লাভের অঙ্ক পড়তি হলেও আয় বেড়েছে। মঙ্গলবার এমন একটি রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনল আদানি শিল্প গোষ্ঠীর বন্দর ব্যবসার সংস্থা ‘আদানি পোর্ট’।
আদানি পোর্টের দাবি, চলতি অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিক (অক্টোবর, ২০২২-ডিসেম্বর, ২০২২)-এ সার্বিক লাভ (কনসলিডেটেড প্রফিট) ১৬ শতাংশ কমে হয়েছে ১,৩১৫ কোটি টাকা। যা আগের বছরের এই একই সময়ের থেকে বেশ খানিকটা কম।
গত অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থবর্ষের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরে এই লভ্যাঙ্ক ছিল ১,৫৬৭ কোটি টাকা। তবে লাভের অঙ্ক পড়তি হলেও তাদের আয় বেড়েছে বলে দাবি করেছে ‘আদানি পোর্ট’।
আদানি পোর্ট জানিয়েছে, এ বছর তাদের মোট আয় ১৭ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৪,৭৮৬ কোটি টাকা। আগের বছর এই ত্রৈমাসিকে সেই অঙ্ক ছিল ৪,০৭২ কোটি টাকা।
মঙ্গলবার এই আয় বৃদ্ধির ঘোষণার পরেই আদানি পোর্টের শেয়ার দর বেড়েছে।
ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে আদানি পোর্টের শেয়ারের দর ৫.২১ শতাংশ বেড়ে ৫৭৩.৮৫ টাকা হয়েছে।
হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে লাভ বাড়ানোর অভিযোগ ওঠার পর থেকেই আদানিদের সমস্ত ব্যবসার শেয়ারের দাম পড়তে শুরু করে। গত ২৪ জানুয়ারি প্রকাশিত হয়েছিল সেই রিপোর্ট।
তার ১৪ দিনের মাথায় মঙ্গলবারই আদানিদের বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারের দাম বেড়েছে। একই সঙ্গে দাম বেড়েছে আদানি পোর্টের শেয়ারেরও।
নতুন রিপোর্টে আদানি পোর্ট জানিয়েছে, তাদের সুদ (ইবিআইটিডিএ), কর পরিশোধ এবং সংস্থার সামগ্রিক ক্ষয়ের পরেও আয় বেড়েছে। গত বছরের তৃতীয় ত্রৈমাসিকের তুলনায় এ বছরে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৩,০১১ কোটি টাকা।
আদানি পোর্ট জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে গত বছরের তুলনায় অনেকটাই বেশি হবে সংস্থার ইবিআইটিডিএ আয়। গত বছর চারটি ত্রৈমাসিক মিলিয়ে যা ছিল ১২,২০০-১২,৬০০ কোটি টাকা। এ বছর তা বেড়ে হবে ১৯,২০০-১৯,৮০০ কোটি টাকা।
সোমবারই বাজারের সমস্ত বকেয়া অর্থ মিটিয়ে তিন সংস্থার কোটি কোটি শেয়ার ফিরিয়ে আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছিল আদানি গোষ্ঠী।
আদানিদের তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল, বাজারে বকেয়া থাকা প্রায় ৮ হাজার ২৭৩ কোটি ফিরিয়ে দেবে তারা।
এই ঘোষণার এক দিনের মধ্যে আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ারের দাম বেড়ে গিয়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ। পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থার শেয়ারেও লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে আদানিরা। তার মধ্যে ‘আদানি পোর্ট’ও রয়েছে।
তবে নিন্দকেরা বলছে, আদানিরা যে হিসাব দিয়েছে, তাতে গোলমাল রয়েছে।
তার কারণ, আদানিরা যে হিসাব দেখিয়ে আয় বৃদ্ধির কথা বলেছে, তা তৃতীয় ত্রৈমাসিকের। অর্থাৎ অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর। এর মধ্যে শেষ ১৪ দিনের হিসাব নেই। এই হিসাব দেখে হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টের প্রভাবে সংস্থার কী ক্ষতি হয়েছে তা বোঝা যায় না।