মহড়া: ইংল্যান্ডের অনুশীলনে রুট এবং স্টোকস। গেটি ইমেজেস।
প্রথম টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের পরে দ্বিতীয় টেস্টে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে চলেছে ইংল্যান্ড। বৃহস্পতিবার থেকে অ্যাডিলেডে জো রুটের দল দিনরাতের টেস্ট খেলতে নামছে এমন একটা দলের বিরুদ্ধে, যারা এখনও পর্যন্ত গোলাপি বলের টেস্টে হারেনি।
তবু ইংল্যান্ড অধিনায়ক রুট মনে করছেন, অ্যাডিলেডে তাঁদের প্রত্যাঘাত করার ভাল সুযোগ থাকছে। কেন এ রকম মনে করছেন তিনি? সাংবাদিকদের রুট বলেছেন, ‘‘কৃত্রিম আলোয় গোলাপি বল কিন্তু সুইং করে। সিমে পড়ে নড়াচড়া করে। আর আমরা সুইং আর সিম ভালই খেলতে পারি।’’ রুট মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘ইংল্যান্ডে বল ভাল নড়াচড়া করে। যে জন্য সুইং খেলতে আমরা অভ্যস্ত। আমাদের মানিয়ে নিতে হয় বাড়তি বাউন্সের সঙ্গে। যে বাউন্সটা ব্রিসবেনে ছিল।’’
অ্যাডিলেডের পিচে কতটা বাউন্স থাকবে জানা না গেলেও, মঙ্গলবার নেট প্র্যাক্টিসের সময় বেন স্টোকসের বাউন্সারে কিন্তু মাথায় আঘাত পেলেন রুট। হাঁটুর চোট সামলে নেটে বল করছিলেন স্টোকস। তাঁর বাউন্সার এসে রুটের হেলমেটে আঘাত করে। রুট অবশ্য সামলে নিয়ে ব্যাটিং অনুশীলন চালিয়ে যান। ইংল্যান্ড ক্রিকেটারদের মধ্যে সবার শেষে নেট ছাড়েন তিনিই।
রুট যদিও নেট প্র্যাক্টিসের সময় আঘাত পান, কিন্তু অ্যাশেজের একটা স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছেন তিনি। যখন গত বার লর্ডস টেস্টের সময় জফ্রা আর্চারের বাউন্সার আছড়ে পড়েছিল স্টিভ স্মিথের হেলমেটে। এর পরে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটার। যদিও পরে ফিরে এসে ব্যাট করেন তিনি। সেই ঘটনার কথা উল্লেখ করে আর্চার একটি সাক্ষাৎকারে এ দিন বলেছেন, ‘‘স্মিথ যখন আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিল, আমি মনে মনে বলে উঠি, হা ঈশ্বর। ভেবেছিলাম, খুব গুরুতর চোট পেয়েছে ও।’’
চোট লাগার সময় ৮০ রানে ছিলেন স্মিথ। পরে ফিরে এসে ৯২ রান করে যান। আর্চারের কথায়, ‘‘ইংল্যান্ডে আবহাওয়া ঠান্ডা থাকার কারণে যন্ত্রণাটা পরে বোঝা যায়। ক্রিকেট মাঠে মৃত্যু কেউ তো চায় না। এমনিতেই ছেলেদের ক্রিকেটে টেনে আনাটা কষ্টকর হয়ে গিয়েছে।’’
রুটের চিন্তায় অবশ্য বাউন্সার নয়, তাঁর দলের ক্রিকেটারদের ফর্ম। প্রথম টেস্টে ব্যর্থ ওপেনার রোরি বার্নস এবং স্পিনার জ্যাক লিচের পাশে দাঁড়িয়েছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। রুট বলেছেন, ‘‘রোরি মানসিক ভাবে খুবই শক্তিশালী। আমি নিশ্চিত, ও মাঠে নেমে জবাব দিতে চাইবে। বড় রান করতে চাইবে।’’ একই ভাবে বাঁ-হাতি স্পিনার লিচের পাশে দাঁড়িয়ে রুট বলেছেন, ‘‘ব্রিসবেনে হয়তো পায়নি, কিন্তু সিরিজ়ে এর পরে স্পিনাররা সাহায্য পাবে। অস্ট্রেলীয় ব্যাটাররা যদি লিচকে একই ভাবে মারতে চায়, তা হলে কিন্তু সমস্যায় পড়বে।’’
দিনরাতের টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নামার আগে একটা ব্যাপার স্বস্তিতে রাখবে রুটকে। সেটা হল, স্টোকসের সুস্থ হয়ে ওঠা। ব্রিসবেন টেস্টে হাঁটুর চোট ভুগিয়েছিল স্টোকসকে। কিন্তু ইংল্যান্ড অলরাউন্ডার জানিয়েছেন, তিনি পুরো সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
অস্ট্রেলিয়াও চিন্তায় আছে চোট-আঘাত নিয়ে। জশ হেজ়্লউড ইতিমধ্যেই ছিটকে গিয়েছেন। ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারের সুস্থতা নিয়েও প্রশ্ন আছে। তবে অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি ব্যাটার গ্রেগ চ্যাপেল মনে করেন, ওয়ার্নার না খেললেও প্যাট কামিন্সদের সমস্যা হবে না। তিনি বলেছেন, ‘‘উসমান খোয়াজা ওই জায়গাটা নিতে পারবে। উসমান যে কোনও জায়গায় ব্যাট করতে পারে।’’
হেজ়্লউডের জায়গাতেও বিকল্প ক্রিকেটারের নাম জানিয়েছেন চ্যাপেল। অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়কের মতে, ঝাই রিচার্ডসনকে খেলানো উচিত। চ্যাপেলের মন্তব্য, ‘‘ফ্লাডলাইটে কিন্তু রিচার্ডসন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। ওর গতি আছে, নিশানা নিখুঁত। হেজ়্লউডের মতো বাউন্স ও পাবে না ঠিকই, কিন্তু ও অন্য একটা কোণ থেকে বলটা করে।’’
মাঠে নামার আগে রুটের সামনে অবশ্য আরও একটা চ্যালেঞ্জ আছে। ঠিকঠাক প্রথম একাদশ বাছা। সবার নজর থাকবে একটা ব্যাপারে। সুস্থ হয়ে ওঠা জিমি অ্যান্ডারসন এবং স্টুয়ার্ট ব্রডের ভাগ্যে এই টেস্টে কী হয়।