শনিবার থেকে বিশাখাপত্তনমে রঞ্জি ট্রফির গ্রুপ লিগে শেষ পর্বের অভিযান শুরু করতে চলেছে বাংলা। নিজেদের পারফরম্যান্স নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ ছাড়াও মনোজ তিওয়ারিদের শিবিরে এখন চলছে অঙ্কের হিসাবও। শেষ তিন ম্যাচে কত পয়েন্ট পেলে তারা নক আউট পর্বে যেতে পারবে, তার হিসাব। এই অঙ্কে দেখা যাচ্ছে বাংলাকে শেষ তিনটি ম্যাচ থেকে অন্তত ১২ পয়েন্ট পেতেই হবে। তা হলে তাদের নক আউটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে, মনে করছেন দলের মেন্টর অরুণ লাল। এই হিসাব ধরেই শুরু হয়েছে বাংলার প্রস্তুতি।
বিশাখাপত্তনমে অন্ধ্র প্রদেশের বিরুদ্ধে খেলার পরে বাংলা ঘরের মাঠে শেষ দুই ম্যাচ খেলবে দিল্লি ও পঞ্জাবের বিরুদ্ধে। এই তিন দলেরই এ বারের রঞ্জি ট্রফিতে খুবই শোচনীয় অবস্থা। বাংলার পরবর্তী বিপক্ষ অন্ধ্র প্রদেশ এখন পর্যন্ত একটি ম্যাচও জিততে পারেনি। দিল্লিরও একই অবস্থা। পঞ্জাব দিল্লির বিরুদ্ধে যে দশ উইকেটে জয় পেয়েছিল, সেটাই তাদের একমাত্র জয়। বাংলাই এদের চেয়ে ভাল অবস্থায় আছে পাঁচ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট পেয়ে। ‘এ’ ও ‘বি’ গ্রুপের ১৮টি দলের মধ্যে তারা আপাতত সাত নম্বরে। প্রথম পাঁচে থাকতে পারলে তবেই ওঠা যাবে নক আউট পর্বে। যা অসম্ভব নয় বলে মনে করেন মেন্টর অরুণ লাল। বৃহস্পতিবার বিশাখাপত্তনম থেকে তিনি ফোনে বলেন, ‘‘শেষ তিন ম্যাচে আমরা দু’টো সরাসরি জয় পেলেও কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে পারব। মোট কথা আমাদের শেষ তিন ম্যাচে ১২ পয়েন্ট পেতেই হবে। তবে আমরা সব ম্যাচেই সরাসরি জয়ের কথা ভেবেই মাঠে নামব।’’
শেষ তিন ম্যাচের বিপক্ষরা এ বারের রঞ্জি ট্রফিতে ভাল খেলতে না পারলেও তাদের কম গুরুত্ব দিলে সেটা সবচেয়ে বড় ভুল হবে বলে মনে করেন অরুণ। বলেন, ‘‘ক্রিকেটে কখন কী হয়, কেউ বলতে পারে না। তাই ম্যাচ জিততে গেলে বিপক্ষকে কম গুরুত্ব দেওয়ার প্রশ্নই নেই। দিল্লি বলুন বা পঞ্জাব। দুই দলেই ভাল ক্রিকেটার আছে। তারা ভাল খেলে দিলে তাদের দলও ভাল খেলবে।’’
তবে বিপক্ষের চেয়ে এখন বাংলা শিবিরের বেশি চিন্তা নিজেদের ব্যাটিং নিয়ে। টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা মোটেই ভাল রান পাচ্ছেন না, এটাই সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার কারণ বঙ্গ শিবিরে। দলের ব্যাটসম্যানদের নিয়েই তাই পড়ে রয়েছেন অরুণ ও অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি। মেন্টর বলেন, ‘‘এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ সময় আমাদের। এই সময়ে ব্যাটিংয়ে উন্নতি না করলে পরবর্তী পর্যায়ে যাওয়ার প্রশ্নই নেই। ব্যাটসম্যানদের প্রত্যেককে আলাদা করে বোঝানোর চেষ্টা করছি। মনোজও চেষ্টা করছে। ওদের নিজেদেরও বুঝতে হবে পারফরম্যান্স ভাল করতে গেলে ওদের কী করতে হবে। ওরা অবশ্য সেই চেষ্টা করছে। আশা করছি, ব্যাটিংয়ে উন্নতি করবে ওরা। স্কোরবোর্ডে বড় রান করাটা খুব জরুরি। সেটাই পারছি না আমরা।’’
সম্প্রতি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বিশাখাপত্তনমের মাঠে ক্ষতি হয়েছে। টানা বৃষ্টির জন্য উইকেটে জলও দেওয়া হয়নি বলে কিছুটা শুকনোও হয়ে গিয়েছে ওখানকার বাইশ গজ। শনিবার উইকেটে জল দেওয়া হতে পারে বলেও বাংলা শিবিরে খবর আছে। তাই উইকেট বেশি শুকনো নাও হতে পারে। অরুণ অবশ্য বলছেন, ‘‘উইকেটে ভিজে ভাব থাকলে আমাদের পেসাররাই বরং সুবিধে পেতে পারে। কাল উইকেট দেখলে বুঝতে পারব, কেমন দল দরকার।’’