উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই। তাই, শিকেয় উঠেছে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের দিনরাত ২৪ ঘণ্টার ‘অন কল’ ডিউটি চিকিৎসা পরিষেবা। অভিযোগ, এর ফলে রোগীরা নূন্যতম স্বাস্থ্য পরিষেবাটুকুও পাচ্ছেন না।
ওই হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা একশো। আরও পঞ্চাশটি শয্যা বাড়ানো হবে বলা হয়েছিল। কিন্তু তা এখনও হয়নি। যদিও হাসপাতাল সূত্রের খবর, রোগীর চাপ উত্তরোত্তর বাড়ছে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, একটি শয্যায় দু’জন করে রোগীকে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাতেও চাপ সামলাতে পারা যাচ্ছে না। তাই অনেকের চিকিৎসা চলছে মেঝেয় কম্বল বিছিয়ে। রক্ত সংরক্ষণের জন্য হাসপাতালে একটি ইউনিট চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কর্মী এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অভাবে আজ পর্যন্ত তা চালু করা যায়নি। একই হাল আলট্রাসোনোগ্রাফি ইউনিটেরও। ব্ল্যাড ব্যঙ্ক না থাকায় অস্ত্রোপচারের সময় সমস্যায় পড়েন রোগীর বাড়ির লোকেরা। তা ছাড়া, হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে চিকিৎসক বা নার্স নেই বলেও অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। চর্তুথ শ্রেণির কর্মীরও অভাব রয়েছে।
গত ১ জুলাই রায়দিঘিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠকে ওই হাসপাতালের পরিকাঠামোর বিষয়টি তোলেন পশ্চিমের বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল। তিনি বলেন, “আমি মুখ্যমন্ত্রীকে বিষয়টি জানিয়েছি। উনি সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।”
ওই হাসপাতালের পরিকাঠামো ঢেলে সাজার দাবি গ্রামবাসীদের নতুন নয়। ঘটনা হচ্ছে, এই মহকুমা হাসপাতালটি বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের একমাত্র ভরসা। ক্যানিংয়ের মাতলা নদীর উপর সেতু এবং বাসন্তীর হোগল নদীর উপর সেতু পেরিয়েও সুন্দরবন এবং সংলগ্ন নানা জায়গার মানুষ এখানে আসেন। এমনকী, উত্তর ২৪ পরগনারও বহু মানুষ এই হাসপাতালে আসেন। স্থানীয় বাসিন্দা জিতেন ঘোষ, ফরিদা বিবি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতির কথা জায়গায় জায়গায় বলছেন। শিশুর মৃত্যুর হার কমানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন। কিন্তু ক্যানিং মহকুমার চিত্রটি একই রকম রয়েছে। ২৪ ঘণ্টা অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা না থাকার ফলে এখানে প্রসূতি মায়েদের নিয়ে এলে সমস্যায় পড়তে হয়।” এমনকী, রাতে অ্যানাসথেটিস্ট না থাকায় প্রসব যন্ত্রণায় কাতর মহিলাদের অন্য চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যেতে বলা হয় বলেও অভিযোগ। হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনাল সরকার বলেন, “হাসপাতালে কিছু কর্মীর সমস্যা রয়েছে। তা ছাড়া, পরিকাঠামোগত সমস্যার কারণে বেশ কিছু কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। বিষয়টি জেলা স্বাস্থ্য দফতরে জানিয়েছি।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসীম দাস মালাকার বলেন, “আমি জানি কিছু সমস্যা আছে। বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরে জানিয়েছি। খুব শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হবে।”