এক দিকে বুমরা, রোহিত, বিরাট, অন্য দিকে বোল্ট, লকি, উইলিয়ামসনরা। ম্যাঞ্চেস্টারে আজ ধুন্ধুমার। গ্রপ পর্যায়ে অসাধারণ খেলা ভারত সেমিফাইনালে ফেভারিট। আন্ডারডগ হলেও বেগ দিতে তৈরি কিউয়িরাও। ব্ল্যাক ক্যাপসদের বিরুদ্ধে কেমন হতে পারে বিরাটদের স্ট্যাটেজি? দেখে নেওয়া যাক।
কিউয়ি অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের ঠান্ডা মাথায় খেলা পরিচালনার করার ক্ষমতা রয়েছে। ব্যাটিংও করেন ঠান্ডা মাথায়। এ বারের বিশ্বকাপে কিউয়িদের মধ্যে সব থেকে বেশি রান তাঁরই। ৮ ম্যাচে ৪৮১ রান, গড় ৯৬.২। ভারতের চিন্তার কারণ হতেই পারেন তিনি।
তবে বাঁ-হাতি স্পিনারদের বিরুদ্ধে তাঁর রেকর্ড খুব ভাল নয়। আর ভারতের হাতে কুলদিপ ও জাডেজার মতো দুই স্পিনার রয়েছেন। তাই উইলিয়ামসন ক্রিজে এলেই এঁদের কারও ডাক পড়তেই পারে।
ওপেনে মার্টিন গাপ্তিল এখনও পর্যন্ত সেই ভাবে নিজেকে মেলে ধরতে না পারলেও চিন্তা থাকবেই এই অভিজ্ঞ ওপেনারকে নিয়ে। যে কোনও বোলারের ত্রাস হয়ে ওঠার ক্ষমতা আছে এই ওপেনারের। তবে ব্যাট হাতে মেলে ধরতে না পারলেও ফিল্ডিং-এ মাত করছেন বার বার। ৮টি ক্যাচ ধরেছেন এখনও অবধি বিশ্বকাপে।
বাঁ-হাতি বোলারদের বিরুদ্ধে তাঁর রেকর্ডও খুব একটা ভাল নয়। এ বারের বিশ্বকাপে ইতিমধ্যেই চার বার তিনি আউট হয়েছেন বাঁ-হাতি বোলারদের বিরুদ্ধে। আজ জাডেজা বা কুলদিপ যে-ই খেলুক, তাঁর গুরুত্ব যে থাকবে তা বলাই বাহুল্য।
রস টেলর এই বিশ্বকাপে কিউয়িদের রান সংগ্রহকারিদের তালিকায় দ্বিতীয়। ২৬১ রান করলেও কোনও শতরান নেই। এই বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত অসাধারণ কিছু না ঘটালেও কিউয়ি বাহিনীর মিস্টার ডিপেন্ডেবল তিনিই। নজর রাখতে হবে তাঁর দিকেও। কারণ একবার ক্রিজে টিকে গেলে তাঁকে ফেরানো বেশ কঠিন।
এ বারের বিশ্বকাপে বড় রান পাননি সে ভাবে। ভাল পুল করতে পারা টেলরকে কিন্তু পুলের ফাঁদেই ফেলতে পারেন বুমরারা। ম্যানচেস্টারের বড় মাঠে টেলরের মিস টাইমড শটের অপেক্ষায় থাকবে ভারত।
আইপিএলে বেশ কার্যকরী ভূমিকা নেন কিউয়ি অলরাউন্ডার কলিন গ্র্যান্ডহোম। বিশ্বকাপেও নীচের দিকে ব্যাট করতে নেমে বেশ সফল। বল হাতে রয়েছে ৫টি উইকেট। যে কোনও সময় ভয়ঙ্কর হতে পারেন তিনি।
গ্র্যান্ডহোমকে পাল্টা মারের লক্ষ্যেই থাকবেন বিরাটরা। কারণ বোল্ট, ফার্গুসনকে খেলতে অসুবিধা হলে এই মিডিয়াম পেসারকেই আক্রমণ করতে হবে রোহিতদের।
বিশ্বকাপের ৮ ম্যাচে সংগ্রহ ১৫ উইকেট। দ্রুত গতির ট্রেন্ট বোল্ট প্র্যাকটিস ম্যাচে বেশ অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন বিরাটদের। তাঁর বাঁ-হাতি সিম বিপদে ফেলেছে ভারতকে বেশ কয়েক বার। এ বারেও ভারতের ফাইনালে যাওয়ার আশায় জল ঢেলে দিতেই পারেন এই পেসার।
এ বারের বিশ্বকাপে দুরন্ত ফর্মে থাকা রোহিত সামলেছেন স্টার্ক, আমির, মালিঙ্গাদের মতো দুরন্ত পেসারদের। তাই আশা করাই যায় যে সেমিফাইনালেও তিনি প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন বোল্টের গোলাগুলির বিরুদ্ধে।
চোটের জন্য আগের ম্যাচে না খেলা লকি ফার্গুসন যে এই ম্যাচে ফিরবেন তা বলাই বাহুল্য। তাঁর নিয়মিত ঘণ্টায় ১৫০ কিমির ওপরে করা বল কিন্তু বিপদে ফেলতে পারে শর্ট পিচ বলের বিরুদ্ধে দুর্বল ভারতকে।
বিরাট বনাম ফার্গুসন লড়াই জমতেই পারে। বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যান যে সহজে হার মানবেন না তা বলাই যায়। অপেক্ষা আর কিছু ক্ষণের।