কোচবিহারে সুইমিং পুল চাই দেবাংশিদের

জেলা শহরে এত দিনেও একটি সুইমিং পুল তৈরি হয়নি। নিজের স্কুল সুনীতি অ্যাকাডেমিতে এক দশক আগে সুইমিং পুলের শিলান্যাস হয়েছিল। কিন্তু ওই পর্যন্তই।কোচবিহারের ওই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া দেবাংশি মৈত্র সাঁতারে জেলায় ক্রমশ নজরকাড়া পারফরম্যান্স করছে। সম্প্রতি তুফানগঞ্জে আয়োজিত আন্তঃস্কুল সাঁতারে কোচবিহার জেলায় চ্যাম্পিয়ান হয়েছে।

Advertisement

অরিন্দম সাহা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:৪৪
Share:

জলকন্যা দেবাংশি। নিজস্ব চিত্র।

জেলা শহরে এত দিনেও একটি সুইমিং পুল তৈরি হয়নি। নিজের স্কুল সুনীতি অ্যাকাডেমিতে এক দশক আগে সুইমিং পুলের শিলান্যাস হয়েছিল। কিন্তু ওই পর্যন্তই।

Advertisement

কোচবিহারের ওই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া দেবাংশি মৈত্র সাঁতারে জেলায় ক্রমশ নজরকাড়া পারফরম্যান্স করছে। সম্প্রতি তুফানগঞ্জে আয়োজিত আন্তঃস্কুল সাঁতারে কোচবিহার জেলায় চ্যাম্পিয়ান হয়েছে। এ বার দেবাংশির লক্ষ্য গঙ্গায় ১৯ কিমি পেরোনোর প্রতিযোগিতায় যোগ দান। এ জন্য অনুশীলনও শুরু করেছে সে। মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে চলতি সেপ্টেম্বরে ওই প্রতিযোগিতা হবে। এই পরিস্থিতিতে কোচবিহার শহরে সুইমিং পুলের দাবি ফের জোরাল হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, সুইমিং পুল না থাকায় শহরের আগ্রহীদের সাগরদিঘিতে ঝুঁকি নিয়ে সাঁতার শিখতে হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “রাজবাড়ি ময়দান লাগোয়া চত্বরে সুইমিং পুল তৈরির প্রচেষ্টা চলছে।”

সুইমিং অ্যাসোসিয়েশন ও স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার নিউটাউন এলাকায় দেবাংশির বাড়ি। তিন বছর বয়স থেকে সে সাঁতার শিখছে। ইতিমধ্যে জেলা ও জেলার বাইরে আয়োজিত নানা প্রতিযোগিতায় সে পুরস্কার জিতেছে। এ বার তুফানগঞ্জে আয়োজিত আন্তঃস্কুল সাঁতারে একক ভাবে তিনটি বিভাগে প্রথম ও রিলে সাঁতারে প্রথম পুরস্কারও গিয়েছে দেবাংশির ঝুলিতে। যার জেরে সব থেকে বেশি পয়েন্ট পেয়ে জেলা চ্যাম্পিয়ানের পুরস্কার পেয়েছে সে। যার জেরে রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতায় যোগদানের ছাড়পত্র পেয়েছে। তার মধ্যেই মুর্শিদাবাদ সুইমিং অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত গঙ্গায় ১৯ কিমি দীর্ঘ সাঁতার প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। সকাল-বিকেল মিলে দৈনিক গড়ে ৫ ঘন্টা সাগরদিঘিতে অনুশীলন করছে দেবাংশি।

Advertisement

দেবাংশি জানিয়েছে, ২০১৪ সালে দক্ষিণবঙ্গে ভাগীরথীতে আয়োজিত ১০ কিমি সাঁতার প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছিলাম। সেই অভিজ্ঞতা আর অনুশীলনে ভরসা রেখেই এ বার গঙ্গার ১৯ কিমি নদীপথ সাঁতরে পার করতে চাইছি। কোচবিহার জেলা সুইমিং অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা তথা দেবাংশির অন্যতম প্রশিক্ষক কৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, “বহরমপুরের ওই প্রতিযোগিতা আন্তর্জাতিক মানের। এ বার বাংলাদেশের প্রতিযোগীরাও আসছে। কোচবিহার জেলা থেকে ১৯৯৭ সালের পর এবারই প্রথম মেয়েদের বিভাগের জন্য আমরা দেবাংশির নাম পাঠিয়েছি। দুই ঘন্টার মধ্যে ওই দূরত্ব পেরোনর লক্ষ্যমাত্রা মাথায় রেখে সে প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরা খুবই আশাবাদী।”

আশায় বুক বাঁধছেন অন্যরাও। সুনীতি অ্যাকাডেমির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মণিদীপা নন্দী (বিশ্বাস) বলেন, “দেবাংশি আরও অনেক এগিয়ে যাক। ২০০৬ সালে স্কুলের দিঘিতে সুইমিং পুলের শিলান্যাস হয়েছিল। তা হলে আগ্রহ বাড়ত।” কোচবিহার জেলা বিদ্যালয় ক্রীড়া সংস্থার কর্তা পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “দেবাংশির পারফরম্যান্স সত্যিই প্রশংসনীয়।” দেবাংশির বাবা নিলয়বাবু বলেন, “তুফানগঞ্জে সুইমিং পুলে অনেকবার নিয়ে গিয়েছি। কোচবিহারে হলে ভাল হয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement