দলের জন্য গর্বিত রাহানে
ফলাফল নয়। বরং শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়াই করতে হবে। সিডনি টেস্টের পঞ্চমদিনের খেলা শুরু হওয়ার আগে সতীর্থদের উদ্দেশে এই বার্তাই দিয়েছিলেন অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানে। অধিনায়কের সেই নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন সতীর্থরা।
প্রায় চার ঘণ্টা প্রতিপক্ষের চোখে চোখ রেখে, বিপক্ষের চোখা চোখা স্লেজিং সামলে টেস্ট ড্র করে ফিরলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও হনুমা বিহারী। প্রায় চার ঘণ্টা বাইশ গজে থেকে ষষ্ঠ উইকেটে জুড়লেন মহা মূল্যবান ৬২ রান। সিরিজ এখনও ১-১ থাকল তাঁদের জন্যেই। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট নিয়েও লড়াই করেছেন বিহারী।
তাই এই ড্র নৈতিক জয়ের সমান। এর নেপথ্যে ঋষভ পন্থ (৯৭) ও চেতেশ্বর পুজারার (৭৭) অবদানও যে কম নয়, সেটা নির্দ্বিধায় স্বীকার করলেন রাহানে। ম্যাচের শেষে গর্বিত অধিনায়কের ব্যাখ্যা, “ফের একবার আমরা নিজেদের জাত চেনালাম। ফলাফল নয়, লড়াই চাই। পঞ্চমদিন খেলা শুরু হওয়ার আগে সতীর্থদের এই বার্তা দিয়েছিলাম। অশ্বিন ও হনুমার বিশেষ ধন্যবাদ প্রাপ্য। শেষ দিন পর্যন্ত ছেলেরা লড়াই করেছে। প্রথম ইনিংসে ওরা ২ উইকেটে ২০০ রান করার পরেও ৩৩৮-এ অল আউট করেছিলাম। সতীর্থদের জন্য আমি গর্বিত।”
আরও পড়ুন: ভবিষ্যতের সম্বল দিয়ে ছেলের জন্য পিচ বানান, জামাকাপড় বিক্রি করে হনুমার স্বপ্ন পূর্ণ করেন মা
শুধু লড়াই নয়। ভাঙাচোরা, চোট-আঘাতে জর্জরিত দল নিয়েও মরিয়া লড়াই। চোটের জন্য ব্রিসবেন টেস্টে সম্ভবত নেই হনুমা। রবীন্দ্র জাডেজা আগেই চোটের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে গিয়ে বাঁ হাতে চোট পান পন্থ। তাই কিপিং করেননি। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে দলের প্রয়োজনে ৫ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে পড়েন।
চাপের মুখে পন্থকে ক্রিজে পাঠিয়ে মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। শুরু থেকে তিনি কাউন্টার অ্যাটাক করতেই ব্যাকফুটে চলে যায় অস্ট্রেলিয়া। নেথান লায়নকে টার্গেট করেন এই বাঁ হাতি। বিস্ফোরক মেজাজে ১১২ বলে করলেন ৯৭ রান। মারলেন ১২টি বাউন্ডারি ও ৩টি ওভার বাউন্ডারি। তরুণ পন্থের এমন লড়াইকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন রাহানে। বলছেন, “পন্থকে পাঁচ নম্বরে পাঠানো টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত। আসলে ডান হাতি-বাঁ হাতি কম্বিনেশন রাখার জন্য এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে বাকি কাজটা ওকে একা করতে হয়েছে। এমন ইনিংস খেলার জন্য বুকের সাহস থাকা দরকার।”
আগামী ১৫ জানুয়ারি থেকে ব্রিসবেনে শুরু হবে সিরিজের শেষ টেস্ট। দলে চোটের তালিকা আরও লম্বা হয়েছে। তবুও অনমনীয় ভারতীয় দল। সেই ১৯৮৮ সালে শেষ বার গাব্বায় হেরেছিল অস্ট্রেলিয়া। এবার কি চাকা ঘুরবে? ফের একবার বর্ডার-গাওস্কর ট্রফি কি ভারতের হাতে উঠবে? অপেক্ষার প্রহর গুনছে ‘মেন ইন ব্লু’ ব্রিগেড।
আরও পড়ুন: ‘ওয়াল’-এর জন্মদিনে অস্ট্রেলিয়ায় ডিফেন্সের বীরগাথা বিহারী, অশ্বিনের