শঙ্কা: বাংলা শিবিরে ত্রাস হতে পারেন স্পিনার মার্কন্ডে। ফাইল চিত্র
পঞ্জাবের বিরুদ্ধে বাংলার পরবর্তী রঞ্জি ম্যাচ ইডেনে ফেরানোর অনুরোধ রাখতে রাজি নয় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা সিএবি বুধবার এই অনুরোধ করলেও তা হয়তো নাকচ করে দিতে চলেছে বোর্ড। কারণ, বাংলাকে বাড়তি সুবিধা দিয়ে তাদের সুবিধার জন্য বারবার মাঠ বদলের অনুরোধ রাখতে চায় না বোর্ড। যার অর্থ সোমবার থেকে পঞ্জাবের বিরুদ্ধে বাংলাকে সল্টলেকের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘূর্ণি পিচে খেলতে হতে পারে। যেখানে পঞ্জাবের লেগস্পিনার মায়াঙ্ক মার্কন্ডেকে সামলাতে হবে মনোজ তিওয়ারিদের।
রঞ্জি লিগ পর্বে বাংলার শেষ দুই ম্যাচ ইডেনে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ব্যাটিংয়ের বেহাল দশার জন্য হায়দরাবাদ ও বিশাখাপত্তনমে পরপর দু’টি ম্যাচে মাত্র চার পয়েন্ট পাওয়ায় বাংলা শিবির সিএবি-র কাছে শেষ দুই ম্যাচ ইডেন থেকে সরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করে। দিল্লির বিরুদ্ধে ম্যাচ টিভিতে সরাসরি সম্প্রচার হওয়ায় তা ইডেন থেকে সরাতে রাজি হয়নি বোর্ড। কিন্তু শেষ ম্যাচটি সল্টলেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
দিল্লির বিরুদ্ধে জয় পাওয়ার পরে বাংলা শিবির ফের ইডেনেই পঞ্জাবের মোকাবিলা করার আর্জি জানায় সিএবি ও বোর্ডের কাছে। কিন্তু বোর্ড ফের মাঠ বদলে রাজি নয়। বোর্ড সূত্রের খবর, বারবার এ ভাবে সিএবি-র অনুরোধ রাখা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। সল্টলেকের মাঠে স্পিন সহায়ক উইকেট। যে পিচে বড় সমস্যা হতে পারেন পঞ্জাবের ২১ বছর বয়সি লেগ স্পিনার মায়াঙ্ক মার্কন্ডে। এ ছাড়া কল্যাণীতে খেলতে আসা পঞ্জাবের অনূর্ধ্ব ২৩ দল থেকে অফস্পিনার অকুল পাণ্ডবকেও এই ম্যাচে নেওয়া হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।
দু’দিন আগে মোহালির সবুজ উইকেটেও যে ভাবে দ্বিতীয় ইনিংসে চার উইকেট নিয়ে কেরলের বিরুদ্ধে পঞ্জাবকে দশ উইকেটে জয় এনে দিতে সাহায্য করেন মায়াঙ্ক, তার পরে ঘূর্ণি উইকেট পেয়ে তিনি কী করতে পারেন, তা আন্দাজ করাই যায়। গত আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে ১৪ ম্যাচে ১৫ উইকেট পাওয়ার পরে রঞ্জি ট্রফিতেও ভাল ফর্মে রয়েছেন মায়াঙ্ক। পাঁচ ম্যাচে ২৫ উইকেট পেয়েছেন। কেরলের বিরুদ্ধেও দুই ইনিংসে ৬টি উইকেট পান। বিশাখাপত্তনমে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। রঞ্জির মাঝখানে এশিয়ান ইমার্জিং ট্রফি খেলতে কলম্বোয় চলে গিয়েছিলেন মায়াঙ্ক। সেখানেও চারটি ওয়ান ডে ম্যাচে ১২টি উইকেট পান। এমন ফর্মে থাকা পঞ্জাবের লেগস্পিনারকে ঘূর্ণি উইকেট দেওয়া হবে?
বাংলার অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি বলছেন, ‘‘আমাদেরও তো ভাল স্পিনার আছে। সল্টলেকে ঘূর্ণি উইকেটে খেলা হলে আমরা তিন স্পিনারে খেলতে পারি। তা ছাড়া আমাদের দলে পার্ট টাইম স্পিনারও রয়েছে। আমার তো মনে হয় ঘূর্ণি উইকেটে আমরাই বেশি সুবিধা পাব। সাত পয়েন্ট তোলার লক্ষ্য নিয়ে নামব আমরা।’’
দলের স্পিনারদের ওপর অধিনায়কের আস্থা রয়েছে ঠিকই। তবে দলের দুই প্রধান স্পিনার প্রদীপ্ত প্রামাণিক (চার ম্যাচে ১৪ উইকেট) ও আমির গনির (৫ ম্যাচে ৯ উইকেট) তেমন ধারাবাহিকতা নেই। পার্ট টাইম স্পিনার অনুষ্টুপ মজুমদার (৫ উইকেট) ও ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায় (৬ উইকেট) অবশ্য সুযোগ পেয়ে ভাল বোলিং করেছেন।
ঘূর্ণি পিচে তিন স্পিনারে নামলে তরুণ লেগস্পিনার প্রয়াস রায়বর্মণকে খেলানোর ভাবনা-চিন্তা চলছে বাংলা শিবিরে। আইপিএলের নিলামে সম্প্রতি ১৭ বছর বয়সি এই তরুণ স্পিনারকে দেড় কোটি টাকা দিয়ে নিয়েছে বিরাট কোহালির দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। এ বার রঞ্জির গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে খেললে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পাবে সে।