সচিন তেন্ডুলকর। ফাইল চিত্র
এখনকার ইংল্যান্ড দলকে ভারতীয় পেস আক্রমণের সামনে আতঙ্কিত দেখাচ্ছে। একমাত্র জো রুটেরই ক্ষমতা আছে এই বোলিংয়ের বিরুদ্ধে শতরান করার। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনই মন্তব্য করলেন কিংবদন্তি সচিন তেন্ডুলকর।
লর্ডসে বিরাট কোহালিদের জয় নিয়ে উচ্ছ্বসিত সচিন বলেন, ‘‘রুট টস জিতে ভারতকে ব্যাট করতে ডেকেছে দেখে চমকে যাই। তখনই মনে হয়েছিল, এটা আসলে ভারতীয় পেস বোলিংকে ভয় পাওয়ার ইঙ্গিত। শুক্রবার সকাল আটটা নাগাদ এক বন্ধুকে তাই বার্তা পাঠিয়ে লিখি, আবহাওয়া ঠিক থাকলে টেস্টটা জিতব।’’ যোগ করেছেন, ‘‘পরের দিকে মনে হল পিচ খুবই শুকনো। যে কারণে মহম্মদ সিরাজের নতুন স্পেলের প্রথম বলটাই গুড লেংথ স্পট থেকে লাফিয়ে ওলি রবিনসনের বুকে লাগল। এই পিচে প্রথমে ফিল্ডিং নিয়ে ঠিক করেনি রুট। কৃতিত্ব দেব আমাদের ওপেনারদেরও। ওরা অসাধারণ ব্যাট করেছে।’’
সচিনকে প্রশ্ন করা হয়, কপিল দেব, জাভাগল শ্রীনাথ বা জ়াহির খানদের সময়ের সঙ্গে এখনকার পেস আক্রমণের কোথায় ফারাক। ‘‘আমাদের বোলিং এই মুহূর্তে বিশ্বসেরা। বোলারদের খেলায় প্রতিভা, শৃঙ্খলা আর পরিশ্রমের প্রতিফলন স্পষ্ট। বিভিন্ন যুগের মধ্যে তুলনা আমার অপছন্দ। বোলিং আক্রমণের বিচার করতে হলে দেখতে হবে কারা ব্যাট করছে সেটাও। কপিল, শ্রীনাথদের সময় বিভিন্ন ধরনের ব্যাটসম্যানরা এসেছে,’’ জবাব দিয়েছেন সচিন।
এখনকার বোলারদের নিয়ে নিজস্ব মতও জানিয়েছেন সচিন। যশপ্রীত বুমরাকে নিয়ে সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানের মন্তব্য, ‘‘বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের সময় বড় স্পেল পায়নি। বুমরা কিন্তু টানা বল করলে আরও উন্নতি করে। খুব বুদ্ধিমানও। যে কারণে কয়েকটা শর্ট বল দেওয়া পরে স্লোয়ার ডেলিভারিতে রবিনসনকে আউট করে দিল।’’ সিরাজকে নিয়ে আশাবাদী সচিন বলেন, ‘‘ছেলেটা দ্রুত শেখে। পরিস্থিতির সঙ্গেও মানিয়ে নেয়। ফাস্ট বোলারেরা একটা সময়ে দ্রুত সব কিছু রপ্ত করতে থাকে। তখন মনে হবেই যে সংশ্লিষ্ট বোলার নিজেকে বদলে ফেলেছে। সিরাজ সেই পর্যায়ে আছে। গত বছর এমসিজিতে ওকে দেখেছিলাম। তার পরে এখনকার সিরাজকে দেখে মনে হচ্ছে, ছেলেটা দ্রুত একটা ওভার নিজের মতো করে নির্মাণ করছে। চিন্তা করার এই ক্ষমতাটা বড় ব্যাপার।’’
রোহিত শর্মার হুক বা পুল শট মারতে গিয়ে আউট হওয়ার প্রবণতা নিয়ে সচিনের মন্তব্য, ‘‘শুরুতে রোহিতই তো আমাদের ব্যাটিংয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে। রাহুল শুধু (কে এল) ওকে সাহায্য করে যাচ্ছে। তা ছাড়া পুল শটে তো বাউন্ডারিও পাচ্ছে। একই রকম দক্ষতা দেখিয়েছে বল ছাড়ার ক্ষেত্রে। ইংল্যান্ডে ওর শেষ কয়েকটা ইনিংস দেখে বলতেই হচ্ছে যে রোহিত নিজেকে আরও ভাল জায়গায় নিয়ে এসেছে।’’
চেতেশ্বর পুজারা ও আজিঙ্ক রাহানে যে ভাবে ৩ উইকেটে ২৮ রানের কঠিন পরিস্থিতি থেকে দলকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন, তা নিয়ে উচ্ছ্বসিত সচিন। সঙ্গে বিরাট কোহালির সাম্প্রতিক রান-খরা নিয়ে মন্তব্য, ‘‘ওর শুরুটা ভাল হচ্ছে না। অনেক সময় মানসিকতার কারণে টেকনিক্যাল ভুল হয়। শুরু ভাল না হলে মনে নানা চিন্তা ভিড় করে। আবার উদ্বেগ বেড়ে গেলে, শারীরিক নড়াচড়া দিয়ে খামতি পূরণের প্রবণতা তৈরি হয়।’’ সচিন এও বলেন, ‘‘কোনও ব্যাটসম্যান ছন্দে না থাকলে বেশি এগিয়ে খেলতে পারে, অথবা একেবারেই নড়াচড়া করে না। ব্যাটসম্যানের ছন্দটা নির্ভর করে মন ও শরীরের
ভারসাম্যের উপরে।’’