চলছে কোভিড রোগীর চিকিৎসা। -ফাইল ছবি।
আবার নিজের রূপ বদলিয়েছে সার্স-কোভ-২ ভাইরাস। ‘আলফা’, ‘বিটা’, ‘গামা’ ও ‘ডেল্টা’র পর এ বার এই ভাইরাসের নতুন রূপ (ভেরিয়্যান্ট)-এর নাম ‘ল্যাম্বডা’। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুতে প্রথম হদিশ মিলেছে সার্স-কোভ-২-এর এই নবতম রূপের। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র একটি সূত্র জানাচ্ছে, ভাইরাসের এই নবতম রূপটি নিজেকে এত দ্রুত বদলাচ্ছে যে, তা উত্তরোত্তর উদ্বেগ বৃদ্ধির কারণ হয়ে উঠছে। এক মানুষ থেকে অন্য মানুষে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে বলেই এই রূপটি দ্রুত নিজেকে বদলে নিচ্ছে। নবতম রূপটি ইতিমধ্যেই ২৯টি দেশে ছড়িয়েছে। তবে ভারতে এখনও এই রূপটির হদিশ মেলেনি।
বিজ্ঞানের পরিভাষায় নতুন এই রূপটির নাম ‘সি.৩৭’। হু-র সূত্রটি জানাচ্ছে, ডেল্টার মতো এখনও এটিকে ‘ভেরিয়্যান্ট অব কনসার্ন’-এর তালিকায় না রাখা হলেও এই নবতম রূপটিকেও ডেল্টার মতোই সংক্রামক হয়ে উঠতে দেখা গিয়েছে পেরু-সহ মূলত দক্ষিণ আমেরিকার কয়েকটি দেশে। হু আপাতত এই রূপটিকে ‘ভেরিয়্যান্ট অব ইন্টারেস্ট’-এর পর্যায়ে রেখেছে।
সম্প্রতি পেরুর ৮১ শতাংশ কোভিড রোগীদের দেহে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের এই নবতম রূপেরই সংক্রমণ ঘটতে দেখা গিয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকার আর একটি দেশ চিলের এক-তৃতীয়াংশ কোভিড রোগীরও সংক্রমণের কারণ করোনাভাইরাসের এই নবতম রূপটিই।
আরও পড়ুন
রাজ্যে নতুন আক্রান্ত এক ধাক্কায় ন’শোর নীচে, মৃত্যু ১৮, সক্রিয় রোগী ১৮ হাজারের কম
আরও পড়ুন
মহারাষ্ট্রে মহারাজনীতি, শিবসেনার চালে কি আপাতত ‘নিরাপদ’ উদ্ধব সরকার
ইংল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত সে দেশে ৬ জন কোভিড রোগীর ক্ষেত্রে ভাইরাসের এই রূপটিকেই সংক্রমণের মূল কারণ হয়ে উঠতে দেখা গিয়েছে।
হু-র সূত্রটি জানিয়েছে, সার্স-কোভ-২-এর এই নবতম রূপটি উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে মূলত একটি কারণে। তা হল, এই রূপটি খুব অল্প সময়ের মধ্যে তার বাইরের স্তরে থাকা শুঁড়ের মতো দেখতে স্পাইক প্রোটিনের অনেকগুলি মিউটেশন ঘটিয়েছে। স্পাইক প্রোটিনের আকারগুলি বদলে ফেলেছে। এই স্পাইক প্রোটিনই ভাইরাসটিকে মানব দেহকোষে ঢুকতে সাহায্য করে। তার আকারগুলি দ্রুত বদলে নিয়ে মানব দেহকোষে ঢোকার নিত্যনতুন কৌশল বার করে ফেলছে এই ল্যাম্বডা রূপটি।
চিনের উহান প্রদেশে ২০১৯-এ ভাইরাসের রূপের মধ্যে নিজের স্পাইক প্রোটিনগুলিকে বদলে ফেলার ব্যাপারে যে দক্ষতা দেখা গিয়েছিল, হু-র সূত্রটি জানাচ্ছে, নবতম রূপটি তার চেয়ে অনেক বেশি দক্ষ। রূপটি ইতিমধ্যেই তার স্পাইক প্রোটিনে ৭টি মিউটেশন ঘটিয়ে ফেলেছে। আরও ঘটাতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা উদ্বিগ্ন, কারণ তাঁরা দেখেছেন, নবতম রূপের স্পাইক প্রোটিনের এই একের পর এক মিউটেশন তাকে আরও বেশি সংক্রামক হয়ে উঠতে সাহায্য করছে। এই মিউটেশনে মানবদেহের অ্যান্টিবডিগুলিকে ধোঁকা দেওয়ার কাজটা সহজতর হচ্ছে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের ল্যাম্বডা রূপের।