বাহুমূলের কালচে দাগ তোলার ঘরোয়া টোটকা কতটা নিরাপদ?
গরমের দিনে হাতকাটা পোশাক শুধু আরামদায়ক নয়, ফ্যাশনেও যথেষ্ট চর্চিত। দেখতেও ভাল লাগে। শখের বশেই তেমন পোশাক কিনেছেন। কিন্তু পরতে গিয়ে অস্বস্তি। বাহুমূলে কালচে ছোপ। টলিডউ হোক বা বলিউড, নায়িকারা যখন খোলামেলা পোশাক পরেন, তাতে স্পষ্ট হয়ে ওঠে শরীরী বিভঙ্গ। তাঁদের বাহুমূল শুধু দাগছোপহীনই নয়, সুন্দর এবং মসৃণও। এমনটাই চান আপনিও। কিন্তু উপায় কী!
এমনিতে সমাজমাধ্যমে চোখ রাখলে ছোট থেকে বড়, সব সমস্যারই সমাধান মেলে। সেখানে বাহুমূলে কালচে দাগ তোলার মতো সাধারণ সমস্যার সমাধান হাতের কাছে থাকবে সে আর নতুন কি!
সমাজমাধ্যমে এক নেটপ্রভাবী বলছেন, মসৃণ, সুন্দর বাহুমূল পেতে হলে ভরসা রাখতে হবে হেঁশেলের উপকরণে। পাতিলেবু, হলুদ গুঁড়ো, বেকিং সোডা, অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার দিয়ে প্যাক বানিয়ে মাখলেই ধীরে ধীরে দূর হবে কালচে ছোপ।
কিন্তু বাস্তবে কি তা হয়? এমন দাবির সত্যতা কতটা? দিল্লির একটি হাসপাতালের ত্বকের রোগের চিকিৎসক ডিএম মহাজন বলছেন, ‘‘বাহুমূলে কালচে দাগছোপ নানা কারণে হতে পারে। কখনও ডিওডোর্যান্ট ব্যবহার, শেভিং, শারীরিক কোনও সমস্যা বা ত্বকের অসুখের জন্য এমনটা হতে পারে। হলুদগুঁড়ো, পাতিলেবুর নিজস্ব গুণ থাকলেও, তা কতটা ফলপ্রসূ হবে বা কার ত্বকে কী ভাবে প্রতিক্রিয়া করবে বলা কঠিন।’’
সমাজমাধ্যমপ্রভাবী কী বলছেন?
টক দই, হলুদ এবং পাতিলেবুর প্যাক: সমাজমাধ্যমে বলা হচ্ছে প্রাকৃতিক উপাদানই কালচে দাগছোপ তুলতে সাহায্য করবে। এ জন্য ৩ টেবিল চামচ টক দইয়ের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ হলুদ গুঁড়ো এবং আধখানা পাতিলেবুর রস মিশিয়ে নিতে হবে। মিশ্রণটি মাখতে হবে বাহুমূলে। ২০ মিনিট রেখে ভিজে তোয়ালে দিয়ে মুছে ফেলতে হবে।
বেকিং সোডা এবং জল: ১ টেবিল চামচ বেকিং সোডা জলে গুলে মিশ্রণটি দিয়ে বাহুমূলে হালকা স্ক্রাব করতে হবে। তার পর ধুয়ে নিতে হবে।
কতটা কার্যকর এই ঘরোয়া টোটকা? চিকিৎসকের কথায় হলুদে থাকে কারকিউমিন। কালচে ভাব দূর করতে কখনও কখনও তা কিছুটা সাহায্য করে। এতে রয়েছে প্রদাহনাশক উপাদান। তবে পাতিলেবুর রসে অ্যাসিড থাকে। ত্বকে দিলে জ্বালা হতে পারে। বিশেষত স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য এই মিশ্রণ সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বেকিং সোডায় অ্যালক্যালাইন রয়েছে। ত্বকে পিএইচের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে এটির ব্যবহারে।
তা হলে চিকিৎসার পদ্ধতি কী?
বাহুমূলের কালচে ছোপের কারণ খোঁজা দরকার। কারণ জানলে চিকিৎসাও সহজ। চিকিৎসক বলছেন, ‘‘সাধারণত নিয়াসাইনামাইড, গ্লাইকোলিক অ্যাসিড, অ্যাজেলেইক অ্যাসিড চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়। ক্ষেত্রবিশেষে ওষুধ এবং লেজ়ার থেরাপির প্রয়োজন হয়।’’
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। ঘরোয়া টোটকা ব্যবহারের আগে ‘প্যাচ টেস্ট’ জরুরি। সবচেয়ে ভাল হয়, যদি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া হয়।