তৃপ্ত: সাবলীল ব্যাটিং করে দলকে জয় এনে দিয়ে মাঠ ছাড়ছেন ডুপ্লেসি এবং আমলা। শুক্রবার শ্রীলঙ্কা ম্যাচে। এএফপি
ইংল্যান্ডকে হারিয়ে শেষ চারে যাওয়ার যে আশা তৈরি করেছিল শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তা ধাক্কা খেল। শুক্রবার ডারহামে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৯ উইকেটে জেতে দক্ষিণ আফ্রিকা। ১০৫ বলে অপরাজিত ৮০ রান করেন ওপেনার হাসিম আমলা। অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি করেন অপরাজিত ৯৬ রান ১০৩ বলে। শ্রীলঙ্কা হারায় সাত ম্যাচে এখন তাদের পয়েন্ট ছয়। অঙ্কের বিচারে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে না গেলেও লাসিথ মালিঙ্গাদের সেমিফাইনালে ওঠার রাস্তা বেশ কঠিন হয়ে গেল।
শুক্রবার ডারহামে টস জিতে ফিল্ডিং নেন ডুপ্লেসি। ম্যাচের প্রথম বলেই শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক করুণারত্নেকে ফিরিয়ে দেন কাগিসো রাবাডা। সেখানেই শেষ হয়ে যায় বড় রান তোলার আশা।
উইকেট দেখে আন্দাজ করা যায়নি এখানে পেসারেরা সুবিধা পাবেন। কিন্তু কাগিসো রাবাডার প্রথম বলেই ইঙ্গিত ছিল শ্রীলঙ্কার কাজটা সোজা হবে না। করুণারত্নের শরীর লক্ষ্য করে বল করেন রাবাডা। কিন্তু ব্যাটসম্যান যতটা আন্দাজ করেছিলেন, বল ততটা বাউন্স করেনি। শ্রীলঙ্কা অধিনায়কের গ্লাভসে লেগে বল চলে যায় দ্বিতীয় স্লিপে।
তৃতীয় উইকেটের জুটি সাবলীল ব্যাটিং করছিল। ৬৭ রান যোগ করেন আবিষ্কা ফের্নান্দো ও কুশল পেরেরা। কিন্তু দু’জনেই উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসেন। ২৯ বলে ৩০ রান করে ডোয়েন প্রিটোরিয়াসকে মিড অফের উপর দিয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন ফের্নান্দো। কুশল ফিরে যান প্রিটোরিয়াসের ইনসুইং বুঝতে না পেরে। বাঁ-হাতি ওপেনার এ দিন ৩০ রান করেন। তিনটি করে উইকেট নেন ক্রিস মরিস ও প্রিটোরিয়াস। দুই উইকেট রাবাডার।
তবে মিডল অর্ডার এখনও নড়বড়ে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৮৫ রান করা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথেউজ এ দিন ১১ রান করে ক্রিস মরিসের ইংসুইংয়ে পরাস্ত হন। ৫১ বলে ২৩ রান করে কভার অঞ্চলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান কুশল মেন্ডিস। ধনঞ্জয় ডি’সিলভা করেন ২৪ রান। প্রত্যেকেই উইকেটে থিতু হয়ে ফিরে গেলেন প্যাভিলিয়নে। মাঝের ওভারে দ্রুত উইকেট হারানোর ফলে ৪৯.৩ ওভারে ২০৩ রানে শেষ হয়ে যায় শ্রীলঙ্কা।
দেশের ব্যাটিং দেখে হতাশ প্রাক্তন অধিনায়ক কুমার সঙ্গকারা। তিনি বলেন, ‘‘সত্যি খারাপ লাগছে। একেবারে ছন্নছাড়া দেখাচ্ছে। ফের্নান্দোকে দেখে মনেই হয়নি ও আউট হতে পারে। কিন্তু হঠাৎ আকাশে বল তুলে দিল। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেও এ ভাবেই উইকেট ছুড়ে দিয়ে এসেছে। এই ম্যাচ শেষ চারের রাস্তায় এক ধাপ এগিয়ে দিতে পারত। কিন্তু আমরা যে ভাবে ব্যাট করেছি, তাতে সেমিফাইনালে যাওয়া উচিত না।’’
শ্রীলঙ্কার ২০৩ রানের জবাবে দুরন্ত শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। এত দিন রান পাচ্ছিলেন না আমলা। উইকেটে থিতু হয়ে আউট হয়ে যাচ্ছিলেন ডুপ্লেসি। এ দিন দু’জনেই হাফসেঞ্চুরি করেন। অপরাজিত ১৭৫ রানের জুটি গড়ে দ্বিতীয় জয় এনে দেন দেশকে।
ম্যাচের সেরা যদিও প্রিটোরিয়াসকে বেছে নেওয়া হয়। এই পেসার বলেছেন, ‘‘জিততে পেরে ভাল লাগছে। এত দিন ভাল খেলেও জিততে পারিনি। এ দিন চেয়েছিলাম, যা-ই হোক ম্যাচ যেন এই পরিস্থিতি থেকে না হারি। ভাগ্যিস মন খারাপ করে হোটেলে ফিরতে হচ্ছে না।’’
স্কোরকার্ড
শ্রীলঙ্কা ২০৩ (৪৯.৩)
দক্ষিণ আফ্রিকা ২০৬-১ (৩৭.২)
শ্রীলঙ্কা
দিমুথ ক ডুপ্লেসি বো রাবাডা ০•১
কুশল বো প্রিটোরিয়াস ৩০•৩৪
ফার্নান্দো ক ডুপ্লেসি বো প্রিটোরিয়াস ৩০•২৯
মেন্ডিস ক মরিস বো প্রিটোরিয়াস ২৩•৫১
অ্যাঞ্জেলো বো মরিস ১১•২৯
ধনঞ্জয় বো ডুমিনি ২৪•৪১
জীবন ক প্রিটোরিয়াস বো মরিস ১৮•৪৬
থিসারা ক রাবাডা বো ফেহলুকওয়েও ২১•২৫
উড়ান ক ও বো রাবাডা ১৭•৩২
লাকমল ন. আ. ৫•৭
মালিঙ্গা ক ডুপ্লেসি বো মরিস ৪•২
অতিরিক্ত ২০
মোট ২০৩(৪৯.৩)
পতন: ১-০ (দিমুথ, ০.১), ২-৬৭ (ফার্নান্দো, ৯.৫), ৩-৭২ (কুশল, ১১.৩), ৪-১০০ (অ্যাঞ্জেলো, ২১.৫), ৫-১১১ (কুশল, ২৭.১), ৬-১৩৫ (ধনঞ্জয়, ৩৬.১), ৭-১৬৩ (জীবন, ৩৯.৫), ৮-১৮৪ (থিসারা, ৪৫.৩), ৯-১৯৭ (উড়ান, ৪৮.৩) ১০-২০৩ (মালিঙ্গা, ৪৯.৩)।
বোলিং: কাগিসো রাবাডা ১০-২-৩৬-২, ক্রিস মরিস ৯.৩-০-৪৬-৩, ডোয়েন প্রিটোরিয়াস ১০-২-২৫-৩, আন্দাইল ফেহলুকওয়েও ৮-০-৩৮-১, ইমরান তাহির ১০-০-৩৬-০, জঁ পল ডুমিনি ২-০-১৫-১।
দক্ষিণ আফ্রিকা
ডি কক বো মালিঙ্গা ১৫•১৬
আমলা ন. আ. ৮০•১০৫
ডুপ্লেসি ন. আ. ৯৬•১০৩
অতিরিক্ত ১৫ মোট ২০৬-১ (৩৭.২)
পতন: ১-৩১ (ডি কক, ৪.৫)।
বোলিং: লাসিথ মালিঙ্গা ১০-১-৪৭-১, ধনঞ্জয় ডি সিলভা ৪-০-১৮-০, সুরঙ্গ লাকমল ৬-০-৪৭-০, থিসারা পেরেরা ৫.২-১-২৮-০, জীবন মেন্ডিস ৭-০-৩৬-০, ইসুরু উড়ান ৫-০-২৯-০।