অনুশীলনে গোলরক্ষক অমরিন্দরের সঙ্গে সহকারী কোচ ট্রেভর। ছবি এআইএফএফ।
ইংল্যান্ডের হয়ে ২০০২ বিশ্বকাপে খেলেছেন তিনি। ডেভিড বেকহ্যাম, মাইকেল আওয়েনদের সতীর্থ ছিলেন। সেই ট্রেভর সিনক্লেয়ার্স এখন ভারতীয় দলের প্রধান কোচ ইগর স্তিমাচের সহকারী। এএফসি এশিয়ান কাপের জন্য রবিবার থেকেই দোহায় প্রস্তুতি শুরু করেছেন সুনীল ছেত্রীরা। প্রথম দিনই ফুটবলদের মন জয় করে নিয়েছেন ট্রেভর। ইংল্যান্ডের হয়ে বিশ্বকাপ খেলা তারকাকে মুগ্ধ করেছেন ভারত অধিনায়ক। তিনি বলেছেন, ‘‘বিশ্বফুটবলে বড় ছাপ রাখতে সফল হয়েছে সুনীল ছেত্রী। মাঠের ভিতরে শুধু নয়, বাইরেও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’’
ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেডে ইগরের সঙ্গেই খেলতেন ট্রেভর। ম্যাঞ্চেস্টার সিটিতেও খেলেছেন তিনি। প্রাক্তন সতীর্থকে ইগর ভারতীয় দলে সহকারী হিসেবে নিয়ে এসেছেন। সেট-পিস উন্নতির পাশাপাশি ট্রেভর প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, কী ভাবে বিপক্ষের ফুটবলারদের কড়া নজরে রাখতে হবে। পেনাল্টি বক্সের মধ্যে থেকে অকারণে গোল খাওয়া কী ভাবে আটকাতে হয়, তা-ও শেখাচ্ছেন তিনি। উচ্ছ্বসিত ইগর চব্বিশ ঘণ্টা আগেই ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে বলেছিলেন, ‘‘আমাদের প্রথম লক্ষ্য থাকবে সেট-পিস থেকে গোল খাওয়া বন্ধ করা। তার পরে চেষ্টা করতে হবে সেট-পিস থেকে গোল করা। ফুটবলার হিসেবে ট্রেভরের অভিজ্ঞতা প্রচুর। অ্যাকাডেমির সঙ্গেও জড়িত। প্রচুর ফুটবলার তৈরি করেছে।’’ যোগ করেছিলেন, ‘‘ও জানে এই ধরনের পরিস্থিতিতে কী করতে হয়। কারণ, আমাদের হাতে সময় খুব কম। ওর মতো এক জনকেই দরকার ছিল আমাদের দলে।’’
ভারতীয় দলে যোগ দিয়ে ৫০ বছর বয়সি ট্রেভরও উচ্ছ্বসিত। দোহা থেকে তিনি বলেছেন, ‘‘দীর্ঘ বিমানযাত্রার ক্লান্তি সত্ত্বেও জিম এবং মাঠে অনুশীলন হয়েছে। ফুটবলাররা প্রত্যেকেই প্রচণ্ড পরিশ্রমী, বিনয়ী এবং চনমনে। ওদের দেখে আমি খুবই খুশি।’’ যোগ করেছেন, ‘‘প্রধান কোচ ইগর-সহ দলের প্রত্যেকের সঙ্গেই ফুটবলারদের সম্পর্ক খুবই ভাল। ওরা দেশের জন্য নিজেদের উজাড় করে দিতে তৈরি।’’
উইং দিয়ে বল নিয়ে উঠতেন ট্রেভর। বিপক্ষের ডিফেন্ডারদের কাছে আতঙ্ক ছিল তাঁর গতি। সেট-পিসেও ভয়ঙ্কর ছিলেন ট্রেভর। ২০০২ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলা তারকা বলেছেন, ‘‘আমি ফরোয়ার্ড ছিলাম। খেলা তৈরিও করতাম। তাই খুব ভাল করেই জানি বিপক্ষের রক্ষণ ভেঙে কী ভাবে ঢুকতে হয়। কোচিংয়ের বইয়ে কিন্তু সব পদ্ধতি লেখা থাকে না। ফুটবলারদেরই পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে হয়। ’’
আধুনিক ফুটবলে সেট-পিসের গুরুত্ব কতটা, তাও ব্যাখ্যা করেছেন ট্রেভর। বলেছেন, ‘‘যে কোন ম্যাচেই সেট-পিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কর্নার বা ফ্রি-কিকের পাশাপাশি থ্রো-ইনের ভূমিকাও প্রচুর।’’ কেন? ইগরের নতুন সহকারীর কথায়, ‘‘থ্রো-ইন থেকেও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। বলকে বিপজ্জনক জায়গায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এই ধরনের অনেক ছোটখাটো ব্যাপারের উপরে আমাদের কাজ করতে হবে।’’
ভারতীয় ফুটবলারদের সঙ্গে এর আগে কখনও কাজ করেননি। তবে তাঁর প্রাক্তন সতীর্থ লিভারপুল কিংবদন্তি রবি ফাওলারের কাছ থেকে ভারতীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে অনেক কিছু জেনেছেন। আইএসএলে ইস্টবেঙ্গলের অভিষেকের মরসুমে কোচ ছিলেন ফাওলারই। ট্রেভরের কথায়, ‘‘আমার প্রাক্তন সতীর্থ রবি ভারতে কোচিং করিয়েছে। ম্যাচ সম্প্রচারকারী সংস্থার সঙ্গেও যুক্ত ছিল। ওর কাছ থেকেই শুনেছি, গত দশ বছরে কী ভাবে ভারতীয় ফুটবল উন্নতি করেছে।’’