কেউ বিয়ে করেন ২৫ বছর বয়সে, কেউ আবার বয়স ৩০ পেরিয়ে গেলেও অপেক্ষা করেন মনের মতো সঙ্গীর জন্য। ছবি: সংগৃহীত।
কেউ বলেন, বিয়ের বয়স হয়ে গেল। এর পরে দেরি হয়ে যাবে। কেউ আবার বলেন, বিয়ের কোনও বয়স হয় না। আর এ সব নিয়েই চলতে থাকে তর্ক। কেউ বিয়ে করেন ২৫ বছর বয়সে, কেউ আবার বয়স ৩০ পেরিয়ে গেলেও অপেক্ষা করেন মনের মতো সঙ্গীর জন্য। কিন্তু অপেক্ষা করলেই যেন বিপদ। বয়স যত বাড়তে থাকে, সমাজের মাথাব্যথাও বাড়ে। মহিলাদের নিয়ে সমাজের মাথাব্যথাটা বোধ হয় একটু হলেও বেশি।
কে কখন বিয়ে করবে পুরো বিষয়টি তার ব্যক্তিগত। তবে ভারতে মতো বিষয় অন্তত এই বিষয়টি ব্যক্তিগত হয়েও যেন ব্যক্তিগত থাকে না। এ দেশে এখন একটি বড় সংখ্যক মানুষ ২৭-২৮ থেকে ৩১-৩২ বছর বয়সের মাঝে বিয়ে করছেন। পড়াশোনা শেষ করে নিজের পায়ে দাঁড়িয় তার পরেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তাঁরা। মেয়েদের ক্ষেত্রেও একই ছবি। সম্প্রতি এক নেটাগরিক বিয়ে করার বয়স নিয়ে নানা মন্তব্য করে সংবাদের শিরোনামে এসেছেন। সমাজমাধ্যমে তিনি প্রশ্ন করেন, ২০-র শুরু দিকে বিয়ে করলে কী খুব ক্ষতি হয়ে যায় জীবনে? তিনি বলেন, ‘‘২০-র কোঠাটি আমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই সময় আমরা জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলি নিয়ে থাকি। অনেক মহিলা কুড়ি বছরের গোড়ার দিকে বিয়ে করেন। সঠিক সময় সঙ্গী খুঁজে বার করে তাঁকে বিয়ে করে সংসার গোছানোর জন্য চাপ আসতে থাকে তাঁদের উপর। কেউ কেউ এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ঠিক প্রমাণিত হয়েছেন। কেউ কেউ আবার মনে করেন এত তাড়াতাড়ি বিয়ে করার সিদ্ধান্তটা বোধ হয় সঠিক ছিল না। আমার কী করা উচিত বলুন তো?’’
সমাজের চোখরাঙানিতে নয়, নিজের ভাল-মন্দ বুঝেই বিয়ের মতো বড় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ছবি: সংগৃহীত।
মহিলার এই পোস্টটি নিয়ে সমাজমাধ্যমে ব্যাপক চর্চা শুরু হয়েছে। মহিলার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে নানা লোকের নানা মত দিয়েছেন। এক জন লিখেছেন, ‘‘২৫ বছর বয়েসের আগে জীবনের বিষয়ে ঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আসে না। তাই ওই বয়েসের আগে বিয়ে না করাই ভাল।’’ আর এক জন লিখেছেন, ‘‘আমি ১৯ বছর বয়সে বিয়ে করেছি। ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে আমার আর স্বামীর চিন্তাধারায় আমূল পরিবর্তন আসে। এখন আমরা সংসার করতে গিয়ে হাড়ে হাড়ে তা টের পাচ্ছি। দু’জনের জীবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সেই ভুল সিদ্ধান্তের জন্য।’’ এক মহিলা লিখেছেন, ‘‘বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মহিলাদের প্রজনন ক্ষমতা কমে যায়। তার উপর কর্মব্যস্ত জীবনে বেড়ে চলা মানসিক চাপ, জীবনযাত্রায় অনিয়ম, শরীরে বিভিন্ন রোগের হানা— এমন নানা কারণে সন্তানধারণের ক্ষমতা আরও কমতে যায়। তাই খুব বেশি বয়সে বিয়ে না করাই ভাল।’’
সমাজের চোখরাঙানিতে নয়, নিজের ভাল-মন্দ বুঝেই বিয়ের মতো বড় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাড়াহুড়ো করে পারিপার্শ্বিক চাপে পড়ে নয়, নিজের বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে বিয়ে করার কথা ভাবুন। একটু দেরিতে বিয়ে করার সমস্যা যেমন রয়েছে, রয়েছে অনেক সুবিধাও। তাই মন থেকে সায় পেলে তবেই বিয়ের কথা বলছেন অনেকে।