ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
Sport News

শেষ ম্যাচে ওয়েঙ্গার: কান্না নয়, হাসি নিয়ে বাঁচতে চাই

সেই ১৯৯৬-এর শেষ দিকে জাপান থেকে নিয়ে আসা হল অচেনা এক ফরাসি অর্থনীতিবিদকে, যিনি আবার কিনা ফুটবল কোচও। করে দেওয়া হল ম্যানেজার।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৮ ০৫:০৮
Share:

বিদায়: আর্সেনাল ম্যানেজার হিসেবে শেষ ম্যাচে আর্সেন। ছবি: রয়টার্স

হাডার্সফিল্ড ০ • আর্সেনাল ১

Advertisement

এ যেন স্লাইড শো।

নতুন কত কিছু দেখেছে পৃথিবী। স্পাইস গার্লস, হ্যারি পটার, গুগল, ইউরো, আইপড, ইরাক যুদ্ধ, ফেসবুক, বারাক ওবামা, এমনকী বিতর্কিত ডোনাল্ড ট্রাম্পের উত্থানও।

Advertisement

কিন্তু কোথাও একটা, ছবি এক জায়গাতেই আটকেছিল।

সেই ১৯৯৬-এর শেষ দিকে জাপান থেকে নিয়ে আসা হল অচেনা এক ফরাসি অর্থনীতিবিদকে, যিনি আবার কিনা ফুটবল কোচও। করে দেওয়া হল ম্যানেজার। বাইশ বছর একটানা সেই আপাদমস্তক ভদ্রলোকই দায়িত্ব সামলালেন আর্সেনাল ফুটবল ক্লাবের। এবং ক্রমশ কিংবদন্তি হয়ে ওঠা সেই আর্সেন ওয়েঙ্গার এমনকী ভেঙে দিলেন ইপিএলের কোনও ক্লাবে সবথেকে বেশি দিন ম্যানেজারের চাকরি করা স্যর আলেক্স ফার্গুসনের রেকর্ডও।

রবিবার, ইয়র্কশায়ারে হাডার্সফিল্ড টাউনের বিরুদ্ধে যেন এক অধ্যায়ের যবনিকাপাত হল। একই ক্লাবে ১২৩৫ নম্বর ম্যাচে পিয়ের এমরিক আবুমেয়ংয়ের গোলে ১-০ জয় দিয়ে দিয়ে শেষ হল ওয়েঙ্গার-যুগের। এমন নয় যে, লন্ডনের ক্লাবে তাঁর জমানায় শুধুই সোনা ফলেছে। তিনটি ইপিএল খেতাব বা সাতবার এফ কাপ ধরাটা এমন কী সাফল্য! এ বারই তো ছ’নম্বরে শেষ করল গানার্সরা। কিন্তু তাঁকে ঘিরে যতই ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাক, যতই ‘ওয়েঙ্গার আউট’ লেখা পোস্টার ঝুলিয়ে বিমান ওড়ানো হোক এমিরেটসের আকাশে, ফুটবল বিশ্লেষক মাত্রই জানেন, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ওয়েঙ্গারই এনেছিলেন সম্পূর্ণ নতুন এক ঘরানা। টাকার থলি নিয়ে তারকার পিছনে দৌড়ননি। বার বার জোর দিয়েছেন ক্লাবের ‘ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট’-এ। তুলে এনেছেন উনিশ-আঠেরোর কমবয়সি একের পর এক ফুটবলার। তৈরি করেছেন হাতে গড়ে। বলেছেন, ‘‘আমরা অল্পতেই বড় অধৈর্য হয়ে যাচ্ছি। আজকাল কোনও ম্যানেজারই অপেক্ষার রাস্তায় হাঁটেন না। বুঝতে পারেন না এটা করতে গিয়ে ফুটবলের বড় ক্ষতি করে দিচ্ছেন ওঁরা।’’

বিদায়বেলায় তাঁর সব কথাই যেন শুনিয়েছে দৈববাণীর মতো। স্বীকার করেছেন আসের্নালহীন তাঁর নতুন জীবন বড় বেদনার হতে যাচ্ছে। যদিও জুড়েছেন, ‘‘এত দিন এই ক্লাবটাই ছিল আমার সব। অন্য কোনও কিছুই ভাবিনি। তাই আগামী দিনগুলোয় মন ভারী থাকবেই। পরীক্ষাও দিতে হবে আমায়। কাঁদলে চলবে না। হাসি নিয়ে বাঁচতে চাই। কাজও করতে চাই আরও অনেক।’’

কিন্তু কী কাজ?

ওয়েঙ্গারের কথা, ‘‘সেটাই তো বুঝতে পারছি না। মনে হচ্ছে একটা দেওয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। দেওয়ালের ও দিকে হয়তো অনেক কিছু অপেক্ষা করে আমার জন্য। কিন্তু সেটা যে ঠিক কী, তা নিজেও বুঝতে পারছি না।’’

কিংবদন্তি কোচ অবশ্য এটা বুঝলেন যে শেষের সে দিনও আবেগ তাঁকে ঘিরেই ডানা মেলল। এমনকী হার্ডাসফিল্ড সমর্থকরাও গানার্সদের লক্ষ্য করে গান ধরল। যে গানের সারমর্ম, ‘‘তোমাদের মতো আহাম্মকদের জন্যই চলে যেত হল আর্সেনকে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement