাম ব্যাটিং দিয়েই টিমে জায়গা করে নেব। কিন্তু তা হয়নি। বদলে বোলিংটাই আমাকে স্থায়ী জায়গা করে দিয়েছে টিমে। আশা করি এক দিন ব্যাটিং,বোলিং দু’টোই ধারাবাহিক ভাবে করতে পারব ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে।’’
নিজের কেরিয়ারের এই বিশাল পরিবর্তন সম্পর্কে জানতে চাইলে মইন বললেন, ‘‘আগে নেটে মোটে ছ’-সাতটার বেশি বল করতাম না। আর এখন নেটে ষাট-সত্তরটা বল তো কম পক্ষে করবই। কারণ নিজের বোলিংকে ঘসেমেজে আরও ঝকঝকে করতে নেটে আরও টাইম দেওয়াটা জরুরি।’’ একটু থেমে বললেন, ‘‘বোলার হিসেবে টিমের প্রত্যাশা আমার কাছে বেশি। আর সেটা আমি উপভোগও করছি বেশ ভাল মতো। এমনকী টিমের প্রয়োজনে দশ কিংবা এগারো নম্বরে ব্যাট করতেও আমার কোনও সমস্যা নেই।’’
এ বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের গ্রুপে রয়েছে শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো কঠিন প্রতিপক্ষ। যে প্রসঙ্গে মইন বলছেন, ‘‘ইটস আ ম্যাসিভ টুর্নামেন্ট ফর আস। রুট, স্টোকস, বাটলার, হেলস, মর্গ্যানকে নিয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং লাইনআপ আমাদের। টপ আর মিডল অর্ডার নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠবে না। আশা করি টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভালই করব আমরা।’’ সঙ্গে এটাও বললেন, ‘‘আমার কাজ উইকেটের জন্য মাথা না কুটে রান আটকানো। যেন কেউ বেশি চার-ছক্কা মেরে না দেয়। তার জন্য সইদ আজমল, সাকলিন মুস্তাকদের পরামর্শ নিয়ে এসেছি।’’ পরামর্শ নিয়েছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিনের। মইনের কথায়, ‘‘গত অস্ট্রেলিয়া সফরে ত্রিদেশীয় সিরিজের সময় আমি অশ্বিনের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। জাডেজার সঙ্গে জুটিতে ও যে রকম বল করে, সেটা দারুণ। অশ্বিনের অনেক বৈচিত্রও আছে।’’
আর সাফল্যের রহস্য? ইংল্যান্ড স্পিনার বলছেন, ‘‘আমাদের টিমের সাপোর্ট স্টাফ মাহেলা জয়বর্ধনে। উপমহাদেশের উইকেটে স্পিনের বিরুদ্ধে ওঁর সময়ে মাহেলা বিশ্বসেরা। ওঁর টিপস তো কাজে লাগবেই। তা ছাড়া এক সময় ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে তৈরি করার ইচ্ছা ছিল। তাই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ব্যাটসম্যান ঠিক কী ভাবছে সেটা আমি অনেকটাই পড়ে ফেলতে পারি। আর সেটাই আমার উইকেট পাওয়ার রহস্য।’’